Connect with us

আন্তর্জাতিক

অাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই কোরিয়ার ঐতিহাসিক বৈঠক

Published

on

অবশেষে বহুল কাঙ্ক্ষিত ও ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই কোরিয়ার মধ্যে । অাজ শুক্রবার সকালে শুরু হয়েছে এই বৈঠক। এ বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন।

দুই কোরিয়ার মধ্যবর্তী বেসামরিকীকৃত এলাকা (ডিমিলিটারাইজড জোন) পানজুনজাম গ্রামের পিস হাউসে বৈঠকটি শুরু হয়েছে। চলবে রাত অবধি।

শীর্ষ বৈঠকের আগে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সীমানায় কিমকে অভ্যর্থনা জানান মুন। কিমের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আছে তার বোন কিম ইয়ো জং।

কিম জং উনকে শুক্রবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন শুভেচ্ছা জানান।

এর মধ্যদিয়ে কোরীয় যুদ্ধের ৬৫ বছর পর সীমান্তের বাইরে পা রাখলেন উত্তর কোরিয়ার কোনো নেতা।

১৯৫৩ সালে শেষ হওয়া কোরীয় যুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো উত্তর কোরীয় নেতা দক্ষিণ কোরিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করলেন। ২০০০ ও ২০০৭ সালে পিয়ংইয়ংয়ে দুই কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকের পর এ ধরনের তৃতীয় সাক্ষাৎ এটি। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি এ বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন পর্যবেক্ষকেরা।

পিস হাউস বলে পরিচিত ভবনে কিম ও মুন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠকে বসেছেন। এর আগে সাড়ে ৯টায় কিম সীমান্ত অতিক্রম করেন।

বৃহস্পতিবার ইম জং সিয়ক সাংবাদিকদের জানান, সম্মেলনে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও স্থায়ী শান্তির বিষয় প্রাধান্য পাবে।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, উত্তর কোরিয়া তাদের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কর্মকর্তাদের পাঠাবে, আমরাও তাই করব। কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও শান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

উত্তর কোরীয় নেতার সঙ্গে আছেন ৯ জন কর্মকর্তা। এদের মধ্যে আছেন তার বোন কিম ইয়ো জং।
চলতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকে উত্তরের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইয়ো জং। এ ছাড়া আছেন রাষ্ট্রীয় প্রধান কিম ইয়ং-ন্যাম এবং সামরিক কর্মকর্তাসহ কয়েকজন কূটনীতিক।

অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রয়েছে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্র ও একত্রীকরণমন্ত্রী (ইউনিফিকেশন)।

ইম জং সিয়ক জানান, আলোচনার প্রথম দফা শেষে উভয় নেতা আলাদাভাবে দুপুরের খাবার খাবেন। এ সময় উত্তর কোরীয় নেতা তার প্রতিনিধি দলসহ নিজ দেশের সীমান্তে ফিরে যাবেন।

বৈকালিক পর্বে কিম ও মুন ‘শান্তি ও প্রগতি’র প্রতীক হিসেবে একটি পাইন গাছের চারা রোপণ করবেন। থাকবে দুই কোরিয়ার মাটি ও পানি। এরপর পরবর্তী সেশনের আলোচনার আগ পর্যন্ত দুই নেতা একত্রে পানজুনজাম গ্রামে হাঁটবেন। এরপর দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হবে এবং একটি চুক্তি ও যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শেষ হবে।

এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দেয়া এক নৈশভোজে অংশ নেবেন কিম। নৈশভোজে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে কিম-মুনকে পরিবেশন করা হবে আমের তৈরি বিশেষ খাবার ম্যাঙ্গো মৌস। নৈশভোজ শেষে কিমের ফিরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত দুই নেতা একত্রে ‘স্প্রিং অব ওয়ান’ (এক বসন্ত) শীর্ষক একটি ভিডিও দেখবেন।

একের পর এক পরমাণু বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে দক্ষিণের সঙ্গে সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কিম ঘোষণা দেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে খোলাখোলি আলোচনায় রাজি আছেন তিনি। এরপর থেকেই দুই কোরিয়ার সম্পর্কের বরফ গলতে থাকে।

এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে সিউলে অনুষ্ঠিত শীতকালীন অলিম্পিকে দুই কোরিয়া এক পতাকার অধীনে (এক হয়ে) অংশ নেয়। শীতকালীন এই অলিম্পিকেই কিমের বোন কিম ইয়ো জং কূটনীতিক সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নেন। এর ফলে মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি প্রতিনিধি দল পিয়ংইয়ং সফর করে।

এ সময় কিমের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এটিই ছিল কিমের প্রথম বৈঠক।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *