Connect with us

দেশজুড়ে

পিরোজপুরের জিয়ানগরে কচা ও বলেশ্বর নদীর ভাঙ্গনে বিলীন শতাধিক বসত বাড়ী ও স্থাপনা

Published

on

12কেফায়েত উল্লাহ, জিয়ানগর প্রতিনিধিঃ

পিরোজপুরের উপকুলীয় উপজেলা জিয়ানগরের কচা ও বলেশ্বর নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ইন্দুরকানী, কালাইয়া, টগড়া, চন্ডিপুর, খোলপটুয়া গ্রামসহ চারাখালী খাদ্য গুদাম, গুচ্ছ গ্রাম হুমকির মুখে। উপজেলার কচা নদীর ভাঙ্গনে ইন্দুরকানী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বাড়ী, কাজী বাড়ী, হাওলাদার বাড়ী, ভক্ত বাড়ী সহ শতাধিক বাড়ী এবং তাদের ৫ শত বিঘা ভিটা ও বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । পাশা পাশি কালাইয়া গ্রামের সেকান্দার হাওলাদারের বাড়ী, চিত্ত রঞ্জন মন্ডলের বাড়ী, আনিচুর রহামান হাওলাদারের বাড়ী, রবিন্দ্রনাথ ও চিত্ত রঞ্জন দাস সহ শতাধিক বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । ঐ গ্রামের রাম গোপাল সাহা তালুকদার জানান আমাদের পৈত্রিক ভিটা বাড়ীসহ শতাধিক বাড়ী ও প্রায় ৪ শত বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কালাইয়া গ্রামের সেকান্দার আলী হাওলাদার তার সব কিছু হারিয়ে বেড়ী বাঁধের পাশে ঝুপড়ি ঘরে স্বজনদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে । কচা নদীর ভাঙ্গনের দৃশ্য দেখাতে গিয়ে সেকান্দার আলী বলেন, হায়রে সর্বনাশা কচা মোর সব কিছু লুইটা লইয়া গ্যাছে । এহন আমি একেবারে অসহায় । কালাইয়া গ্রামের চিত্ত রঞ্জন ভক্তের সমস্ত ভিটা বাড়ী কচা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে । সে স্ত্রী পরিজন নিয়ে নদীর কিনারায় জোয়ার ভাটার সাথে যুদ্ধ করে ঝুপড়ি ঘরে বাস করছেন । এভাবে নদীর কিনারে নজরুল হাওলাদার, নান্টু হাওলাদার, হারুন হাওলাদার, জাকির হাওলাদার, মোশারেফ মৃধা তহিদুল ইসলামসহ অনেকেই জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করছে । তাদের নিজেদের থাকার কোন জায়গা নেই, তেমনি পায়নি কোন আবাসনে স্থান। এছাড়া টগড়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বৃটিশ আমলের জামে মসজিদ সহ শতাধিক বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । বালিপাড়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর ও খোলপুটয়া গ্রামের কচা ও বলেশ্বর নদীর ভাঙ্গনে ভিটা বাড়ীসহ কৃষি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে । ঐ গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান কচা ও বলেশ্বর নদীর মোহনায় খোলপটুয়া গ্রাম হওয়ায় ঐ গ্রামের তিন ভাগের এক ভাগ নদীতে ভেঙ্গে গেছে । এখন ঐ গ্রামটি ভাঙ্গনের মুখে । এছাড়া চারাখালী গ্রামের খাদ্য গুদাম, গুচ্ছ গ্রাম, ভাড়ানী খালের স্লুইচ গেটের ২ পাশের রাস্তা দিন দিন বলেশ্বর নদীতে ভেঙ্গে যাচ্ছে । পানী উন্নয়ন বোর্ড ২ যুগ ধরেও ভাঙ্গন রোধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডে উপ প্রকৌশলী মোঃ ছাইদুর রহমান জানান নদী ভাঙ্গন রোধের জন্য আপাদত কোন বরাদ্ধ না দেওয়ায় প্রাক্কলন তৈরী করলেও কোন কাজ হচ্ছে না । সরকার বরাদ্ধ দিলে ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে । জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যান ইকরামুল কবির তালুকদার মজনু জানান উপজেলার ইন্দুরকানী, কালাইয়া, সাঈদখালী, চরবলেশ্বর, চন্ডিপুর, টগড়া, খোলপটুয়া গ্রাম যেভাবে ভেঙ্গে যাচ্ছে তাতে গ্রাম বাসীদের অনেকের বাড়ী ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে । সরকারের জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং যাদের ঘরবাড়ী ভেঙ্গে গেছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *