Connect with us

স্বাস্থ্য

নতুন থেরাপিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন

Published

on

সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ৩০ কোটির মতো। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এ সংখ্যা ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ কোটিতে দাঁড়াবে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। তাই রোগটিকে দমন করতে নানা রকম থেরাপি ও ওষুধপত্র বের করার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

ইনসুলিনে নির্ভরশীলতা
ডায়াবেটিস রোগটি দুই ধরনের হয়ে থাকে: টাইপ-১ ও টাইপ-২। সাধারণত অল্পবয়সীরা আক্রান্ত হয় টাইপ-১ ডায়াবেটিসে।

অল্পবয়সীদের যাতে সবসময় টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ে মাথা ঘামাতে না হয়, সেজন্য গবেষকরা ইনসুলিনের বিকল্প কিছু আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন। এর একটি হলো, দেহের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধক্ষমতা যাতে ইনসুলিন উৎপাদনকারী বেটাসেলগুলোকে আক্রমণ করতে না পারে, সে জন্যে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করা। জার্মানির হানোফার শহরের মেডিকেল ইউনিভার্সিটির এলমার ইয়েকেল এ প্রসঙ্গে জানান ‘‘এটা রোগনির্ণয়ের সময় দেয়া এককালীন এক থেরাপি। এরপর রোগীকে আর চিকিৎসা দিতে হয় না। একবারই দিতে হয় বলে এটি আকর্ষণীয় পদ্ধতি। এর মূল লক্ষ্য : রোগ নির্ণয়ের সময় টিকে থাকা বেটাকোষগুলোকে রক্ষা করা ও কাজে লাগানো।”

আন্তর্জাতিক ক্লিনিক্যাল গবেষণায় এই পদ্ধতি নিয়ে মানুষের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। এতে হানোফারের মেডিকেল ইউনিভার্সিটিও অংশ নিয়েছে। তবে ফলাফলটা পাওয়া গেছে বিভিন্ন রকমের। ইউরোপ ও অ্যামেরিকার হালকা-পাতলা দেহের তরুণ ডায়াবেটিস রোগীরা অ্যান্টিবডির উপাদান থেকে উপকার পেয়েছে, কিন্তু এশিয়ান অঞ্চলের রোগীরা আশাব্যঞ্জক তেমন কিছু দেখাতে পারেনি।

এলমার ইয়েকেল জানান, ‘‘মনে হয়, টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে এশিয়ার দেশগুলোতে অন্যান্য কারণ থাকতে পারে।”

রক্তের স্টেমসেল
আরো কিছু গবেষণার মাধ্যমে বোঝা যাবে, কেন টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের সবার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডির উপাদান কাজে লাগছে না। ব্রাজিলের গবেষকরা স্টেম সেল নিয়ে গবেষণা করছেন। এই পরীক্ষায় তরুণ রোগীদের দেহ থেকে নেয়া রক্তের স্টেমসেল আবার ঢুকিয়ে দেয়া হয় তাদের শরীরে। এক্ষেত্রেও রয়েছে ইমিউন সিস্টেমকে সতেজ করার প্রচেষ্টা, যাতে শরীরের বেটা সেলগুলো আর ধ্বংস হতে না পারে। এ ব্যাপারে ক্লিনিক্ল্যাল পরীক্ষায় আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

আরেকটি পদ্ধতি নিয়ে ইসরায়েল, আমেরিকা ও জার্মানিতে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। এতে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে লিভারের দিকে। এলমার ইয়েকেলের ভাষায়, ‘‘আমাদের দেহে প্রচুর পরিমাণে লিভার সেল রয়েছে, যেগুলো প্রতিনিয়ত পুনর্গঠিত হচ্ছে। এই কোষগুলোর আচার-আচরণ পরিবর্তন করে ইনসুলিন প্রস্তুতকারী সেলে রূপান্তরিত করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে পরীক্ষা চলছে। প্রাণীর ক্ষেত্রে সাফল্যও দেখা গেছে। মানুষের ক্ষেত্রে এটা একটা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হতে পারে কিনা, তা বোঝা যাবে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে।”

টিকা পদ্ধতি
তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিস দমনে আরেকটি পদ্ধতি বেশ কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। তা হলো টিকা দিয়ে এই প্রকারের ডায়াবেটিস দমন করা। কয়েকটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে। হয়তো বছর তিনেকের মধ্যে প্রথম টিকাটি বাজারে আসবে।

অন্যদিকে ডায়াবেটিস টাইপ-২এর ক্ষেত্রে একটি ভালো খবর রয়েছে। তা হলো, একটি ওষুধ কিছুদিনের মধ্যেই অনুমোদন পেতে যাচ্ছে, যার নাম ‘ফরক্সিগা’। এর সাহায্যে কিডনিকে এমনভাবে উদ্দীপিত করা হবে, যাতে রক্তের অতিরিক্ত শর্করা মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের আর ইনসুলিন নেয়ার প্রয়োজন পড়বে না। সূত্র : ডয়চে ভেলে

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *