দেশজুড়ে
নির্বাচনে প্রতিপক্ষ ভেবে গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে মারধর
স্থানীয় ও একাধিক সূত্র জানা গেছে, নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর প্রতিদিনের মত আজ সোমবার রাতে কাষ্টগড় কেন্দ্রের কাছে সাদিপুর এলাকায় একটি সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এনায়েত হোসেন। ওই এলাকার পরিস্থিতি দেখতে একটি সাদা প্রাইভেটকার নিয়ে রাস্তার পাশে অপেক্ষা করছিল গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফিরুজুল ইসলাম চৌধুরী। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই নির্বাচনী সভায় নেতৃত্বদানকারী কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদারসহ দলীয় লোকজন তাদের সামনে গিয়ে তাদের প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজের লোকজন বলে চ্যালেঞ্জ করেন। প্রাথমিকভাবে তারা তাদের পরিচয় দিতে চান নি। এ সময় সোহাগ তালুকদার ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডেল এনএসআই’র সদস্যের পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে নির্বাচনে ভোট কিনতে মশিউর রহমান সবুজের সমর্থকরা এলাকায় এসেছেন বলে পুলিশে খবর দেয়।খবর পেয়ে কালকিনি থানা পুলিশ এনএসআই’র সদস্যদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে ক্ষমা চাওয়ার জন্য থানায় ছুটে যান আওয়ামী লীগের ওই প্রভাবশালী নেতা। এ নিয়ে থানায় মীমাংসার জন্য চেস্টাও করছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এদিকে এই ঘটনায় এনএসআই’র পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার ১৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ২টি ভোটকেন্দ্রে আগের রাতে সোয়া ১টার দিকে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে রাখে দুস্কৃতকারীরা। নির্বাচনে কাষ্টগড় কেন্দ্রে ৮০১টি ব্যালটে ও জোনারনন্দি কেন্দ্রে ৫০৩টি সিল মারা হয়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটে। প্রভাবশালীর হুমকির মুখে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার পালিয়ে এলাকা ছেড়ে যায় এবং এই ঘটনা মোবাইল ফোনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও কালকিনি পৌর নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা মো আলাউদ্দীনকে জানালে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেন।
এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) মাদারীপুরের কর্মকর্তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে ছিলেন। এখনও স্থগিত ওই দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণের দিন-তারিখ নির্ধারণ না হলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়মিতই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। অপরদিকে একাধিকবার হামলা করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার কোন সুযোগই পায়নি। এরই মধ্যে নির্বাচনের প্রার্থী ও সমর্থক কর্তৃক গোয়েন্দা সংস্থার উপর হামলা হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে জেলার সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।