Connect with us

চাঁদপুর

কচুয়ায় স্বামী কর্তৃক ১১টি হয়রানি মূলক মামলায় দিশেহারা স্ত্রী

Published

on

aslamকচুয়া(চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের কন্যা কামরুন্নাহার (৩৮) স্বামী কর্তৃক ১১টি হয়রানি মূলক মামলায় আর্থিক ও মানসিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বর্তমানে দিশেহারা। কামরুন্নাহারও স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলা করেছে। তার স্বামী কুমিল্লা কোতয়ালী থানাধীন নুরপুর দোতলা মজিদ বাড়ির মৃত আলী আকবরের ছেলে আসলাম মিয়া। আসলাম ওই ১১টি মামলারই সে নিজে বাদী না হয়ে তারই নিয়োগকৃত বিভিন্ন নারী-পুরুষকে বাদী বানিয়ে কামরুন্নাহারের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চল-চাতরী পনায় এসব হয়রানী মূলক মামলা কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় এবং কোর্টে দায়ের করেছে। এসব মামলা থেকে রেহাই পাবার জন্য নিরুপায় হয়ে কামরুন্নাহারের পরিবারবর্গ আসলামের সাথে একটি আপোষ মিমাংসা হয়। আপোষ মিমাংসা গত ৪ঠা জানুয়ারী ২০১৬ইং তারিখে ৩’শ টাকার ষ্ট্যাম্পে লিপিবদ্ধ হয় যে উভয় পক্ষ মামলা তুলে নিয়ে প্রত্যেকে স্ব স্ব ভাবে জীবন যাপন করবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কামরুন্নাহার জানান আপোষ মিমাংসার ষ্ট্যাম্পে উল্লেখ না থাকলেও শালীশি দাতাদের কথা মতে মামলা গুলো তোলার জন্য আসলামকে আমরা আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছি। অতচ আসলাম ৬টি মামলা তুললেও আমার দায়ের করা মামলায় সে কোর্টে হাজিরা না দেয়ায় তা প্রত্যাহার হয়নি এবং তার কারসাজির মামলার মধ্যে আমার ছোট বোন জেবুন্নাহার বকুলের স্বামী কচুয়া উপজেলার গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের গোহট গ্রামের মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের পুত্র মামুনের বিরুদ্ধে একটি সাজানো নাটকীয় নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা না তুলে আমাদের বিরুদ্ধে এ আপোষ মিমাংসার পরও নতুন করে আবার ৩টি মামলা দায়ের করেছে। আচার্য জনক হলেও সত্য এ ৩টি মামলার মধ্যে পূর্বের মত আসলাম নাটকীয় ভাবে তার এলাকার ফজলু মিয়া (কসাই) নামে এক ব্যক্তিকে আমার স্বামী বানিয়ে বাদী করে আমার ভাই সাইফুল ইসলাম শেকুল ও বড় বোন সেলিনা কে অভিযুক্ত করে কুমিল্লা বিজ্ঞ ম্যাজেষ্ট্রেট – সি আর পিসি আদালতে মামলা দায়ের করেন। যাহার নং পিআর ৪০৫/১৬ ।
বকুল জানান আসলাম আমার বোনের জীবন নষ্ট সহ তার কারসাজীর মামলার মধ্যে তারই এলাকার পোষ্টপোষক নাছিমা আক্তার কে বাদী করে একই ভাবে আমার স্বামীর সাথে তার বিবাহ বন্ধনের ভূয়া নিকাহনামা সাজিয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একের পর এক হয়রানী মূলক করে আসছে। যাহার নং ২০ তারিখ ০৭/১২/২০১৫ইং। আসলামের বিভিন্ন লোক দিয়ে প্রতারনার আরেকটি মামলায় আমার স্বামী মামুন বিনা দোষে ১৮দিন জেল খেটেছে। আমি ৪/৫ টি সন্তান নিয়ে বহু কষ্টে দিনাতিপাতা করছি। তার এসব হয়রানিতে আমার সংসারেও অশান্তি বিরাজ করছে। বকুল আরো জানান, আসলাম একই ভাবে কুমিল্লা কোতয়ালী থানায় হাজেরা বেগম এক মহিলা কে বাদী করে আমার ভাই সাইফুল ইসলাম কে স্বামীর অজুহাতে আরেকটি ভূয়া হয়রানি মূলক মামলা করেছিল। যাহার নং ছিল ৭৭ তারিখ ২১/০৮/২০১৫ইং। এই মামলাটি মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় এসআই বাদল মিঞা ১৫/০২/২০১৬ইং তারিখে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। আসলাম নতুন করে যে ৩টি মামলার ষড়যন্ত্র করেছে, তার মধ্যে আমাকেও একটি মামলায় জড়িয়ে বানোয়াটি ভাবে ষ্ট্যাম্পে উল্লেখ করেছে যে, আমি নাকি বিদেশে লোক পাঠানোর নামে মোটা অংকের অর্থ নিয়েছি। যাহা সম্পূর্ন কাল্পনিক ও অবাস্তব। আমরা তার এহেন কান্ডকীর্তি থেকে বাঁচতে চাই।
কামরুন্নাহারের বড় বোন সেলিনা জানান আসলামের এসব কান্ডকীর্তি আমার বোন পরিবার সহ সকলে নিঃশ্ব হয়ে পড়েছি। আসলাম একজন মারাত্তক অপরাধি। সে প্রতিদিন মোবাইল ফোনে আমাদের কে হুমকি দিচ্ছে যে, কামরুন্নাহারের মামলা তুলে না নিলে আমাদের বিরুদ্ধে আরো মামলা করা সহ হত্যা করবে। আপনাদের সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে আমরা এর ন্যায় বিচার চাই। আসলাম আমার বোনের দেয়া মামলার একজন গ্রেফতারী পরয়ানা ভূক্ত আসামি। যাহার স্মারক নং ৯৮৪ তারিখ ১৭/০৫/২০১৬ইং এবং নারি ও শিশু ১৯১/১৬। এ গ্রেফতারি পরয়ানার বিষয়ে সোমবার ৮ই আগষ্ট ২০১৬ইং তারিখে সরজমিন এ প্রতিনিধি কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গেলে সূত্র শাখার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার মফিজুল ইসলাম জানান, পরয়ানাটি আমাদের কাছে আসলে ১৪/০৬/২০১৬ইং তারিখে কুমিল্লা সদর কোর্ট পুলিশ পরির্দশক কার্যালয়ের মুন্সী জসিম উদ্দিনের নিকট জমা দেয়া হয়েছে। যাহার নং ড/১৯৪৮। এ দিন পরক্ষনে কোটে গিয়ে মুন্সী জসিম উদ্দিনের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি তল্লাশি করে পরয়ানা পত্রটি বের করে জানান, এখনও তা থানায় জমা দেয়া হয়নি এবং তাৎক্ষনিক রেজিষ্ট্রি খাতায় ০৮/০৮/২০১৬ইং তারিখ উল্লেখ করে প্রসেসিং ২৭৬/১৬ নাম্বর ক্রমে দিয়ে কুমিল্লা সদর মডেল থানার ১৪৫৪ কনেস্টেবল আমির হোসেনের নিকট জমা দেয়। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের মাধ্যমে কঠিন শাস্তির দাবি জানান।
কামরুন্নাহারের সংক্ষিপ্ত দাম্পত্য জীবন নিয়ে জানান এবং তার দায়ের করা মামলায় প্রকাশ থাকে যে, ২০০০ইং সাল থেকে কামরুন্নাহার কুমিল্লা সদর উপজেলাধীন আরকো কোম্পানীতে চাকুরী করা-কালীন সময়ে ওই আসলাম মিয়ার সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে আসলাম বিভিন্ন প্রলোবনে ১২ই ডিসেম্বর ২০০৪ ইং সালে ৩ লক্ষ টাকা দেন মোহর ধার্য্যে কামরুন্নাহার কে ২য় বিবাহ করেন। বিবাহের পর কামরুন্নাহার কে পৃথক জমি কিনে ঘর করে দেওয়ার জন্য তার উপার্জিত ৫ লক্ষ টাকা স্বামী আসলাম হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও আসলাম স্ত্রী কামরুন্নাহারের ভাই সাইফুল ইসলামের নিকট থেকে দার হিসেবে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। এত টাকা নেয়ার পরও কামরুন্নাহারকে ঘর দরজাতো করে দেয়ার দূরের কথা উল্টো আরও ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করলে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। স্বামীর বহু জ্বালা যন্ত্রনার নির্যাতনের মধ্যে প্রায় ১০/১২ বছর ঘর সংসার করে। তাদের দাম্পত্য জীবনে আরমান নামে ৮ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এক পর্যায়ে স্বামীর জ্বালা যন্ত্রনা সইতে না পেরে কামরুন্নাহার পিত্রালয়ে চলে আসলে বিগত ১৬ জুন ২০১৫ইং তারিখে আসলাম শুশুর বাড়িতে এসে আবারও ওই ২ লক্ষ টাকা যৌতুক চাইলে অপারগতা প্রকাশ করলে, এদিন তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চরম বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে আসলাম কামরুন্নাহার কে এলোপাতাড়ি মারধর করে পুত্র আরমান কে নিয়ে যায়। এ নিয়ে কামরুন্নাহার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল চাঁদপুর আদালতে মামলা করে। যাহার দ: নং ২৮৯/১৫ ও জিআর ১৩৭/১৫ইং । কামরুন্নাহার আরো জানান, বিয়ের পর থেকে নিকাহনামা পত্র আসলাম গুপছিয়ে রাখে। আমি বহু বার চাইলেও তা দেয়নি। এমনকি তার ঘর সংসার করা অবস্থায় আমার ভোটার আইডি কার্ড ইসু হয় এবং তাও নেয়ার জন্য বর্তমানে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন হুমকি ধুমকি দিচ্ছে। আসলাম এত দুষ্ট প্রকৃতির লোক যে, তার ভয় আতংকে আমরা কুমিল্লা গিয়ে মামলা গুলো পরিচালনা করতে হিমশিম খেয়ে দিশে হারা হয়ে পড়েছি। সে আমাদের বিরুদ্ধে যত গুলো মামলা করেছে নিজে বাদী না হয়ে তারই পোষ্ট পোষকৃত লোকজন দিয়ে এসব হয়রানি মূলক মামলা দায়ের করে। কামরুন্নাহারের পরিবারের সদস্যগন দেশের সরকার প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কতৃ পক্ষের নিকট এ সব হয়রানী মূলক মামলা থেকে অব্যাহতির প্রার্থনা জানিয়ে আসলাম এবং তার সহযোগী উল্লেখিত মামলা গুলোর বাদিদের বিরুদ্বে আইনগত কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যপারে আসলাম মিয়া জানান, কামরুন্নাহার আমার স্ত্রী নন। সে আমার বাড়ি এলাকায় প্রায় বিশ বছর ভাড়া ছিল এবং বকুল সহ তার পরিবারের লোকজন এখানে আসা যাওয়ার মধ্যে বসবাস করত । এ বসবাসের সুবাধে কুমিল্লার দৌলতপুর এলাকার কয়েকজন মানুষকে বিদেশে পাঠাবে বলে বুকুল সেলিনা পরিবারের তার মোটা অংকের অর্থ নেয়। এই অর্থ নেওয়ার ঘঠনায় বুলের স্বমী মামুন একটি মামলায় জেলখাটার পর এ মামলার বাদীর অর্থ পরিশোদ করলে তা থেকে অব্যাহতি পেয়েচিল। তারা বিভিন্ন লোক থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা নেওয়ার পর কচুয়ায় আমি মধ্যস্ত থেকে স্তানীয় আরও লোকজন সহ একটি বৈঠকে ১৫ লক্ষ টাকা দেয়ার মিমাংসার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে ছিল। আমকে মামলা তুলে নেয়ার আপস মিমাংসার নামে কোন অর্থ দেয়নি। আমি তাদের বিরুদ্বে কোন মানুষকে বাদী বানিয়ে মামলা করিনি। কামরুন্নাহার আমাকে স্বামী হিসাবে নির্যাতনের চলমান যে, মামলাটি রয়েছে তা মিথ্যা বানোয়াট। আসলাম আরও জানান, কচুয়ার ওই বৈঠকে কামরুন্নাহার আমাকে স্বামীর দাবিতে কোন কাবিননামা দেখাতে পারেনি। এ দিকে মামুনের বিরুদ্বে নাছিমা আক্তর স্বামীর দাবিতে যে, মামলাটি করেছিল, যা চলমান রয়েছে। এ মামলার আর্জিতে নাছিমার স্বাক্ষরের নিছে আসলম মিয়ার মোবাইন নাম্বার কেন দেওয়াহল জানতে চাইলে আসলাম জানান আমাকে মামলার স্বাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে, তাই আমার নাম্বারটি উল্লেখ করেছে।

ছবি ঃ কামরুন্নাহারের স্বামী আসলাম
মফিজুল ইসলাম বাবুল, কচুয়া, ।
০১৮১৭৪৫৩৪১৯।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *