Connect with us

জাতীয়

‘বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই’

Published

on

স্টাফ রিপোর্টার:
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবারও সংলাপের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকার গঠন করে নির্বাচনের দাবি জানালেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিএনপি নেত্রীর এই দাবির সাংবিধানিক ভিত্তি নেই বলেও মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। দলটির নেতারা আরও জানিয়েছেন, সরকারের নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচনও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচিত এই সংসদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন হবে না। এখানে নির্দলীয় সরকারের আর কোনো সুযোগ নেই। এই অবস্থানে আওয়ামী লীগ আগের মতই অনড় থাকবে বলে জানান তারা। শুধু তাই নয়, আগামীতে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনাতেও বসবে না আওয়ামী লীগ। সংসদে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব না থাকায় তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন বা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই বলেও আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান।
গত শনিবার ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে প্রকৌশলীদের এক সমাবেশে খালেদা জিয়া আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্দলীয় সরকার কাঠামোর ব্যাপারে সমঝোতায় আসার কথা বলেছেন। এর আগেও কয়েক বার খালেদা জিয়া এই দাবি জানান। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপির এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, যে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাতিল হয়েছে সেই ব্যবস্থা আর ফিরিয়ে আনবে না আওয়ামী লীগ। সংবিধান অনুযায়ী দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামীতেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই অবস্থানে থেকে আওয়ামী লীগ আর সরবে না।
এদিকে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আগামীতে আলোচনাও করতে চায় না আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির নেতাদের মতে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে। গত নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় দশম সংসদে তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। ফলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত নির্বাচনকালীন সরকারে থাকার সুযোগ নেই বিএনপির। এ কারণে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার বাধ্যবাধকতা নেই বলেও আওয়ামী লীগ নেতারা মন্তব্য করেন। উচ্চ আদালতের রায়ে নবম সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। এর সময় থেকেই বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের বিরোধিতা করে আসছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর সংবিধান অনুযায়ী গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দল থেকে সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হয়। এই সরকারে বিএনপির প্রতিনিধি চাওয়া হলে বিএনপি তা প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচন বর্জন করে। এই অবস্থায় সরকারের নির্ধারিত সময় পর হওয়ার আগে কোনো নির্বাচন নয় বলেও আওয়ামী লীগ নেতারা জানান। রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে বিএনপি এ ধরণের দাবি করছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নির্দলীয় সরকারের সাংবিধানিক কোনো ভিত্তি নেই। এটা নিয়ে আলোচনার কি আছে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। সরকারের মেয়াদ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে বিএনপিকে অংশ নিতে হবে। জ্বালাও-পোড়াও করে বিএনপির লাভ নেই।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে দেশের মানুষ নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। উচ্চ আদালত যে নির্দলীয় সরকার বাতিল করেছে সেটা ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। এখন নির্দলীয় সরকারের কথা বলে রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে তারা। নির্বাচনের সময় হলে তখন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে সব দলের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।
এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কোনো অবস্থাতেই হবে না। নির্দলীয় সরকার তাদের অলীক স্বপ্ন। আগামী নির্বাচনও সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ শেষে সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ীই শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রয়োজন নেই। নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সংসদে তাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *