Connect with us

দেশজুড়ে

জোয়ার বাড়লেই বাড়ে আতঙ্ক

Published

on

Zianagar news 23-6 Photoকেফায়েত উল্ল্যাহ, জিয়ানগর(পিরোজপুর)প্রতিনিধি: কঁচা ও বলেশ্বর নামের দুই নদ ও নদী তিন দিক ঘিরে রয়েছে জিয়ানগর উপজেলাকে। ফলে এখানকার অধিকাংশ মানুষের নদী কেন্দ্রীক বসবাস। নানান প্রতিকুল পরিবেশে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নিলেও বলেশ্বর ও কঁচার তীরবর্তী মানুষ গুলোর আতঙ্ক যেন আর পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই। কারন ওই একটাই। বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে আছে সেই কবে থেকে। আর তাই জোয়ার বাড়লেই ভাঙ্গা বেড়ি বাঁধ থেকে পানি ঢুকে যাচ্ছে তাদের তাদের বসতি এলাকায়।
ফলে ভোগান্তির আর শেষ থাকে না নদী পাড়ের মানুষ গুলোর। তার মধ্যে আবার যদি শোনা যায় সতর্ক সংকেত। তাহলে তো আর কথাই থাকে না। পিলে চমকে ওঠে এই জনপদের বসতিদের। জোয়ারের পানি বাড়ার আগেই বাড়ের তাদের ছোটাছুটি। বিশেষ করে গৃহবধুদের নাস্তানাবুদ হতে হয় প্রতিনিয়ত। রান্নার জন্য ঘরের বাহিরে যে চুলা পাতা রয়েছে তা নিমজ্জিত হচ্ছে জোয়ারের পানি তলে। তাই ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে রান্না করতে বাধ্য হন এই রমনীরা। আবার শিশুদের দিকেও রাখতে হয় বাড়তি খেয়াল। কেননা বাড়ির চারিদিকে বয়ে বেড়ায় অথৈ পানি।
এ বিষয়ে বালিপাড়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের নার্গিস বেগম (৩২) জানান, ‘জোয়ারের পানি বাড়লেই রান্না বন্ধ রাখতে হয়। চুলার মধ্যে পানি চলে আসে। ছোট বাচ্চাদের নিয়েও থাকতে হয় আতঙ্কে।’ অন্য দিকে চলা ফেরার রাস্তা ঘাট তাও ডুবে যায়। ফলে অনেকটা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তারা।
আবার প্রাথমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরাও পরে চরম সমস্যায়। এসব শিশু শিক্ষার্থীরা পানির কারনে অনেক সময় বিদ্যালয়ে যেতে পারে না।
চন্ডিপুর গ্রামের মো. মহারাজ খানের (৬২) নাতনি তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী। তিনি জানান, জোয়ার আইলে রাস্তাঘাট সব তলাইয়া যায়। দূরের স্কুলে নাতিডারে আনা নেওয়া করা লাগে। মুই বাড়ি না থাকলে হে দিন আর স্কুলে যাইতে পারে না। কঁচা ও বলেশ্বরের তীরে বেড়ি বাঁধ না থাকায় উপজেলার খোলপটুয়া, চন্ডিপুর, চরবলেশ্বর, বালিপাড়া, সাউথখালী, ঢেপসাবুনিয়া, কালাইয়া, ইন্দুরকানী, চাড়াখালী, টগড়া ও উমেদপুর গ্রামের মানুষ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আবার কৃষকেদেরও অভিযোগ অল্প জোয়ারেই তাদের কৃষি ক্ষেত প্লাবিত হয়। ফলে বছরের বিভিন্ন সময় কৃষি কাজ ও ফসলের ক্ষতি হয়। যা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না।
চাড়াখালী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আবু বকর সিকদার অভিযোগ করে বলেন, ‘বলেশ্বর গাঙ্গের পারে বান বেড়ি নাই। হেইর লইগ্যা গাঙ্গে জোয়ার আইলেই হগল কোলার (মাঠের) কৃষি খামার তলাইয়া যায়।’
আবার একই এলাকার গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা লিপি বেগম (২৯) বলেন, ‘ঘরের পোতা (মেঝে) তামাইত (পর্যন্ত) গাঙ্গে ভাইঙ্গা গেছে। জোরে তুফান হইলে পোলা মাইয়া লইয়া ঘরে থাহা যায় না। গাঙ্গের পানি সব ঘরে ঢোকে।’
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড পিরোজপুর অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী সাঈদ আহম্মেদ জানান, জাইকার একটি দল জিয়ানগরের ক্ষতিগ্রস্থ বেড়ি বাঁধ পরিদর্শন করেছেন। তারা কাজ করতে সম্মত হলেই, ক্ষতিগ্রস্থ বাধ নির্মান করা যাবে। এছাড়া তারা জিয়ানগর থেকে হুলারহাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ বাধ জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্ধ চেয়েছেন। অর্থ পাওয়া গেলেই দ্রুত কাজ করা সম্ভব হবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *