কুড়িগ্রাম
বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রাক্ষসী ব্রহ্মপুত্র নদে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু
রৌমারী উপজেলার ভাঙ্গন এলাকাগুলো হলো ইটালুকান্দা, সাহেবের আলগা, চর গেন্দার আগলা, চরঘুঘুমারী, ঘুঘুমারী, খেরুয়ারচর, পূর্বখেরুয়ারচর, পূর্ব খেদাইমারী, উত্তর খেদাইমারী, পশ্চিম পাখিউড়া, পাখিউড়া, পশ্চিম বাগুয়ারচর , বাগুয়ারচর ,বাইসপাড়া, বলদমারা, পূর্ব বলদমারা, ধনারচর, ধনারচর নতুন গ্রাম, দিগলাপাড়া, তিনতেলী।
রাজিবপুর উপজেলার শঙ্করমাদবপুর, সাজাই, চরসাজাই,বল্লাপাড়া,উত্তর কোদালকাটি, নয়ারচর,নয়ারচর বাজার, মাঠের ভিটা, লাউশালা,টাঙ্গইলাপাড়।
এছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের কবলে পড়বে রৌমারী উপজেলার আরো প্রায় বিশটি গ্রাম সাহেবেরআলগা, গেন্দার আলগা,চরসোনাপুর,ঘুঘুমারী, উত্তর খেদাইমারী, পাখিউড়া, জামাইপাড়া, বাগুয়ারচরপয়েচিপাড়া, বাগুয়ারচর, বাইটকামারী, পশ্চিম খনজনমারা, খনজনমারা, বাইশপাড়া,কুঠিরচর, চরবাঘমারা, চর বন্দবেড়, ধনারচর, দিগলাপাড়া,ধনারচর নতুন গ্রাম।
প্রতি বছর নদের ভাঙ্গনের ফলে গ্রামের পর গ্রামের ঘর-বাড়ী ফসলী জমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গাছপালা বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদী গর্ভে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাব দাদার ভিটে মাটি হারিয়ে পরিনত হচ্ছে ভূমিহীনে। এসব পরিবার সব কিছু হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন রাস্তার দুপাশে হেলিপ্যাডে আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন রোধে জরুরী কোন পদক্ষেপ না নিলে অদুর ভবিষৎতে রৌমারী উপজেলা পরিষদ ভবনসহ সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
বলদমার গ্রামের হামিদা খাতুন জানান, আমাগো আবাদি জমি নাই, সব নদীতে ভাঙ্গয়া গেছে,ঘাট পাড়ে দোকান করে খাইছি তাও নদীতে ভাঙ্গয়া গেছে।
পশ্চিম বাগুয়ারচর গ্রামের কোরবান আলী জানান, এক বছরে আমরা দুই বার বাড়ী টান দিছি, নিজে বাড়ী নেওয়ার জমি নাই, আমাগো একটাই দাবী নদী বাঁইনধা, আমরা রিলিপ চাইনা, নিজে জমিতে ঘর তুইলা শান্তিকে পোলাপান নিয়া থাকবার চাই।
[
রৌমারী উপজেলা কর্মরত সিএসডিকে এনজিওর নির্বাহী পরিচালক মোঃ আবু হানিফ মাস্টার বলেন গত পাঁচ বছরে রৌমারী,রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার প্রায় ৫০হাজার পরিবার নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে উদবাস্ত হয়েছে। এইসব পরিবারের একটি বড় অংশ ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বস্তিতে বসবাস করছে। উদবাস্ত পরিবারের পূর্নবাসন ও নদী ভাঙ্গন রোধ না করলে আগামী ১০বছরে মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে রৌমারী ও রাজিবপুর নামের দুটি উপজেলা বিলেন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃদাঃ) মোঃ ফাউজুল কবীর বলেন, বন্যা পানি হ্রাস সাথে সাথে রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী, বন্দবেড়, যাদুরচর ও রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি, মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ব্যাপক ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,মোঃ মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, নদী ভাঙ্গন রোধে সরকারের প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী, এভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে অদুর ভবিষৎতে মহান মুক্তিযুদ্ধের মুক্তঞ্চল হিসাবে পরিচিত রৌমারী উপজেলা বাংলাদেশের মানচিত্র হতে বিলিন হয়ে যাবে।