দেশজুড়ে
বাগেরহাট শরণখোলায় বখাটে যুবকদের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
বাগেরহাট শরণখোলায় বখাটে যুবকদের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। চলছে বিভিন্ন স্থানে হয়রানি মূলক কর্মকান্ড। মেয়ে উত্যক্ত করন, মাদকাসক্ত, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ সব ধরনের অন্যায় তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী।
মাদক সেবনের টাকা গোছাতে পেতেছে অভিনব ফাঁদ। এলাকাবাসী এই প্রতিবেদককে জানান, উপজেলায় আছে বহুল পরিচিত ঐতিহ্যবাহী বলেশ্বর নদীর ভেড়িবাধ। যা এলাকার মানুষের কাছে একটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। অবসর সময়ে স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব, ও নিকট আত্মীয়দের সাথে নিয়ে নানা শ্রেনী পেশার মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। সম্প্রতি একাধিক মাদকসেবী সঙ্গবদ্ধ চক্র এই সামাজিক বিচরনকে বাধাগ্রস্থ করছে। অহেতুক প্রশ্ন করে তাদেরকে বিভ্রান্ত করছে।
বাংলা বাজার থেকে শাহীন হাওলাদার জানান, স্ত্রীকে নিয়ে রাজৈর বেড়িবাধের উপর ঘুড়তে এসেছি, হঠাৎ করে ৮-১০ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দলের সদস্যরা এসে তাদেরকে বিভিন্ন রকম হয়রানী মূলক প্রশ্ন করে। জবাবে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলে তারা বিয়ের কাবিন দেখতে চেয়ে ভয় ভিতি দেখায়। শাহীন কাবীন দেখাতে চাইলে তাকে লাঞ্চিত করে মোবাইল ফোন, টাকা, ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়।
এমন জঘন্য ঘটনার বর্ননা দেন ভুক্তভোগী রাজৈর গ্রামের রনি বয়াতী ও নুরুল হক ফরাজীর পূত্র খাইরুল ফরাজী।
নাম প্রকাশ না শর্তে একাধিক ভুক্তভোগীরা জানান, উপজেলার রায়েন্দা বাজার, পাঁচরাস্তা, নদীর তীর-বর্তী রাজৈর ভেড়িবাধ, বড়ইতলা বাধ, রাজাপুর, তাফালবাড়ী এলাকায় এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এলাকার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বখাটেদের একাধিক সঙ্গবদ্ধ চক্র সক্রিয় হয়ে বেঁচে নিয়েছে এই জগন্য পথটি। নেশাআসক্তরা মেয়েদের বাজে মন্তব্য, শ্লীলতাহানী, গতিপথ রোধ করছে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগছে এলাকাবাসী, কোথাও এর প্রতিকার পাচ্ছেনা। কোন ভাবেই এলাকায় মেয়ে-জামাই, আত্মীয় স্বজনের চলাফেরা নিরাপদ ও সম্মানজনক নয় বলেও জানান এলাকার সচেতন অভিবাবকরা।
সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে, এর মুল হোতা হিসেবে উপজেলার খাদা গ্রামের কথিত মহিলা মেম্বর সাগর আক্তারের ছেলে যুবদল নেতা সোহাগ ওরফে লাল ভাই।রায়েন্দা পাঁচ রাস্তায় সুন্দরবন ক্লিনিকের মধ্যে আপন ফার্মেসী নামে তার একটি ঔষধের দোকানও রয়েছে। যেখানে তিনি দেশী-বিদেশী যৌন উত্তেজক ঔষধ ও মাদক দ্রব্য বিক্রি সহ ঐ সকল মাদকসেবী চক্রকে মদদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোহাগ প্রভাবশালী হওয়ায় ঐ ক্লিনিকের নার্সদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ও ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাতে আসা যুবতী মেয়েদেরকে উত্যক্ত করেন বলে প্রত্যাক্ষ্যদর্শী ও ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এ ছাড়াও সোনাতলা গ্রামের সুলতান হাওলাদারের পূত্র ওহিদুল ও এমাদুল হক হাওলাদারের নাম বেরিয়ে এসেছে। এ ব্যাপারে কথা হয় শরণখোলা উপজেলা দূর্নিতী প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও বাগেরহাট সরকারী পিসি কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল আব্দুস সাত্তার এর সাথে, তিনি বলেন, ঘটনাগুল অনভিপ্রেয় এবং দূঃখ জনক। যারা এই সকল কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে সামাজিক ভাবে প্রতিহত করতে হবে। এলাকায় সুশৃঙ্খল পরিবেশ, সার্বিক নিরাপত্তা, মাদকমুক্ত জমাজ গড়ার জন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান খাঁন মতিয়ার রহমান জানান, সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। চরমভাবে সামাজিক অবক্ষয় শুরু হয়েছে। জানতে চাইলে শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।