Connect with us

ঢাকা

আশুলিয়ায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শিল্প শ্রমিক ও পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আহত ২০

Published

on

হেলাল শেখ ঢাকা: ঢাকার সাভার আশুলিয়ায় শিল্প কারখানার শ্রমিক কর্মচারিদের ন্যুনতম মজুরী বেতন ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে প্রায় ২০টি শিল্প কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি করে আসছে। পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় প্রায় ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, সিমা (২৩), রজিনা (২৫), হাসান (৩০), রফিক (৩৩), ময়না (২২), ইসরাত (২৫), নয়ন (২৭) সহ প্রায় ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

আজ সোমবার সকাল ৮টার পর থেকে বিভিন্ন কারখানার হাজার হাজার শ্রমিক কর্মবিরতির অংশ হিসেবে কাজ বন্ধ করে রাখলে শিল্প কারখানার মালিকরা কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন বলে অনেকেই জানান। কয়েক দিনের এ ঘটনায় একযোগে কারখানাগুলো ছুটি দেয়া হলে টঙ্গী- আশুলিয়া-ইপিজেট সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসলে এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে পুলিশ লাটিচার্জ করায় শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যায়। শ্রমিকরা জানায়, গত কয়েক দিনে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের লাঠির আঘাতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, কর্মবিরতি অংশ হিসেবে রবিবার ও সোমবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে সাভার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল, এ ঘটনায় সকালেই আশুলিয়ার জামগড়ার ছয় তালার এম ডিজাইন,এনভয়, উইনডি, জামগড়ার হিয়ন এ্যাপারেলস দ্যা ডিজাইন এন্ড জিন্স, সেতারা, সেট ফ্যাশন, দ্যা আইডিয়াস ফ্যাশন, লিন্ডা ও ডেকো এবং দি রোজসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০টি শিল্প কারখানায় প্রথমে রবিবার এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পর আবার সোমবার একদিনের ছুটি দেয়া হয়েছে বলে কারখানার কর্মকর্তারা জানান। মালিকরা শ্রমিকদের দাবি না মানার কারণে শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমে আসলেও পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন থাকায় শ্রমিকরা কোনো প্রকার ভাংচুর চালাতে পারেনি বলে পুলিশ জানায়।

উক্ত ব্যাপারে আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সবকিছুরই মূল্য বৃদ্ধি হযেছে কিন্তু কারখানার মালিকরা আমাদের বেতন বৃদ্ধি করছে না। শ্রমিকদের দাবি সরকার ঘোষিত যে বেতন দেয়ার কথা, তা বর্তমান মজুরি তারা সঠিকভাবে পাচ্ছেন না। শ্রমিকরা জানায়, গত কয়েক দিন ধরে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসলেও পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

বিশেষ করে শিল্প কারখানার আন্দোলন ঠেকাতে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান উক্ত ব্যাপারে সরকারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চেয়েছেন। আর শ্রমিকদের এই আন্দোলনের পেছনে কারো কোনো উস্কানি আছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। বিশেষ করে, ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করে কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও শ্রম মন্ত্রীকে শ্রমিকদের দাবির ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি বাস্তবায়ন করেছেন। আশা করি, এবারও প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করবেন। এ ছাড়াও তিনি বলেন, স্থানীয় বাড়িওয়ালাদের সাথেও ইতিমধ্যে মতবিনিময় করা হয়েছে। যাতে আগামী তিন বছরের আগে কোনভাবেই বাড়ি ভাড়া বাড়ানো না হয়। এতে বাড়িওয়ালারাও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।

উল্লেখ্য গত কয়েক দিন ধরে আশুলিয়ার বাইপাইল, জামগড়া ও ছয়তলা এবং কাঁঠাল তলা এলাকাসহ বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতন-ভাতা বৃদ্ধি দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে আসছে। আন্দোলনরত এসব কারখানায় প্রায় ৫০ হাজারেরও অধিক শ্রমিক কাজ করেন, এই শ্রমিকদের সাথে নারী শ্রমিকই ৮০% বলে শ্রমিকরা জানায়। আর যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শিল্প কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। উক্ত বিষয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ ১ এর পরিচালক জনাব মোস্তাফিজার রহমান জানান, কয়েকদিন ধরে কয়েকটি নির্দিষ্ট কারখানায় কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। এ কর্মবিরতি যেন সহিংসতায় রূপ না নেয় সেজন্য সর্তক রয়েছি। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *