Connecting You with the Truth

কক্সবাজারে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ নিহত ১

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ‘কোমেন’ আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন উপকূলে আঘাত হেনেছে। দুপুর নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে ঘর্ণিঝড় কোমেন ক্রমশ দুর্বল হয়ে বিকাল নাগাদ চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে যাওয়ার কথা। দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজার-চট্টগ্রাম নৌ-বন্দরগুলোকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। উপকূলে ৫ থেকে ৬ ফুট জলোচ্ছাসের আশংকা করা হচ্ছে।

এদিকে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে প্রবল বৃষ্টি সহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। ভোর ৬টায় এটি সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করে যাওয়ার সময় ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রহমান জানিয়েছেন দ্বীপের ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় গাছ চাপা পড়ে মারা গেছেন মো: ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকার অলি আহমদের পুত্র। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২০ ব্যক্তি।

চেয়ারম্যান জানান- সকালে ঝড়ো হাওয়ায় দ্বীপের নিচু এলাকায় ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়। এই সময়ে ঘন্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হলে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।

টেকনাফের উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ জানান- ঝড়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিনি জানান- টেকনাফ উপজেলায় এক হাজারের বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এখানে প্রাণহানির কোন খবর পাওয়া না গেলেও বিভিন্ন স্থানে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানিয়েছেন- বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় কোমেন আজ দুপুর ২টা নাগাদ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে গেছে। এটি বিকাল নাগাদ চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তিনি জানান এটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টার ৬০ থেকে ৮০ কিলো মিটার। সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহৃত হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে। বুধবার রাত থেকে নি¤œাঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা জানান, জনগণকে নিরাপদ স্থানে সরে আসতে মাইকিং করা হয় বুধবার রাত থেকেই। প্রতিটি ইউনিয়নে গঠন করা হয়েছে উদ্ধারকারী দল। পাশাপাশি জেলার সকল আশ্রয়কেন্দ্র গতকাল রাত থেকেই খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রেডক্রিসেন্ট ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের মাধ্যমে লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। মজুদ করা হয়েছে শুকনো খাবার। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে আগতদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। সিভিল সার্জনের মাধ্যমে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক ।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ

Comments
Loading...