Connect with us

দেশজুড়ে

ধলেশ্বরী ও যমুনা নদীর ভাঙ্গন, মানিকগঞ্জে পাঁচ শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে

Published

on

Manikgonj Pic 1মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: গত কয়েকদিনের অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে ধলেশ্বরী, যমুনা মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার শ্রীধর নগর, কুস্তা, মাইলাঘী ও পাশ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা, চরকাটারী ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এদিকে প্রবল বর্ষণ ও যমুনা নদীর করাল গ্রাসে এক মাসে এই দুই নদীর ভাঙ্গনে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের বসত বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজার, কয়েক শত একর জমির তিল, কাউন, আমন ধানের আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীণ হয়ে গেছে । ভাঙনের হুমকীর মুখে রয়েছে ঘিওর উপজেলার মাইলাগি আশ্রয়ণ প্রকল্প ও ঘিওরের সাথে দৌলতপুর- নাগরপুর উপজেলার পুরাতন সংযোগ সড়কটি।
আজ সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে-বাচামারা ইউনিয়নের নদীর ভাঙ্গণের শিকার ঐ এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ ঘরবাড়ি, জিনিসপত্র নৌকা যোগে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে । ভাঙ্গণে ক্ষতিস্থ লোকজন ভিটে মাটি হারিয়ে নদীর চরে অন্যের জায়গার উপর বাড়া নিয়ে অস্থায়ীভাবে বাড়িঘর নির্মান করে ঠাই নিয়েছে । এছাড়া বাচামারা আমেনা খাতুন বালিকা উ”চ বিদ্যালয়ে ও মাঠে নদী ভাঙ্গণের শিকার ৮/১০ টি পরিবার গত এক মাস যাবৎ ছেলে-মেয়ে, গরু-ছাগল, বাড়ি মালামাল নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে । গত এক মাসে বর্ষার পানি বৃদ্ধি ফলে নদীর করাল গ্রাসে ও ভাঙ্গনে ফলে প্রায় ৫ শতাধিক বসত ভিটা বাড়ি ঘর,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,হাট বাজার সহ,আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

যমুনা নদীর ভাঙ্গনে বাচামরা ইউনিয়নের চুয়াডাঙ্গা,বাচামারা জেলেপাড়া, চরবারাঙ্গা, বাচামারা উওর খন্ড, সুবুদ্দিয়া গ্রামের ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ লোক জন যমুনা নদীর চরে নিজের ভিটে মাটি হারিয়ে অন্যের জমির উপর বাড়ি ঘর জিনিস পত্র নিয়ে খোলা আকাঁশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এদিকে আমেনা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া ভাঙ্গণের শিকার বাচামারা গ্রামের রোকেয়া বেগম জানান-স্বামীর ভিটে মাটি নদীতে ভাংগা গেছে এক মাস ধইরা আমরা এই স্কুলে থাকি কেও আমগে সাহায্য করে নাই । আমাগে খবর তো নিলো না আগে দেখছি কত সাহায্য আইছে এখন কিছুই পাইনা ।
নদী ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্থ বাচামারা গ্রামের হেলাল শেখের স্ত্রী হাসিনা বেগম, একজোর মোল্যার স্ত্রী সাজেদা বেগম জানান-আমগো ছবি তুইলা লাভ কি কোন কিছু আইলে চেয়ারম্যান মেম্বারদের পেট ভরবো । বাড়িঘর জাগাজমি নদীতে ভাংগা যাওয়ায় এক মাস ধইরা অন্যের জায়গা বাড়া নিয়া কোন মতে বাড়ি ঘর জিনিস পত্র নিয়া রোদ বৃষ্টিতে বিজা ছাউল পোলাপ্যান নিয়া খোলা আকাঁশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করতাছি । এ পর্যন্ত সরকার ও চেয়ারম্যান মেম্বাররা কোন কিছুই দেয়নাই । সরকার কিছু দিলে চেয়ারম্যান মেম্বারদের পেট ভরবো ।
বাচামারা ইউনিয়নের চুয়াডাংগা গ্রামের ফজলাল শেকের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান-নদীতে ভাংগার পর এক মাস ধইরা আমেনা খাতুন স্কুলের মাঠে কোন মতে টিনের চাল এ্যাংগা দিয়ে গরু-ছাগল পোলাপান নিয়া আশ্রয় নিছি । আর জাগো টেকা পয়সা আছে তারা অন্যের জাগা ভাড়া নিয়া ঘরবাড়ি তুলছে। একমাস ধইরা খাইয়া না খাইয়া এই জাগা আছি আমাগো কেও এক শের চাইল দেয়নাই ।
বাচামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল লতিফ জানান- যমুনা নদীতে বর্ষার পানি বৃদ্ধির ফলে গত এক মাসে যমুনা নদীর ভাঙ্গনে বাচামারা ইউনিয়নের চুয়াডাঙ্গা, বাচামারা জেলেপাড়া, চরবারাঙ্গা, বাচামারা উওর খন্ড,বাচামারা শেক পাড়া, সুবুদ্দিয়া গ্রামের প্রায় তিনশত পরিবারের বাড়িঘর জমিজমা নদী গর্ভে বিলীণ হয়ে গেছে । ইতিমধ্যে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রেরন করা হয়েছে । সরকারী-বেসরকারী ভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যায়নি । নদী ভাঙ্গণ রোধ কল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন, নদী ভাঙ্গণে ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্নবাসন সহ সাহায্যের জন্য সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট বিনীত প্রার্থনা জানা”িছ ।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউর রহমান জানান-ইতিমধ্যে বাচামারা ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গনের ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা পেয়েছি। তালিকা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক মহোদয়ের অফিসে পাঠানো হবে তালিকা যাচাই বাছাই করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করে তাদের পুর্ণবাসন ও সাহায্য সহযোগিতা করা হবে ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *