Connect with us

জাতীয়

বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজধানীতে দৈনিক বজ্রশক্তির চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন

Avatar photo

Published

on

বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে দৈনিক বজ্রশক্তির চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: বাংলাদেশেরপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো দৈনিক বজ্রশক্তির চতুর্থ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশের শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সংগীত অঙ্গনের বহু প্রতিথযশা ব্যক্তির উপস্থিতিতে এ সময় শিশু একাডেমির মিলনায়তন পূর্ণ হয়ে ওঠে। একের পর এক অতিথিদের উদ্দীপনামূলক বক্তব্য ও শিল্পীদের সংগীত পরিবেশন আর দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালিতে মেতে উঠে পুরো মিলনায়তন।
আজ ৩ টা ৩০ মিনিটে ‘মাটি শিল্পগোষ্ঠী’র সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে দৈনিক বজ্রশক্তির প্রকাশক ও সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা’র স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্যে তিনি অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে দৈনিক বজ্রশক্তির আদর্শ ও পথচলার উপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করেন। এরপর দৈনিক বজ্রশক্তির বিগত দিনগুলির পথচলার উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করা হয়।অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন দৈনিক বজ্রশক্তির প্রধান উপদেষ্টা ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সোসাইটির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম (ইনসেটে)। এসময় দেশের শিক্ষা, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সংগীত অঙ্গনের বহু প্রতিথযশা ব্যক্তির উপস্থিতিতে এ সময় শিশু একাডেমির মিলনায়তন পূর্ণ হয়ে ওঠে।

এরপর অতিথিদের সামনে অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন পত্রিকাটির প্রধান উপদেষ্টা ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সোসাইটির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, “যখন কোনো সমাজ অচলায়তনে পরিণত হয়, প্রথাগুলো প্রগতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, ধর্মান্ধতা ও কূপমণ্ডূকতা প্রবল শক্তিমান হয়ে ওঠে, অযৌক্তিক বিজ্ঞানহীন চিন্তাচেতনায় মাকড়শার জালে বন্দী পতঙ্গের ন্যায় সমাজ ছটফট করতে থাকে তখন সেই জালকে ছিন্ন করতে আবির্ভুত হন কিছু দৃষ্টিবান মানুষ যারা আপ্রাণ চেষ্টা করেন সমাজব্যবস্থাকে পরিবর্তন করার জন্য। তারা ইতিহাসের গতিপথকে পাল্টে দেন। তাদের এই সম্মিলিত আঘাতকে বলা হয় রেনেসাঁ।”
সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সোসাইটির চেয়ারম্যান হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “মধ্যযুগের ইউরোপেও দীর্ঘকাল থেকে চলছিল দাসপ্রথা, সামন্তপ্রভুদের দুঃশাসন আর খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের ফতোয়ার তরবারিতে নির্দোষ মানুষের রক্তসাগর বয়ে গিয়েছিল। একদিকে বিপুল ভোগ বিলাস আর ক্ষমতার চাবুক, অপরদিকে সীমাহীন দারিদ্র আর বঞ্চনা। যারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলতেন, যারা চিন্তাশীল, বিজ্ঞানী, সংস্কারপন্থী দার্শনিক ছিলেন তাদেরকে ধর্ম-অবমাননার অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হতো। এই সময়কেই বলা হয় ডার্ক এইজ বা অন্ধকারের যুগ, জাহেলিয়াতের যুগ। তখন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আর রাজতন্ত্রের যাঁতাকলের নিষ্পেষণ থেকে অসহায় মানবতাকে পরিত্রাণ করতে ইউরোপের সাহিত্যিকরা সাহিত্য রচনা করতে লাগলেন, নাট্যকাররা নাটক লিখতে লাগলেন, কবিরা কবিতা লিখলেন, শিল্পীরা ছবি আঁকলেন। তাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানুষের চিন্তার বন্ধঘরের তালা খুলে গেল, নতুন নতুন জ্ঞানের দুয়ার উন্মোচিত হলো। সাংঘাতিক এক রেনেসাঁর সৃষ্টি হলো। সেই সকল রেনেসাঁর ফলেই আজকে আমরা মানবজাতি জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রযুক্তিগত এই উন্নতির যুগে উপনীত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে জ্ঞানের ভারসাম্যহীনতার ফলে, ন্যায়-নীতির ভুল মানদণ্ডকে ধারণ করার কারণে জ্ঞান বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষের যুগেও মানুষকে এখনও তাদের বাস্তবজীবনে চরম অন্যায়-অবিচার, খুন-ধর্ষণ, নিরাপত্তাহীনতা, দুঃখ-ক্লেশ, যুদ্ধবিগ্রহ, রক্তপাতের মধ্যেই বাস করতে হচ্ছে। যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছিল আশীর্বাদ সেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিই অপশক্তির কুক্ষিগত হওয়ার কারণে মানবতার বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, মানবজাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত করেছে, ফেলে দিয়েছে অস্তিত্বের সংকটে। আজও চলছে শক্তিমানের শাসন, পুরো মানবজাতি ন্যায়-অন্যায় ভুলে পারমাণবিক শক্তির সামনে, তাদের যাবতীয় অন্যায়ের সামনে আত্মসমর্পণ করে আছে। গ্রাম থেকে শুরু করে বিশ্ব সর্বত্র এখন সরলের উপর ধূর্তের প্রতারণা, দরিদ্রের উপর ধনীর বঞ্চনা, শাসিতের উপর শাসকের জুলুম। নিরপরাধ শিশুর রক্তে আজ পৃথিবীর মাটি ভেজা। যেন সেই অন্ধকার যুগ, ডার্ক এজের প্রেতাত্মা এই সময়ের কাঁধে ভর করেছে।”
তিনি বলেন, “পবিত্র কোর’আনে অবতীর্ণ প্রথম শব্দটিই হলো একটি আদেশ- ইক্রা। অর্থাৎ পড়ো, জানো। সেই অজ্ঞতার অন্ধকারে নিমজ্জিত আরবদেরকে বলা হচ্ছে জানতে, বলা হচ্ছে চিন্তা করতে, গবেষণা করতে, অন্ধত্ব থেকে মুক্ত হয়ে তাদের মস্তিষ্ককে ব্যবহার করতে তাগিদ করা হচ্ছে। আল্লাহর রসুল তাদের চিন্তাজগতে জাগরণ, রেনেসাঁ সৃষ্টি করে দিলেন। তার ফলাফল তো ইতিহাস, সকলেই জানেন। তারা যখন জানল, বুঝল, পড়ল, শিখল জ্ঞানে-বিজ্ঞানে সামরিক শক্তিতে পৃথিবীর সকল জাতির শীর্ষে উন্নীত হয়েছিল, সকলের শিক্ষকের আসন অধিকার করেছিল, হয়েছি প্রধান পরাশক্তিধর সভ্যতা। নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে, শিল্পে, সাহিত্যে রেনেসাঁ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই রেনেসাঁর ঢেউ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। তেমনই একটি রেনেসাঁ এখন প্রয়োজন। ধর্ম মানুষের চিন্তার দুয়ার খুলে দিয়েছিল। সেই ধর্মের নামে আজকে মানুষকে সমস্ত চিন্তা থেকে, সৃষ্টিশীলতা থেকে, মুক্তবুদ্ধির চর্চা থেকে বিরত রাখা হয়। ধর্মের নামে অন্ধত্ব, কূপমণ্ডূকতা, স্থবিরতা চালু করে ফেলা হয়েছে। অচলায়তনে বন্দী হয়ে গেছে মানুষ। এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম দরকার, নবজাগরণ দরকার। সেটার জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা ও আশীর্বাদ চাই।”
অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপনের পর কেক কেটে দৈনিক বজ্রশক্তির চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন করেন সম্মানিত অতিথিবৃন্দ। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি সিকাদর মকবুল হক, বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এড. মনজিল মোরসেদ, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক আব্দুর রহিম, প্রকৃতি ও নগর সৌন্দর্যবিদ রাফেয়া আবেদীন, বিশিষ্ট সমাজসেবক জাফর ইকবাল বাপ্পী, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব এস এম সাইফুর রেজা, জেটিভি অনলাইন ও বাংলাদেশ অনলাইন টেলিভিশন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট ব্যারিস্টার সারওয়ার জাহান শামীম, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রধান সমন্বয়কারী মুশতারী বেগম, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র’র কণ্ঠসৈনিক মাজহারুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন, দর্শন বিভাগের সুপার নিউমারারী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. বেলায়েত হোসেন খান, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন আহম্মেদ, দৈনিক গণমানুষের আওয়াজ পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ সবুজ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরো আমন্ত্রিত ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান; গোলাম কুদ্দুছ, সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট; মোস্তাফা জব্বার, তথ্য প্রযুক্তিবিদ; শাহজাহান আলম সাজু, সভাপতি, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ; অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম ফজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ, ডিন, বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাবি; অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী, চেয়ারম্যান, পুরাকৌশল বিভাগ, বুয়েট; অধ্যাপক ড. সিরাজুল হক, চেয়ারম্যান, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগ, ঢাবি; অধ্যাপক ড. লীনা তাপসী খান, চেয়ারম্যান, সংগীত বিভাগ, ঢাবি; অধ্যাপক ড. মো. ইউসুফ, চেয়ারম্যান, আরবী বিভাগ ঢাবি; অধ্যাপক ডা. সালমা চৌধুরী, অবস ও গাইনী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল; অভিনেতা সায়েম সামাদ, হেড অব সেলস এন্ড মার্কেটিং, এসএটিভি; ব্যারিস্টার এম আমির উল্ ইসলাম; এস এম আলাউদ্দিন, সাবেক সচিব; কৃষিবিদ মো. নজরুল ইসলাম, উপদেষ্টা, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ; বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ বি এম তায়েফুল ইসলাম; আলহাজ্ব মোঃ হামিদুর রহমান খান সিএসপি; ব্যারিস্টার মেজর (অব.) এম সারোয়ার হোসেন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব; কবি নাহিদা আশরাফি, সম্পাদক, জলধি; হাসান মাহমুদ, সভাপতি, স্বপ্নকুঁড়ি; ইয়াছিন মোহাম্মদ, সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা।
অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে দৈনিক বজ্রশক্তির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সম্মানিত অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সাংবাদিক ও লেখক আব্দুর রহিম তার বক্তব্যে বলেন, আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশের অধিবাসী। আমরা স্বাধীনতার পর আজ পর্যন্ত অনেক উন্নতি করেছি। কিন্তু আমার মনে একটা প্রশ্ন জাগে, আমরা কি সেই স্বাধীনতার ফসল ভোগ করতে পেরেছি? আমি বজ্রশক্তি পত্রিকাটি দেখেছি। আজ সেলিম সাহেবের বক্তব্যও শুনলাম। আমি তার বক্তব্যের প্রশংসা করছি। আজ আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ বিচার পায় না, বিচারের বাণী নির্ভৃতে কাঁদে। আমি বজ্রশক্তির সকল কর্মী ও আগত অতিথিদের আবারও শুভেচ্ছাবাদ জানিয়ে এবং পত্রিকাটির উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করে আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া তার বক্তব্যের প্রথমেই দৈনিক বজ্রশক্তির ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধি কামনা করেন। তিনি এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, যদিও বজ্রশক্তির বয়স অনেক কম কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই পত্রিকাটি দেশের সংবাদ অঙ্গনে একটি জায়গা করে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দুনিয়াতে থাকবো অল্প সময়। আমাদেরকে এই অল্প সময়ের মধ্যেই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। কারণ দুনিয়ার সৎকর্মই আমাদের পরকালের জন্য উপকারে আসবে।
নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ বলেন, দৈনিক বজ্রশক্তি যে জঙ্গিবাদে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে তাদের এই আদর্শের সাথে আমি একমত। আজকে আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো আদর্শহীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া আমরা স্বাধীনতার এতো বছর পরও আমাদের দেশকে মানবিক করতে পারিনি। আমাদের লক্ষ্য থাকতে হবে, কিভাবে আমারা আমাদের দেশকে মানবিক করতে পারি। তিনি আরও বলেন, দৈনিক বজ্রশক্তি যে লক্ষ্য নিয়েছে তা অর্জন করতে হলে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। অনেক রাজনৈতিক দলও এখন ধর্মকে ব্যবহার করছে। এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতেই হবে। তিনি আমাদের সমাজের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার অসারতা তুলে ধরে বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে শুধু শিক্ষিত করলেই হবে না, রাষ্ট্রকে মানবিক করার কাজে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের আরেক অতিথি এড. মনজিল মোরসেদ অনুষ্ঠানের সকল অতিথি ও আয়োজকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বজ্রশক্তি যে আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের সামনে এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ। তিনি অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে হয়ে যাওয়া সঙ্গিতানুষ্ঠানে গান পরিবেশনকারী শিল্পীদের প্রসংশা করে বলেন, তাদের গানগুলো সবই মৌলিক এবং দেশাত্ববোধক। গানগুলোর মধ্যে দেশপ্রেমের বাণী পেয়েছি। আশা কারি, ভবিষ্যতে দৈনিক বজ্রশক্তি এদেশের সংবাদ জগতে তার নিজের স্থান দখল করে নিতে পারবে।
প্রকৃতি ও নগর সৌন্দর্যবিদ রাফেয়া আবেদীন অনুষ্ঠানের সকল উপস্থিতিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমি আপনাদেরকে একটা পরামর্শ দিব। সেটা হচ্ছে, আপনারা পত্রিকার মাধ্যমে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়েও মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টার করবেন। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও উপলক্ষগুলোতে বৃক্ষরোপনের জন্য সকলকে আহŸান জানিয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।
বিশেষ অতিথি সিকদার মকবুল হক তার বক্তব্যের শুরুতেই অনুষ্ঠানের আয়োজক ও অতিথিদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, দৈনিক বজ্রশক্তি যে আদর্শের কথা বলছে সে আদর্শ ধারণ করতে হলে সামনে অনেক বাধা-বিপত্তি আসতে পারে। অনেক বড় বড় শত্রæর দ্বারাও আক্রান্ত হতে পারে। আজ সন্ত্রাসের পক্ষে এবং শান্তির বিপক্ষে বড় বড় শক্তি কাজ করছে। কিন্তু তারপরও আমি মনে করি আল্লাহর অভিপ্রায় যেদিন হবে সেদিনই পৃথিবী ধ্বংস হবে। তার আগে নয়। তিনি বলেন, বজ্রশক্তির প্রধান উপদেষ্টা হুসাইন মোহাম্মদ সেলিম সাহেবের বক্তব্য আমি শুনেছি। তার কথা শুনে আমার মনে হয়েছে- তার ভেতরে একটা আগুন আছে। তিনি আমাদের মৃতপ্রায় জাতিকে উজ্জীবিত করতে পারবেন। আমি আশা করবো, দেশের শান্তি রক্ষায় এবং এ দেশ থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ দূরীকরণে দৈনিক বজ্রশক্তি ভবিষ্যতে আরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বজ্রশক্তি দীর্ঘজীবি হোক, এরকম আনন্দঘন অনুষ্ঠান আরও বহু বছর পালিত হোক এই কামনায় আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।
অনুষ্ঠানের আরেক অতিথি বিশিষ্ট সমাজসেবক জাফর ইকবাল বাপ্পী বলেন, বজ্রশক্তি পত্রিকাটি এখনও শিশু। তবে তারা দেশব্যাপী যে কাজ করছে তা সত্যিই প্রসংশার দাবিদার। তিনি বলেন, আমাদের মধ্য থেকে সকল প্রকার ধর্মান্ধতা দূর করতে হবে। আপনাদের এই বাণী দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।
ব্যারিস্টার মেজর (অব.) এম সারোয়ার হোসেন অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার জন্য এর আয়োজকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি আশা করব এমন একটি অনুষ্ঠান প্রতি বছর হোক। সেলিম সাহেবের বক্তব্যের মধ্যে বজ্রকণ্ঠ আছে। যেমনি তার পত্রিকাটির নাম ‘বজ্রশক্তি’র মধ্যেই একটি গতি একটি প্রাণ রয়েছে। তিনি বলেন, আজকে শুধু আমাদের দেশের জন্যই নয় সমগ্র বিশ্বের জন্যই সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ একটি বড় হুমকি। বিশ্বের পরাশক্তিধর দেশগুলোর নেতারা শুধুমাত্র ধর্মের কারণে পুরো মুসলিম জাতিটিকে ধংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই এখন আমাদের মধ্যেকার সকল রাজনৈতিক অপ-সংস্কৃতি দূর করতে হবে। আমাদেরকে আজ ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এডভোকেট ব্যারিস্টার সারওয়ার জাহান শামীম তার বক্তব্যের প্রথমেই অনুষ্ঠানের উপস্থিত সকল অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, সেলিম সাহেবের বক্তব্য শুনে আমি অভিভূত হয়েছি। আপনারা যে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন আপনাদের এই কাজের সাথে আমি একমত। আমরা সবাই চাই এদেশের সকল মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করুক। তিনি দৈনিক বজ্রশক্তির কার্যক্রমের প্রসংশা করে এই কাজকে স্বাগত জানান।
সম্মানিত অতিথিদের বক্তব্য শেষে শুরু হয় সংগীত পরিবেশন অধীবেশন। এ সময় সংগীত পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতারের কণ্ঠসৈনিক গাজী মাজহারুল ইসলাম। তিনি তার চমৎকার উপস্থাপনা ও সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উপস্থিত উপস্থিত দর্শকদের মাতিয়ে তুলেন। এ সময় তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শুরুর দিনগুলোর কথা স্মৃতিচারণ করেন। আরো সংগীত পরিবেশন করেন বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ও আলোচিত সংগীতশিল্পী সুমি আক্তার এবং মাটি শিল্পগোষ্ঠীর সংগীতশিল্পী নাজমুল আলম শান্তু, জিল্লুল শাহীন, শাহীন আলম, তাহমিনা আক্তার চাঁদ ও মোহন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক বজ্রশক্তির প্রকাশক ও সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ওরা সওমকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করেছে : হেযবুত তওহীদের এমাম

Avatar photo

Published

on

রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে বিশাল আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-আইডিইবি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মো. তসলিম উদ্দীন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম সওমের নিয়ম, উদ্দেশ্য, শিক্ষা এবং দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি, মুসলমানদের দুর্দশা এবং এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সওম মানে আত্মসংযম, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরত থাকা। রোযা তথা সওমের উদ্দেশ্য এই যে, মো’মেন ব্যক্তি সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন, নিজের আত্মাকে শক্তিশালী করবেন। তিনি অপচয় করবেন না, পশুর ন্যায় উদরপূর্তি করবেন না। তিনি হবেন নিয়ন্ত্রিত, আত্মত্যাগী। বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষের দুঃখ অনুভব করে তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। আল্লাহর হুকুম মানার ক্ষেত্রে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন অর্থাৎ তিনি হবেন তাকওয়াবান। তার এই চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে সামাজিক ও জাতীয় জীবনে। গড়ে উঠবে এমন এক সমাজ যেখানে সবাই একে অপরের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে উৎসাহী হবে, বিরাজ করবে পরস্পর সহমর্মিতা, সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব। প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি।

তিনি আরও বলেন, আজকের বাস্তবতা এই যে, বর্তমানে এই মৌলিক শিক্ষা হারিয়ে সওম বা রোযা যেন হয়ে গেছে কেবল না খেয়ে থাকা। দেখা যায়, রমজান আসলেই মুসলিমদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে ওঠে আকাশছোঁয়া। সংযমের মাস এলেই মুসলিমদের সংযমের সব বাঁধ যেন ভেঙে যায়। আজ রোযাকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানুষ বাজারে গিয়ে নিত্য পণ্যের দাম শুনে অসহায় হয়ে পড়ে। সবাই যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। ধর্মব্যবসাও জমজমাট হয়ে ওঠে এই মাসে। এ জাতীয় অপরাধ ঢাকা দেয়ার জন্য আত্মপ্রচারের আশায় কিছু দান-খয়রাত করতে দেখা যায় মাত্র। কিন্তু রোযা তথা সওমে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ অর্থাৎ তাকওয়া সৃষ্টি হয়না, প্রকৃত সিয়ামের সাধনা হয় না মন্তব্য করেন তিনি।

উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রোজার নির্দেশনাটা মূলত মো’মেনদের জন্য। তার মানে মো’মেনরা রোজা পালন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে- এই মো’মেন কারা? তারাই মো’মেন যারা আল্লাহ ও রাসুলের উপর ঈমান আনে, কোনো সন্দেহ পোষণ করে না এবং সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। এই মো’মেনের জন্যই হলে রোজা, নামাজ, হজ্ব সবকিছু। আমরা হেযবুত তওহীদ আমাদের জীবন ও সম্পদ আল্লার রাস্তায় কোরবান করে দিয়ে প্রকৃত মোমেন হবার চেষ্টা করছি বলেন তিনি।

এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তোলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তোলওয়াত করেন কারি মো. আসাদ। এরপর দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিন তার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, হেযবুত তওহীদের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা প্রমুখ।

এক পর্যায়ে হামদ নাত ও গজল পরিবেশন করেন মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নিয়মিত শিল্পী শাহীন আলম, রাফে আহমেদ, তাহমিনা আক্তার চাঁদ, তাহী ও ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ। তাদের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয় দর্শকরা।

দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তার আগমনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল।

নামাজ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বক্তব্য শেষে তিনি মানবজাতির শান্তি কামনা করে দোয়া করেন। মোনাজাত শেষে মাগরিবের আযান দিলে সবার মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। অতিথিরা সবাই মিলে একাকার হয়ে ইফতার করেন।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, মিরপুর শাখার সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইউনুস মিয়া, উত্তরা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিনসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

Continue Reading

Highlights

দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জাতীয় ঐক্যের ডাক হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ ২০২৪) বিকালে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন তেলিপাড়াস্থ সাগর সৈকত কনভেনশন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, রাজতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে বহু আগে। ফ্যাসিবাদ মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বহু ফ্যাসিস্ট আত্মহত্যা করেছে। সমাজতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্রও লাইফ সাপোর্টে আছে- মন্তব্য করেন তিনি।

হেযবুত তওহীদের এই নেতা বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য আমরা দেখেছি। প্রতি ৫ বছর পর পর মহা সংকটে পরতে হচ্ছে জাতিকে। একদল ক্ষমতায় গেলে পরের দিন থেকেই শুরু হয় তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা। সমানে চলে জ্বালাও পোড়াও। বাসে আগুন দিয়ে নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সাপের মত পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাবার লড়াইয়ে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের নামে নৃশংসতা মানুষ দেখেছে। এই সিস্টেম আর মানুষ দেখতে চায় না। মানুষের তৈরি সব সিস্টেমই তো আমরা অ্যাপ্লাই করলাম। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লার দেওয়া সিস্টেমে প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা আমাদের ব্যাপারে মাতব্বরি করে আসছে বরাবরই। তারা একে একে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তাদের শকুনি দৃষ্টি পড়েছে আমার প্রিয় জন্মভূমির উপর। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের কূট চাল চালছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, শকুন যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে কোনো সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। হেযবুত তওহীদ থাকতে তাদের এই দুরাশা কোনো দিন পূর্ণ হবে না। প্রয়োজনে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেব তবুও দেশকে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান হতে দিব না- বলেন এই নেতা।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় ও ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের আন্তর্জাতিক প্রচারণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের সমন্বয়কারী মো. নিজাম উদ্দিন, দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান, হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও গুলশান শাখার সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন রাব্বানী, ঢাকা বিভাগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস মিয়া ও মো. তসলিম উদ্দিন এবং হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান প্রধান, মহানগর সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Continue Reading

Highlights

রাজধানীতে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা

Avatar photo

Published

on

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচি-কাচার মেলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হৃদয়ে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ।

সংগঠনটির উপদেষ্টা শাহ মুহাম্মদ সেলিম রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘বাংলা ভাষা বিকৃত করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বেশ লক্ষণীয়। অফিস-আদালত, চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপনসহ প্রায় জায়গাতেই চলছে বিদেশি ভাষার ব্যবহার। বিদেশি ভাষার আগ্রাসনে খাঁটি বাংলা ভাষার চর্চা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে কিছু সুশীল ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা বেশি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন। যার প্রভাব পড়ে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে। তারাও মিশ্র ভাষায় কথা বলতে শেখে। বেসরকারি বেতারগুলোর উপস্থাপকরা তো বাংলা বলেন না বললেই চলে। পৃথিবীর প্রায় ২৮ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং সাহিত্যসম্ভারও বিপুল। অথচ নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি উৎসাহী ও মনোযোগী নয়। আরেকদিকে ইংলিশ মিডিয়ামের দৌরাত্বে অনেক ছেলেমেয়ে যদিও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে কিন্তু লিখতে পারে না। একটু শিক্ষিতরা বাংলার সাথে ইংলিশ শব্দ মিশ্র করে ককটেল বানিয়ে ব্যবহার করে গৌরব করে। অন্যদিকে একজন অশিক্ষিত কৃষক শ্রমিকের কথায় যদি আঞ্চলিকতা প্রকাশ পায় তাকে আমরা ক্ষেত বলে পরিহাস করতে ছাড়ি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু আমরা কি বাংলা ভাষাকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারছি? আমরা কি বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারি? আমরা কি বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধ করতে পেরেছি? ১৯৪৮ সালে করাচিতে নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়াসে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব করেছিল। আমরা কিন্তু তাদের অযৌক্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। হয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। কিন্তু এখন তরুণ প্রজন্মের বড় অংশই ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কোনো মহল থেকেই এর কোনো প্রতিবাদ উঠছে না -বলেন এই বক্তা।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহারের প্রতি অনেকের আগ্রহ কমছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে আমাদের শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভাষার প্রতি মমত্ব ও আগ্রহ নিয়ে উদাসীনতা মোটেও ভালো কিছু নয়। শিশু ও তরুণদের একাংশ বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। এর জন্য আমাদের বিদ্যমান পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি ভাষা শিক্ষা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু নিজের ভাষাকে অবহেলা করার পক্ষেও আমি নইÑ বলেন হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

তিনি বলেন, ‘বিমা-ব্যাংকে গেলে বাংলার ব্যবহার প্রায় অদৃশ্য। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইংরেজিতে প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা হয়; এমনকি কর্মরতদের নাম, পদবিও থাকে ইংরেজিতে। ব্রিটিশরা আমাদের মনে পরনির্ভরতা ও বিদেশি ভাষার প্রতি যে অনুরাগ তৈরি করে গেছে, সেটি বদলাতে হবে। বিদেশি শব্দ ও ভাবধারার প্রতি আমাদের দুর্বলতা দূর করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারিভাবে তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহারে সাফল্য দেখিয়েছে; তাহলে আমরা কেন পারব না?”

সবশেষে তিনি বলেন, মানবজাতি এক জাতি। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ইসলামের নিষিদ্ধ। সব ভাষাই আল্লাহর দেওয়া। প্রকৃতির বৈচিত্র্য যেমন স্বাভাবিক তেমনি ভাষার বৈচিত্র্যও স্বাভাবিক। ইসলাম ভূপ্রকৃতির কারণে জাতীয়তাবাদ এবং ভাষার কারণে বিভিন্নতার কারণে জাতীয়তাবাদ কোনটাকেই স্বীকার করে না। ইসলামের বিধানে সমস্ত মানুষ এক জাতি ভাষার কারণে কোনো জাতি অন্য জাতির উপরে শ্রেষ্ঠ হতে পারে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, লায়ন কেফায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির, অতিথি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও লায়ন সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপা আহমেদ, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে ধরে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধ সুশৃঙ্খল রূপ তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা তার বক্তব্যের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ আদালতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এসব দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশিত ভাষার গানে দেশের গানে মুখরিত হয় মিলনায়তন।

Continue Reading