Connect with us

দেশজুড়ে

লক্ষীপুরে পল্লী বিদ্যুতের ১০ খুঁটি তিন লাখ টাকা!

Published

on

রুবেল হোসেন,লক্ষীপুর: লক্ষীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ১০ টি বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনের বিনিময়ে ৪০-৫০ পরিবার থেকে ৩-৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এক প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। বিদ্যুতের নতুন খুঁটি লাগানো থেকে সংযোগ দেয়া পর্যন্ত এ চক্র গ্রামের অসহায় মানুষদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে একটি প্রতারক চক্র বিদ্যুৎ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সাধারণ মানুষ। এ চক্রের মূল হোতা ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামের বাসিন্দা জসিম (৪৫)। একই ইউনিয়নের চরভুতা ও চরমনসা গ্রামের তার সহযোগীরা বিদ্যুৎ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। দুই গ্রামে সরেজমিনে গেলে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। প্রতারক চক্রের চাহিদামত টাকা দিলেও সময়মতো বিদ্যুৎ না পেয়ে হতাশায় রয়েছে ওই দুই গ্রামের শতাধিক পরিবার। সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিনামূল্যে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও লাখ লাখ টাকা দিয়েও তা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতারক চক্রের রোষানলে পড়ে অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এদিকে জসিম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সাথে জড়িত না থাকলেও কোন বাধা ছাড়ায় বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে তাকে কার্যালয়ে এসে ফাইল নাড়া-ছাড়া করতে দেখা যায়।
চরভুতা গ্রামের মনির হোসেন, নাছির উদ্দিন, ফারুক, বকুল বেগম ও সজিবসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে তালিকা করার জন্য ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়। এভাবে মিটারের বোর্ডের জন্য ১০০, খুঁটির আনার শ্রমিকদের জন্য ২০০, মিটার ও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৪ হাজার টাকা করে প্রত্যেক গ্রাহকদের থেকে তোলা হয়। প্রত্যেক মিটার ও বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকা করে জসিমের সহযোগী আজাদ, রুহুল আমিন ও মামুন মাঝিকে দিয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। এছাড়া ১০টি বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনের জন্য প্রত্যেক ৪০-৫০ পরিবারের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন এ প্রতারক চক্র। অনেকের কাছ থেকে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা দাবি করলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে না বলে নিষেধ করে এ চক্র।
অভিযুক্ত জসিম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ঠিকাদার নয়। বিদ্যুতে খুঁটি লাগানো ঠিকাদারের কাজ। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য লাইন ওয়ারিংসহ ৪ হাজার টাকা করে গ্রাহকদের থেকে পারিশ্রমিক নেওয়া হয়। বাড়তি টাকা কিংবা প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নয়। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস জানান তিনি।
লক্ষীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির বলেন, জেলার যে কোন জায়গায় বিদ্যুতের লাইন নির্মাণের কাজ সরকারের অর্থায়নে হচ্ছে। কেউ যদি এখানে প্রতারণা করতে চায় কিংবা প্রতারণার আশ্রয় নেয় অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এ কর্মকর্তা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *