Connect with us

দেশজুড়ে

দুই বছরেও চালু হয়নি মহাদেবপুরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন

Published

on

নওগাঁ প্রতিনিধি: তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় উন্নীত করা নিয়ে জটিলতার কারণে নওগাঁর মহাদেবপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণের দুই বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রাংশ এবং পানি বহনকারী গাড়ি ও প্রয়োজনীয় জনবল থাকার পরেও জনগণের কাজে আসছে না এই প্রতিষ্ঠানটি।
নওগাঁ গণপূর্ত বিভাগের একটি সূত্র জানা যায় বিগত, মহাদেবপুর উপজেলায় প্রায় তিন লাখ লোক বসবাস করেন। এ ছাড়াও এই উপজেলায় সীমান্তবর্তী উপজেলা রয়েছে পতœীতলা, মান্দা, ধামইরহাট, সাপাহার, বদলগাছী ও নওগাঁ সদর। মহাদেবপুর উপজেলার সাথে ওই উপজেলার সাথে যোগাযোগ ভালো হওয়া। উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ ছাড়া মহাদেবপুর উপজেলা সদরে বড় বাজার রয়েছে। সব দিক দিয়ে গুরুত্বানুসারে ২০১৩ সালে মহাদেবপুর-পতœীতলা আঞ্চলিক মহাসড়কে ফাজিলপুর বরেন্দ্র মোড় নামক স্থানে উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই বছরেই দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্টেশনের দোতলা বিশিষ্ট ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরের বছর মে মাসে নির্মাণ কাজ শেষ। ওই বছরের জুন মাসেই গণপূর্ত বিভাগ ভবনটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগকে এ ভবনটি বুঝে দেয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটিতে ইতোমধ্যে একটি অগ্নিনির্বাপণ গাড়িসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তৃতীয় শ্রেণির ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন হিসেবে প্রয়োজনীয় জনবল হিসেবে একজন দলনেতা, ২ জন ড্রাইভার, ৮ জন ফায়ারম্যান, একজন বাবুর্চি ও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় এবং স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিকে তৃতীয় শ্রেণিতে নির্মাণ করা হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন ও কার্যক্রম শুরু করার আগেই দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় উন্নীত করা ঘোষণা দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিম। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি উদ্বোধন ও কার্যক্রম।
মহাদেবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ধলু জানান, এলাকায় মাঝে মধ্যেই অগ্নিকান্ড, সড়ক দুর্ঘটনা ও বিদ্যুৎ স্পৃষ্টের মতো ঘটনা ঘটে থাকে। এসব কাজে দ্রুত কাজ করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এসে সেবা থেকে প্রায় বঞ্চিত হয়েছেন এলাকাবাসি। তার মতো এলাকাবাসিরও দাবি রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত চালু করার।
স্টেশনে সাইদুর রহমান নামের এক ফায়ারম্যান পরিবার সহকারে বসবাস করছেন গত ২ বছর ধরে।
ফায়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, এ স্টেশনটির জন্য বরাদ্দকৃত অগ্নিনির্বাপণ গাড়িসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ বর্তমানে পত্মীতলা ফায়ার স্টেশনে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ স্টেশনের তিনি ছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা জেলার বিভিন্ন ফায়ার স্টেশনে কর্মরত রয়েছেন।
নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের উপ-সহকারী পরিচালক একেএম মুর্শেদ জানান, স্টেশনটিতে চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও যন্ত্রাংশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশী সুযোগ-সুবিধা নেয়ার জন্য স্টেশনটি তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় উত্তীর্ণ করার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আবেদন জানিয়েছেন। সে অনুযায়ী বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশণা এলেই স্টেশনটি উদ্বোধন করা হবে। তবে কবে নাগাদ স্টেশনটি চালু করা যেতে পারে এ ব্যাপারে তিনি কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেননি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিম জানান, চলতি মাসের মধ্যেই তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় উন্নীত করা কাজ শুরু হবে। তিনি আরো আশা ব্যক্ত করেন, দ্রুত প্রতিষ্ঠানটি চালু করা সম্ভব হবে। জনসাধারণ তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *