Connect with us

দিনাজপুর

উত্তর জনপদের দেশি মাছ উৎপাদনের নিরাপদ আশুরার বিলে এখন বোরো ধান চাষ

Published

on

এম রুহুল আমিন প্রধান, নবাবগঞ্জ: উত্তর জনপদের দেশি মাছ উৎপাদনের নিরাপদ আশুরার বিল এখন বোরো ধান চাষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে কৃষক। শুকনো মৌসুমে ধান চাষ আর বর্ষাকালে মাছ চাষ। বিলটি দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় উজানের পানি গড়ে এসে গটা বিল ভরাট হয়েছে গেছে। সারাবছর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ধরে রাখতে না পারায় ভরাট হয়ে গেছে। এক সময়ের গভীর আশুরার এই বিল । নবাবগঞ্জ সদরের ১কি:মি: উত্তর পশ্চিমে শালবন। এই শালবনের উত্তর পাশ ঘেষেই বিশাল আশুরার বিলের অবস্থান। বিলের আয়তন ২৫১.৭৮ হেক্টর। এই বিলের উপত্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিচিত্র কাহিনী। কথিত আছে এই বিলের চারপাশ থেকে ৮০ টি দার বা নালা চর্তুদিকে ছড়িয়ে গেছে বলে এর নাম করণ হয়েছে আশুরার বিল। বিশাল এই বিলের গভীরতা ও কাদার তলানী এবং এর চারপাশ বেষ্টিত শালবন এক সময় নানা কিংবদন্তীর জন্ম দেয়। বিলের মাঝে কতিপয় স্থান- পাতিলদহ, বুড়িদহ, পীরদহ, মুনির আইল,কাজলাদহ, পালাদহ, মুনির থান ইত্যাদি নামে পরিচিত। এক সময় এ বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এ বিলের বোয়াল এবং পাবদা মাছ খুবই সুস্বাদু। এ ছাড়াও বিলে টেংরা, কই, মাগুর, পুটি চিংড়ি, আইড়মাছ, শোল, গজাড়, বাইম ইত্যাদি মাছ পাওয়া যায়।বর্ষা মৌসুম এলে এ বিলে লাল, সাদা শাপলা ফুল বিলের সৌন্দর্যকে আরো বাড়ীয়ে দেয়। বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমন পিপাষু মানুষ আশুড়ার বিলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়। বোরে মৌসুমে এ বিলে স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধান চাষ করে এবং প্রচুর ফলন পায়।আশুরার বিল মস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে।বিলটিতে মৎস্য অধিদপ্তর হতে প্রতি বছর সরকারী অর্থে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। এ সমিতি নিজ ব্যয়ে বিলটিতে ২০ একরের অভয়াশ্রম স্থাপন করেছে। অভয়াশ্রমটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ সংরক্ষন ও প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে অর্ধেকাংশে প্রতি দুই বছর পর পর রাক্ষুসে প্রজাতির মাছ ধরা হয়। ফলে বাকি অংশে মাছ বড় হওয়া ও প্রজনন করার সুযোগ পায়। বর্তমানে বিলটি ভরাট হওয়ায় মৎস্যজীবিরা বছরে ৪/৫ মাসের বেশী সময় মাছ ধরার সুযোগ পায় না।গত বছর কয়লা খুনি থেকে নিরগত পানি বেপরাওয়াভাবে বিলে আসায় ১হাজার বিঘা জমি রোপন করতে পারেনি কৃষকেরা। এ বছরে কয়লাখুনির পানি বেশি পরিমাণ না আসায় কৃষকেরা বিলের গোটা অংশে বোরো ধান রোপন করতে পেরেছে। নি¤œ আয়ের কৃষকেরা জানায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ ধান উৎপাদন করতে পারবে তারা। এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবু রেজা আসাদ্জ্জুামান জানান বোরো রোপন মৌসুমে উপজেলার কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ সহ মাঠে গিয়ে বোরো ধান ভালোভাবে উৎপাদন হয়। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মনিটরিং করছেন। বিলটি খননের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামিম জানান কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শিবলী সাদিক জানান বিলটি আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সংস্কার সহ খনন করা হলে উত্তর জনপদের দেশি মাছের চাহিদা মিটাবে এবং কর্ম সংস্থানের সুযোগ পাবে বেকার যুবকেরা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *