Connect with us

দেশজুড়ে

নরসিংদী প্রেসক্লাবে বজ্রশক্তির চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

Avatar photo

Published

on

“অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর” দৈনিক বজ্রশক্তি একে একে চারটি বছর পার করে পদার্পন করেছে পঞ্চম বছরে। এ উপলক্ষে সারাদেশের মত গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছ’টায় নরসিংদী প্রেসক্লাবে পত্রিকাটির চতুর্থ বর্ষ উদযাপনের আয়োজন করেছে দৈনিক বজ্রশক্তি। চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল মতিন ভূঞা।
দৈনিক বজ্রশক্তির বিশেষ প্রতিনিধি মো. মোতালিব খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটিতে দৈনিক বজ্রশক্তি ও অন্যান্য গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী ও পত্রিকাটির বিক্রয় প্রতিনিধি, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের উপস্থিতিতে নরসিংদী প্রেসক্লাবের হলরুমটি জনাকীর্ণ হয়ে উঠে। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর গোলাম মোস্তফা মিয়া, শিউলীবাগ বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ রায়হানা সরকার, নারায়ণপুর রাবেয়া মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জহিরুল ইসলাম মৃধা, নরসিংদী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী, নরসিংদী প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোর্শেদ শাহরিয়ার, নরসিংদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল মোহাম্মদ মানিক, নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি ওপারেশন) মো. মোজাফফর হোসেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন দৈনিক বজ্রশক্তির সাহিত্য সম্পাদক জনাব রিয়াদুল হাসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জনাব আলহাজ্ব আব্দুল মতিন ভূঞা সমাজে গণমাধ্যমের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, “সমাজের মানুষের মাঝে যেন শৃঙ্খলা নষ্ট না হয়, হানাহানি না হয়, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, দাঙ্গা-বিভক্তি ইত্যাদি বিস্তার না ঘটে সে ব্যাপারে সচেতন করাই গণমাধ্যমের কাজ। এসব ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যম একটা মুখপত্রের ভূমিকা পালন করে। শুধু আইনশৃংখলা বাহিনী গুলি অস্ত্র ব্যবহার করে সমাজে শান্তি বজায় রাখতে পারবে না, এ জন্য সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। আর সেই কাজটা সুন্দরভাবে করতে পারে গণমাধ্যম।ও
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের সমাজে প্রচÐ ধর্মীয় বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এক মতের লোক অন্য মতকে পছন্দ করে না। একের কথার সাথে অন্যের কথার মিল পাওয়া যায় না। এমনকি আলেমরা ওয়াজ মাহফিলে যা বলেন তার সাথে তার ব্যক্তিগত জীবনের মিল থাকে না। তাছাড়া উগ্রবাদ, সন্ত্রাসী কাজে উদ্বুদ্ধ করছেন ঐ ওয়ায়েজরাই। তাই শুধু তাদের কথার উপর বসে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে জ্ঞান খাটাতে হবে। এক্ষেত্রে দৈনিক বজ্রশক্তি খুব প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষপাতিত্ব করে না। তারা সত্য কথা তুলে ধরছে। ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা প্রকাশ করছে।” পরিশেষে তিনি দৈনিক বজ্রশক্তির সাথে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি দৈনিক বজ্রশক্তিকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে দৈনিক বজ্রশক্তির রিয়াদুল হাসান তার বক্তবব্যে বলেন, “আজ এমন একটা সময় আমরা অতিক্রম করছি যখন পৃথিবীতে ১৬ হাজার অ্যাটম বোম তৈরি করে রাখা হয়েছে। রয়েছে হাইড্রোজেন বোমাসহ আরও নতুন নতুন ভয়াবহ বোমা। সীমান্তে সীমান্তে চলছে যুদ্ধ, রক্তপাত। প্রতিটি দেশ সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে। ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রীগণ অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছেন। অন্যদিকে মুসলমান নামে পরিচিত জাতির অবস্থা আরো ভয়াবহ। জঙ্গিবাদ নামক ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে হামলা করা হচ্ছে। এই জঙ্গিবাদের উৎপত্তি কোথা থেকে হলো, কারা একে প্রমোট করছে, কারা এর পেছনে অর্থ ঢালছে, কারা বিশ্বময় বিস্তার ঘটাচ্ছে, সারা বিশ্বে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের ঈমানকে ভুল খাতে প্রবাহিত করে এই কর্মকাÐ কারা ঘটাচ্ছে, আর এর ফায়দা উঠছে কার ঘরে, এসব প্রশ্নের উত্তর মোটামুটি সকলের জানা আছে কিন্তু দুর্ভাগ্য এই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে আমার জাতির একদল বিপথগামী লোক, একদল পথভ্রষ্ট লোক। তাদের ঈমান জাতির কল্যাণের পরিবর্তে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
রিয়াদুল হাসান আরো বলেন, আজকে আমরা আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কিত। সম্প্রতি মিয়ানমারে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে জোর করে আমাদের দেশে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের বাস্তু-ভিটা থেকে উৎখাত করা হয়েছে। অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিয়ে তারা পালিয়ে এদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। মুসলমান জনগোষ্ঠীর এ ধরনের পরিণতি তুলে ধরেই সাধারণত জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। ইরাকে এরকমই হয়েছিল, সিরিয়ায় এরকমই হয়েছিল। আমাদের আশঙ্কার জায়গাটা হলো- আমাদের ৯০ শতাংশ লোক মুসলমান দাবি করে, আল্লাহকে বিশ্বাস করে, আল্লাহ-রসুল-কিতাবকে ভালোবাসে। আমাদের দেশে ইসলামী দলের সংখ্যা ছোটখাটো মিলিয়ে একশ’র বেশিই হবার কথা। এদের মধ্যে থাকা বিভিন্ন গোষ্ঠী সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের ঈমানী শক্তিকে উসকে দিয়ে অতীতের মত ধ্বংসাত্মক কাজে লেলিয়ে দিতে পারে। ইতোমধ্যেই কিছু কিছু উগ্রবাদী মতাদর্শের নেতারা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসবাদী কর্মকাÐ ঘটিয়ে আল্লাহ-রসুলের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। কোর’আনের কিছু আয়াত উল্লেখ করে, হাদিস উল্লেখ করে এবং বোঝাতে চায় তাদের অমানবিক কর্মকাÐ কোর’আন-হাদীস দ্বারা সমর্থিত। তাদের এই ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষের ঈমান ভুল খাতে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফল হয়েছে এই যে, বিশ্বজোড়া ইসলামের বদনাম হয়েছে, মুসলমানরা টার্গেটে পরিণত হয়েছে। আর ইসলামবিদ্বেষীদের নীলনকশা বাস্তবায়ন সহজ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমাদের উচিত ছিল ধর্মের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া, শান্তি ও মানবতাকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা। তার বদলে ধর্মকে ব্যবহার করে কীভাবে স্বার্থসিদ্ধি করা যায় তার প্রতিযোগিতা চলছে। আজকে আমরা গোটা জাতি যদি ন্যায়ের পক্ষে, মানবতা ও মানবাধিকারের পক্ষে, ধর্মের প্রকৃত শিক্ষার পক্ষে এবং অন্যায়, অবিচার, অমানবিকতা, ধর্মের নামে অধর্মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারতাম, তাহলে আমাদেরকে কোনো পরাশক্তির দিকে তাকিয়ে থাকাতে হতো না। ঐক্যবদ্ধ জাতিকে কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয় না।”
তিনি বলেন, “গণমাধ্যম একটি শক্তিশালী মাধ্যম। কোনো ব্যাপারে জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এর কোনো বিকল্প নেই। এটা জাতির দর্পণের মতো। গণমাধ্যম মানুষকে যেভাবে ভাবায়, মানুষ সেভাবেই ভাবে। জাতিকে সঠিক বার্তা দেওয়া, সঠিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ করা গণমাধ্যমের পক্ষে যতটা সহজ, অন্য কারো পক্ষে তা এতটা সহজ নয়। দৈনিক বজ্রশক্তি তার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ কাজটি করে আসছে। দৈনিক বজ্রশক্তির পাঠকমাত্রই জানেন, এটা কোনো বাণিজ্যিক ধারার পত্রিকা নয়। বরং একটি সঠিক আদর্শের ভিত্তিতে দেশের আপামর জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির জন্য আমরা যা কিছু করছি তা সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে, নিজেদের টাকা-পয়সা খরচ করে, আয়-রোজগার সব উৎসর্গ করে দিয়ে, কোনো স্বার্থ ছাড়া, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছাড়া। দৈনিক বজ্রশক্তি তার সীমিত সক্ষমতার মধ্যে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যে কাজ করে যাচ্ছে, অপরাপর প্রতিটি গণমাধ্যমও সেই ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে দৈনিক বজ্রশক্তির চতুর্থ বর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকার শিশু মিলনায়তনে পত্রিকাটির প্রধান উপদেষ্টা জনাব হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম প্রদত্ত বক্তব্যটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে কেক কেটে দৈনিক বজ্রশক্তির চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গাজীপুর

গাজীপুরে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু, আতঙ্কে স্থানীয়রা

Avatar photo

Published

on

গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত ভবনে অননুমোদিতভাবে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ার বিগত ৫ বছরেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বেইলি রোড ট্র্যাজেডির পর রেস্টুরেন্টটিতে পুনরায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রীতিমতো আতঙ্গে ভুগছেন প্রতিবেশীরা। রেস্টুরেন্ট মালিক বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘অগ্নিকাণ্ড’ উল্লেখ করে বীমা কোম্পানি থেকে কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ পেলেও আশপাশের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আজও দাঁড়ায়নি কেউ। উন্মুক্ত আলো-বাতাস বিহীন ওই রেস্তোরাঁর বদ্ধ রান্নাঘরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে ভবনের ভেসমেন্ট লন্ডভন্ড হয়ে যায় এবং কয়েকটি ভবনের মূল কলাম ভেঙ্গে পড়ে।

উল্লেখ্য বিগত ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুর মহানগরীর বোর্ড বাজারে অবস্থিত বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁয় সংঘটিত ওই বিস্ফোরণে ১ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়। ব্যস্ততম বোর্ড বাজার বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষেই মনসুর আলী সুপার মার্কেটের নীচ তলায় রেস্তোরাটি অবস্থিত। বিস্ফোরণে রেস্তোরাঁর ভেতরে থাকা লোকজন ছাড়াও পথচারিরাও আহত হয়। মহাসড়কের বিপরীত পাশে বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়েও বিস্ফোরিত বস্তু আঘাত আনে। মসজিদের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আজও ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণের সাক্ষী হয়ে আছে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কত ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও প্রাণ ঝরলে কর্তৃপক্ষ সজাগ হবে। ওই ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। এ ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়া পর্যন্তই সবার দায়িত্ব শেষ। পরবর্তীতে রেস্তোরাঁ বা ভবনটির কার্যক্রম সম্পর্কে আর কেউ খবর রাখেনি। এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রস্তাবনা-নির্দেশনাও আর বাস্তবায়ন হয়নি। বরং যথাযথ নিয়ম কানুন প্রতিপালন ছাড়াই চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে আগের জায়গায় রেস্তোরাঁ চালুসহ সব ধরনের কার্যক্রম চলছে আরো জোরেশোরে। এতো বড় একটা দুর্ঘটনার পরও যেনতেনভাবে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ায় বিস্ময়ে অবাক স্থানীয়রা। ভবনটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণে রাজউকের অনুমোদন ও ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তি সনদও নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি রেস্তোরাঁ ও ভবন মালিকপক্ষ।ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে কীভাবে আগের মতই সব কার্যক্রম চলছে তা যাচাই করে দেখারও সময় হয়নি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের।

পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকরা জানান, বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতি হলেও রেস্টুরেন্ট মালিক ‘অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাবদ’ বীমা কোম্পানি থেকে এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ লাভ করেন। অথচ ওই রেস্তোরাঁ মালিকের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কাউকেই একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। বিগত ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হওয়ার পর দিনই প্রতিবেশী আতঙ্কগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁর কার্যক্রম পরিচালনা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব‍্যবস্থা গ্রহণ করেননি। সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে রেস্টুরেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধশত প্রাণহানির ঘটনায় গাজীপুর বোর্ড বাজারের আলোচিত বাংলার রাঁধুিন রেস্তোরাঁ সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখন রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, বাংলার রাঁধুনির জরুরি বর্হিনির্গমন ব্যবস্থা না থাকা ভবনের ভেতরে আটকে থাকা মানুষগুলোর পরিণতি যদি নতুন কোনো বেইলি রোড ট্র্যাজেডি তৈরি করে তাহলে তার দায়ভার কে নিবে? বিগত ২০১৯ সালের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোরই বা কি হবে যারা পূর্বের দুর্ঘটনার ঋণের বোঝা এখনো বয়ে বেরাচ্ছেন। রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিব কিন্তু ঠিকই ইন্সূরেন্সের টাকা দিয়ে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন। রাশেদের মতো সন্তান হারানো মায়ের কোল ভরিয়ে দিবে কে?

এদিকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভবনটি যথাযথভাবে সংস্কার করেই আমরা পুনরায় রেস্তোরাটি চালু করেছি। এখন আর কোন ঝুঁকি নেই।

Continue Reading

গাজীপুর

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মেমোরিয়াল ডে-২০২৪ উদযাপন

Avatar photo

Published

on

কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৪” উদযাপন করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।

‘কর্তব্যের তরে, করে গেলে যাঁরা,আত্মবলিদান-প্রতিক্ষণে স্মরি, রাখিব ধরি, তোমাদের সম্মান’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শনিবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম বিপিএম পিপিএম(বার)।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার। পরে ১ মিনিট নীরবতা পালন ও কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading

গাজীপুর

মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ কোনাবাড়ি থানার এএসআইয়ের বিরুদ্ধে

Avatar photo

Published

on

গাজীপুর প্রতিনিধি :

ঘুষ না দেয়ায় মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। তিনি কোনাবাড়ির বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক অন্যায় করে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশকিছু অভিযোগ।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে ওই এএসআই রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দাদা মোঃ লাল মিয়া (৬২) নামে এক ব্যক্তি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি অপরাধ (উত্তর) বিভাগে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এএসআই রুহুল আমিন।

লিখিত অভিযোগে লাল মিয়া জানায়, গেল ৪-ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ি থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসএআই) রুহুল আমিন ও তার সঙ্গী ফর্মা (সোর্স) মিলে লাল মিয়ার নাতী ইমনকে আমবাগ লালঘাট ব্রিজের কাছে থেকে আটক করে।

পরে তাকে ধরে নিয়ে মিতালী ক্লাব সংলগ্ন ভুক্তভোগীর বর্তমান ঠিকানার ভাড়াবাসায় এসে মাদকদ্রব্যের কথা বলে ঘরে প্রবেশ করেন ওই দারোগা এবং তার সোর্স মোঃ শরিফ মিয়া। এ সময় তাদের ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র বিছানা, আলমারি, সুকেশ তল্লাশি করেন তারা। তল্লাশিরকালে ইমনদের বাসায় মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত কোনো কিছুই পায়নি ওই পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক।

এ পর্যায়ে তাদের ঘর তল্লাশি শেষে কিছু না পেয়ে এএসআই রুহুল আমিন ও তার সঙ্গে ফর্মা (সোর্স) ঘরে থাকা স্টিলের আলমারি থেকে নগদ তিন হাজার টাকা, সুকেশ এর ড্রয়ার থেকে আট আনা স্বর্ণের একটি চেইন, আট আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, তিন আনা ওজনের একটি আংটি এবং ব্যবহৃত অপ্পো ব্রান্ডের পুরাতন মোবাইল সেট নিয়ে নেয়।

পরে পুলিশের সঙ্গে থাকা সোর্স শরিফ এবং চাঁন মিয়া অভিযোগকারীর নাতী ইমনকে মারধর করে এবং টাকা দিতে বলে। টাকা না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে ইমনের মাকে হুমকী দিয়ে ইমনকে নিয়ে চলে যায়।

লিখিত অভিযোগকারী ইমনের দাদা লাল মিয়া বলেন, এরপর ৫-ফেব্রুয়ারি অনুমানিক রাত দেড়টার দিকে এএসআই রুহুল তার সোর্স মোঃ শরিফ (২০বাসায় পাঠায় এবং ১নং আসামি ইমনের মা রাশেদা বেগমের কাছে (৫০) পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে বলে। ৫০ হাজার টাকা দিলে থানা থেকে তার ছেলে ইমনকে ছেড়ে দেয়া হবে।

অভিযোগকারী লাল মিয়া জানায়, তার ছেলে নুর আলম নাতী ইমনসহ পরিবার নিয়ে বর্তমান ঠিকানায় দুই বছর যাবৎ বসবাস করছেন। ইমনের বাবা নুর আলম নছের মার্কেট এলাকায় ভিভিন্ন ঝুটগুদামে ডেইলী লেবারের কাজ করেন। আর নাতী ইমন বাসায় থেকে সুইং মেশিন চালিয়ে প্যান্ট ও গেঞ্জির কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছে। আমি এবং আমার পরিবারের কেউই কখনো মাদকদ্রব্য সেবন, গ্রহণ এবং ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃত্ততা নেই এমন কি এলাকার কেউ বলতে পারবে না যে, আমার নাতী ইমন মাদকের সংঙ্গে জড়িত।
অথচ দারোগা রুহুল সন্দেহ বশত্ব রাস্তা থেকে আমার নাতীকে গ্রেপ্তার করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা টাকা চেয়েছিল, মূলত টাকা না দেয়ার কারণে আমার নাতিকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে জেলে প্রেরণ করেছেন রুহুল দারোগা। এই বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমার বর্তমান ঠিকানা ভাড়া বাসার সামনে স্থাপনকৃত সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত সব ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ওই ভিডিও ফুটেজে এএসআই রুহুল আমিনসহ সোর্সদের দেখা গেছে ইমনের বাসায় ঢুকতে। ভিডিও ফুটেজে ইমনকে মারপিট করার শব্দও শোনা গেছে।

ইমনের বাবা নুর আলম বলেন, আমার ছেলে ইমনের সঙ্গে মিতালী ক্লাব উত্তরপাড়া এলাকার নয়ন (১৯) কেও গ্রেপ্তার করে হয়। নয়নকে ১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট আর আমার ছেলেকে ২৫পিস ইয়াবা চালান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, রুহুল নয়নের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নয়নকে ১৫পিস ট্যাবলেট দিয়েছে।

ইমনের বাবা বলেন, আমি গরীব মানুষ বিভিন্ন ঝুট-গুদামে লেবারের কাজ করে কোনো মতে সংসার চালায়। আমার ছেলেকে যেদিন গ্রেপ্তার করা হয় সেদিন বরিশালে পীরের দরবারে ছিলাম। বাসায় এসে শুনি আমার ছেলে ইমনকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করে জেলে দেয়া হয়েছে। আমি মেয়ের জন্য আস্তে আস্তে কিছু স্বর্ণের জিনিস করেছিলাম সেগুলোও ওই পুলিশ নিয়ে গেছেন। সোর্স ওবায়দুল ওই গয়না গুলো খুলে নেন। টাকা দিতে পারিনি বিধায় আমার ছেলেকে মাদক মামলায় জড়ানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, ইমনকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর পরে তারা খুব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। এর প্রতিকার চেয়ে দারোগা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বর্ণিত বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী করে লিখিত অভিযোগ করেছি।

তবে এসব অভিযোগ এএসআই রুহুল আমিন অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

জিএমপি কোনাবাড়ি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মহিউদ্দিন ফারুক জানান, অন্যায় করতে পছন্দ করি না, কেউ যদি অন্যায় করে সমর্থনও করি না, পুলিশের কেউ যদি এমন অপরাধ করে থাকে তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে।

Continue Reading