জলঢাকা(নীলফামারী)প্রতিনিধি: নীলফামারীর জলঢাকায় সত্তোরদ্ধ এক বৃদ্ধকে ১০ মাস থেকে নিজ বাড়ীতে গৃহবন্দী করে রেখেছে তার পরিবার। গৃহবন্দী ওই বৃদ্ধের নাম মমিনুর রহমান (৭১)। তার বাড়ী নীলফামারীর জলঢাকা ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামে। গ্রামে সে মমিনুর বাউরা (পাগল) নামে পরিচিত। ১০ মাস বন্দী অবস্থায় তার কোন চিকিৎসা করা হয়নি। বুধবার সন্ধ্যায় ইউএনও রাশেদুল হক প্রধানের নেতৃত্বে গেটের তালা ভেঙ্গে তাকে মুক্ত করে দেওয়া হয়। এসময় ইউএনওর সাথে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহির ইমাম উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের কার্তিক মাস থেকে তাকে (মমিনুর) পাগল আখ্যা দিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি ঘরে তালাবন্দী অবস্থায় রাখে তার ভাই আনিছুর রহমান। জেলখানার মত ছোট একটি ঘরে এ ১০ মাস আলো-বাতাস থেকে বঞ্চিত ছিল সে। শুধুমাত্র পিছনের দেয়ালের ছোট খোলা জানালা দিয়ে তাকে খাবার সরবরাহ করত। সরেজমিনে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে মমিনুরকে মুক্ত করে তার পরিবার। এসময় মমিনুরকে উদ্দেশ্য করে কয়েকজন কটাক্ষ করলে মমিনুর (পাগলা) ক্ষিপ্ত হয়। এদিকে মমিনুরের দুহাতে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তার ভাই আনিছুরের ছেলে মাহাতাব উদ্দিন বলেন, জ্যাঠা দীর্ঘদিন থেকে মানসিক রোগী। বহুদিন আগে তাকে চিকিৎসা করা হয়েছিল। তবে এ ১০ মাস কোন চিকিৎসা আমরা দেইনি আমরা। আব্দুল হালিম নামে একজন জানায়, মমিনুর (পাগলা) বহু বিবাহ করেছিল। তবে তার কোন স্ত্রী-সন্তান নাই। তিনি আরও জানান, মমিনুরের বেশ কিছু সম্পত্তি এখনও রয়েছে। যা দেখভাল করেন তার ভাইয়েরা। এ বিষয়ে ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওমর ফারুক ভুট্টু বলেন, তাকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা অমানবিক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. রাশেদুল হক প্রধান বলেন ১০ মাস আটকিয়ে রেখে তারা অমানবিক কাজ করেছে। তিনি আরও জানান, ওই বৃদ্ধাকে আটকিয়ে রাখার পিছনে জমি-জমার বিষয় আছে কিনা তা তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশ দিয়েছি। এদিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহির ইমাম বলেন, ইউএনও সারের নির্দেশক্রমে বিষয়টি তদন্ত করছি। তবে বৃদ্ধা এখন মুক্ত আছে।