Connect with us

ফিচার

কাউনিয়ায় দারিদ্রতার যুদ্ধে জয়ী মেধাবী প্রতিবন্ধী মশিউর; স্বপ্ন পুরনে সহযোগীতার আবেদন

Published

on

মিজান,কাউনিয়া প্রতিনিধি: রংপুরের কাউনিয়ায় অদম্য প্রতিভা নিয়ে দারিদ্র্যতাকে হটিয়ে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাউনিয়া কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরিক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিও-৫ নিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে উত্তীর্ন হয়ে এলাকাবাসীকে অবাক করে। গরীব ঘরে যেন আলোর ঝলক। আঞ্চলিক ভাষায়, গোবরের ভিড়ায় পদ্মফুল। দারিদ্র্য কৃষকের সন্তান যার পরিবারে অভাব-অনটন নিত্য সঙ্গী। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটেনা ঠিকমত। তবুও থামাতে পারেনি তাকে। প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্র্যতার সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে অবাক করেছে সবাইকে। বিগত পিএসসি,জিএসসি,এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিও-৫ এবং পরে মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে হাসি ফুটিয়েছে দূঃখী মা-বাবার মুখে। শিক্ষা জীবনে এই সাফল্য তার দু’চোখে এখন শুধু এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। তার চোখে মুখে এখন বিষণ্ণতা ও হতাশার প্রতিচ্ছবি। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পুরন হবে কি?

কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের রাজীব গ্রামের দারিদ্র কৃষক আবুল কালাম এবং মঞ্জুয়ারা বেগম’র ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী মশিউর রহমান। তিন ভাই বোনের মধ্যে মশিউর বড় তার ছোট সুমিসহ এক সাথে লেখাপড়া করেছে আর সব ছোট বোন স্থানীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির ছাত্রী। মেধার প্রমান স্বরুপ সে প্রাথমিক ও জিএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি অর্জন করে। টেপামধুপুর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিও-৫ পেয়ে কাউনিয়া কলেজে একাদশ শ্রেনীতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে এইচএসসিতে জিপিও-৫ পায়। এই পাওয়ার সাফল্য আসে এলাকাবাসীর সহযোগীতায়। প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্র্যতাকে পিছনে ফেলে তার লক্ষ্য পুরনে লেখাপড়া চালিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ হয়।

মশিউরের মা বলেন, নিজের সম্পত্তি বলতে সামান্য আবাদী জমিসহ বাড়ী ভিটা টুকুই সম্বল। সারাদিন জমিতে কাজ করে যে ক’টা টাকা পাওয়া যায় তা দিয়ে চলে সংসার। এই আয়ে তিন ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া করানো খুব কষ্টকর। মশিউর জন্মগত ভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও ছোট বেলা থেকে কঠোর পরিশ্রম করে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, এরপর কি হবে? ডাক্তারি পড়তে অনেক টাকা লাগে কিন্তু তার যে ইচ্ছা এই অভাবী সংসারে স্বামীর সামান্য আয় দিয়ে যেখানে জীবিকা চালানো কঠিন সেখানে ডাক্তারি পড়াবো কি ভাবে। সেই সাথে তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগীতার আবেদন জানান।

মশিউরের বাবা বলেন, মশিউর বাড়ীতে সাংসারিক কাজকর্ম শেষে মনোযোগী হতো লেখাপড়ায়। আল্লাহ তার মনের আশা পুরন করেছে। তার স্বপ্ন ছিল অন্যান্য পরীক্ষা গুলোর মত ডাক্তার হওয়ার। আল্লাহ আমার ছেলের দিকে তাকিয়েছে।

মশিউর রহমান জানান, ছোট বেলা থেকে তার ইচ্ছা উচ্চ শিক্ষা শেষ করে ডাক্তার হয়ে সমাজের গরীব অসহায় মানুষদের সেবা করবো। কিন্তু আমার গরীব বাবার সামান্য আয়ে সব ভাই-বোনদের লেখাপড়ার খরচ চালানো কি ভাবে সম্ভব। তাই সমাজের বিত্তবানরা যদি দোয়া ও সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়তো আমার স্বপ্ন পুরন হবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *