Connect with us

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

জাকারবার্গ যেসব কথা বললেন শুনানিতে

Published

on

জাকারবার্গ যেসব কথা বললেন শুনানিতে

জাকারবার্গ যেসব কথা বললেন শুনানিতে

ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের কাছে বলেছেন, ফেসবুককে কাজে লাগানোর সুযোগের সন্ধানে থাকা রাশিয়ার প্রয়োগকর্তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে তাঁর প্রতিষ্ঠান।

জাকারবার্গ বলেছেন, এটা অস্ত্র প্রতিযোগিতা। তাঁরা ক্রমাগত উন্নতি করছে।

ফেসবুক থেকে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তথ্য হাতানোর কেলেঙ্কারির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের সামনে নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় জাকারবার্গকে।

২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচন ঘিরে ফেসবুকে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা ফেসবুক কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত কর্মকর্তারা ১৩ জন ব্যক্তি ও রাশিয়ার তিনটি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচনে হস্তক্ষেপকারী হিসেবে শনাক্ত করেন।

জাকারবার্গ বলেছেন, রাশিয়ার অনেক ব্যক্তি আছেন, যাঁদের কাজ হচ্ছে ফেসবুক ও অন্যান্য ইন্টারনেট সিস্টেমকে অনৈতিক কাজে লাগানো। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করা দরকার।

এদিকে সিনেটররা জাকারবার্গকে ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে চাপ দিলে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ তিনি চান, তা হতে হবে সঠিক নিয়মে। তবে নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ৮ কোটি ৭০ লাখ তথ্য ফেসবুক থেকে হাতিয়ে নিয়েছে—এমন তথ্য জানাজানি হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের কয়েকটি যৌথ কমিটির সামনে শুনানিতে হাজির হন জাকারবার্গ।

শুনানিতে জাকারবার্গ আরও বলেন:

* ফেসবুকের তৈরি টুলগুলো ক্ষতিকর কাজে ব্যবহৃত যাতে না হয়, তা ঠেকাতে তাঁরা খুব বেশি কিছু করেননি।

* পরীক্ষা না করে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা যে পুরোপুরি তথ্য মুছে ফেলেছে, সে কথা বিশ্বাস করা তাঁদের ভুল ছিল।

* ফেসবুক একক আধিপত্য চালাচ্ছে—এ ধরনের কিছু মনে করেন না জাকারবার্গ।

* সব সময় ফেসবুকের একটি বিনা মূল্যের সংস্করণ চালু রাখার কথা জানান জাকারবার্গ।

* ঘৃণ্য বক্তব্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করার ক্ষেত্রে ফেসবুকের ভুল করার হার নিয়ে তিনি খুব বেশি উদ্বিগ্ন নন।

* ফেসবুকে রাজনৈতিক পক্ষপাতের সম্ভাবনা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে তিনি উদ্বেগে আছেন।

* ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নতুন টুল তৈরি করছে।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি কী?

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগিতার জন্য বেশি পরিচিত। ট্রাম্পের বিজয়ে এর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে ওই প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, ফেসবুক থেকে সংগৃহীত কোনো তথ্য ট্রাম্পের প্রচারণার তারা ব্যবহার করেনি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়ার ঘটনাটি সামনে নিয়ে এসেছেন যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি। তিনিই প্রথম জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবং যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদ) প্রশ্নে গণভোটে ভূমিকা ছিল তাঁর সাবেক কর্মস্থলের। এ ব্যাপারে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে সহযোগিতা করেছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আলেকসান্দ্র কোগান। তিনি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করে ফেসবুকের প্ল্যাটফর্মে ছেড়েছিলেন। এর মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে দিয়েছিলেন কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কাছে।

ক্রিস্টোফার উইলির ভাষ্যমতে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ওই তথ্যগুলো প্রক্রিয়াজাত করে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচার শিবিরকে সরবরাহ করেছিল। শুধু তা-ই নয়, ওই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য রিপাবলিকান ভোটারও চিহ্নিত করা হয়।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, সম্ভবত ৫ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। তবে চলতি সপ্তাহে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, ৮ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হয়েছে।

শুনানিতে জাকারবার্গ বলেছেন, ‘আমি ফেসবুক শুরু করেছিলাম এবং এর সবকিছুর জন্য আমি দায়ী।’

৪৪ জন সিনেটরের সমন্বয়ে গঠিত মার্কিন কংগ্রেসে আইনপ্রণেতাদের বাণিজ্যবিষয়ক ও বাণিজ্য ও বিচারক কমিটির যৌথ শুনানিতে তাঁকে ট্রেডমার্ক পোশাক টি-শার্ট, জিনস ছেড়ে কোট পরে হাজির হতে দেখা যায়। মঙ্গলবারে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী ওই শুনানিতে কয়েকবার মাফ চাওয়ার পাশাপাশি প্রাইভেসি পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। ওই শুনানিতে জাকারবার্গের ব্যাখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করেন সিনেটররা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, আইনপ্রণেতাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছেন যে ফেসবুকের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হতে পারে। তথ্যসূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি, ওয়াশিংটন পোস্ট।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *