Connect with us

শিক্ষাঙ্গন

কোচিংবাণিজ্য রোধে বদলির সুপারিশ: তালিকায় ৫২২ শিক্ষক

Published

on

বছরের পর বছর একই প্রতিষ্ঠানে থেকে কোচিংবাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে রাজধানীর ২৪ সরকারী বিদ্যালয়ের ৫২২ শিক্ষককে বদলির সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির পরিচালক মীর মোঃ জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল এই তদন্ত শেষে বুধবার কমিশনে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই শিক্ষকরা ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ বছর পর্যন্ত এক বিদ্যালয়েই রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার পাশাপাশি কোচিংবাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে অর্থ উপার্জন করছেন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিবাণিজ্য, কোচিংবাণিজ্য ও নিয়োগবাণিজ্যের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ তদন্ত শুরু করে দুদক।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জনকণ্ঠকে বলেন, সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকদের এক কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি অতিবাহিত হলেই তাদের অন্যত্র বদলি করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর এসব শিক্ষক বদলি না হওয়ায় কমিটি এসব শিক্ষককে বদলির সুপারিশ করেছে। তবে এ বিষয়ে কমিশন এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষকদের বদলি না করার পেছনে রাজনৈতিক চাপ, তদ্বির ও অনৈতিক আর্থিক লেনদেন রয়েছে। কিছু শিক্ষক কোচিং বা প্রাইভেটবাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বছরের পর বছর ঢাকার একই বিদ্যালয়ে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের ৩২ জন, মোহাম্মদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৬ জন, ধানম-ি গবর্নমেন্ট বয়েজ হাইস্কুলের ১৭ জন, মতিঝিল সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৪ জন, শেরেবাংলা সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৭ জন, সরকারী বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত হাইস্কুলের ২৫ জন, খিলগাঁও সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩১ জন, তেজগাঁও সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২১ জন, গণভবন সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৪ জন, মিরপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯ জন, নবাবপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯ জন, নারিন্দা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩১ জন, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের ২৯ জন, আরমানিটোলা সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ২১ জন, ঢাকা গবর্নমেন্ট মুসলিম হাইস্কুলের ৯ জন, ইসলামিয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ জন, মতিঝিল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩২ জন, বাংলাবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২ জন, টিকাটুলী কামরুন্নেছা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩০ জন, তেজগাঁও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৮ জন, শেরেবাংলা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৪ জন, ধানম-ি কামরুন্নেছা সরকারী বিদ্যালয়ের ৭ জন, ধানম-ি সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ জন ও নিউ গবর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুলের ৭ জন।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এক কর্মস্থলে বছরের পর বছর থাকার ফলে ওই শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানোর নামে কোচিং সেন্টার গড়ে তুলেছেন এবং শিক্ষার্থীদের সেখানে পড়তে বাধ্য করা হয়। দশ বছরের বেশি কোন শিক্ষক এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে তাকে বিভাগের বাইরের বিদ্যালয়গুলোতে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে দুদকের প্রতিবেদনে। এছাড়া পাঁচ বছরের বেশি সময় কর্মরত শিক্ষকদের ঢাকা নগরীর বাইরে এবং তিন বছরের বেশি সময় এক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে অন্য বিদ্যালয়ে বদলির সুপারিশ করেছে দুদক। এছাড়া সাত জেলা শিক্ষা অফিসারকে জেলায় দায়িত্ব না দিয়ে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও বরিশালের সাত বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে। এসব জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বদলি নিশ্চিত করার সুপারিশ করে প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাদের শিক্ষক হিসেবে পদায়ন না করতে বলা হয়েছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *