জাতীয়
ডায়াবেটিস জটিলতায় বেশি ভুক্তভোগী বাংলাদেশ
ডায়াবেটিসের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়ে থাকে। এ রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন-(আইডিএফ) দিবসটি উদযাপিত হয়ে থাকে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে-‘ডায়াবেটিসের উপর নজর রাখুন’।
এতে যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা হলো- (১) ডায়াবেটিসের লক্ষণ নেই এমন প্রাপ্ত বয়স্ক লোককেও ডায়াবেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষা করে জেনে নেওয়া। যাতে ডায়াবেটিসের জটিলতা দেখা দেওয়ার আগে তাকে সঠিক চিকিত্সার আওতায় আনা যায়। একই সাথে ডায়াবেটিসের লক্ষণবিহীন সকল মানুষকে সচেতন করা। (২) যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা, তাদের ইতোমধ্যেই ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে কিনা তা দেখা, চিকিত্সা সংক্রান্ত পদক্ষেপ সঠিকভাবে নেওয়া হয়েছে কিনা, তা নজরে রাখা। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শোভাযাত্রা, আলোচনা সভাসহ নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
প্রকাশিত দুইটি গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ২০ ভাগেরও কম রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সফল। এটিই বর্তমান বিশ্বের যে কোনো দেশের ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাত্রার তুলনায় খারাপ অবস্থা। ডায়াবেটিসের দীর্ঘকালীন জটিলতাগুলোতেও বাংলাদেশি রোগীরা বেশি ভুগছে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতি হলো- এখানে অতি অল্প বয়সের ছেলে-মেয়েরা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে। বাংলাদেশের আরো একটি বড় ঝুঁকি হলো- বিপুল সংখ্যক গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রোগী। পৃথিবীতে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার বাংলাদেশে তুলনামূলক বেশি।
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন-আইডিএফ-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৫-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশে মোট ৭১ লাখ শনাক্তকৃত ডায়াবেটিসের রোগী ছিল। এছাড়া আরো প্রায় ৭১ লাখ (মোট প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ) মানুষ ডায়াবেটিস নিয়ে বসবাস করছে। যারা এখনো পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি। ওই সময় পৃথিবীতে মোট ৪১ কোটি ৫০ লাখ শনাক্তকৃত ডায়াবেটিসের রোগী ছিল। তারা আরো আশঙ্কা করছে যে, ২০৪০ সালে পৃথিবীতে মোট ৬৪ কোটি ২০ লাখ ডায়াবেটিসের রোগী থাকবে। ২০১৫ সালের ডায়াবেটিসের রোগীর মোট সংখ্যা অনুসারে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ দশম অবস্থানে ছিল; কিন্তু ২০৪০ সালে মোট রোগীর সংখ্যা অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান হবে নবম।