জাতীয়
ঋতুরাজের সূচনা, রঙ্গীন সাজে প্রাণের উষ্ণতা
শীতের জড়তা ভেঙে কৃষ্ণচূড়া-পলাশের রাঙা হাসিতে চরাচরে ফিরে এলো প্রাণের উষ্ণতা। বাতাসের ফিসফাসে বাজে রবি-গানের সুর- আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো/আজি ভুলিয়ো আপন পর ভুলিয়ো। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, গত কাল ছিল ফালগুনের প্রথম দিন, নিসর্গে ঋতুরাজের রঙিন শাসন শুরু।
আরেক বৈশাখে নতুন বছর শুরুর আগেই পুরনো পাতা ঝরে নবপত্রপল্লবে জেগে উঠবে বৃক্ষরাজি; ফুলে ফুলে সাজাবে উৎসব। নবযৌবনের ঋতুকে বরণ করে নিতে ফাগুনের প্রথম প্রভাতেই শুরু হয়ে গেছে সে উৎসবের। রাজধানীর শাহবাগ, চারুকলা, টিএসসি, পাবলিক লাইব্রেরি আর উদ্যানে উদ্যানে নর-নারীর বাসন্তী সাজ মনে করিয়ে দেয়- ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক, আজ বসন্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় সকাল ৭টায় শুরু হয় বসন্তবরণের মূল অনুষ্ঠান। বর্ণিলসাজে নানা বয়সী মানুষের অংশগ্রহণে নাচে-গানে বরণ করে নেওয়া হয় ফাগুনকে। সকাল সাড়ে ৯টায় চারুকলা থেকে বেরোয় রঙিন শোভাযাত্রা। একইস্থানে বিকেলে শুরু হয় বসন্তবরণ উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। এছাড়া উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের উন্মুক্ত মঞ্চে, পুরান ঢাকার বাহাদুরশাহ পার্ক ও লক্ষ্মীবাজার এবং ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে হয়েছে বাসন্তি আয়োজন। ফাগুনের প্রথম দিনে বসন্তের রঙ ছিলো বইমেলাতেও। ১৯৫২ সালে এমনই এক বসন্তের দিনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরো অনেক ভাষা শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাঙালির রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা আদায় হয়েছিল। তারই স্মরণে প্রতি বছর এই ফেব্র“য়ারিতেই বাংলা একাডেমিতে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও) বসে বাঙালির মননশীলতার উৎসব- অমর একুশে গ্রন্থমেলা।