Connect with us

দেশজুড়ে

বড়াইগ্রাম থেকে উদ্ধার হলো ঢাকায় অপহৃত গার্মেন্টস কর্মী ফরহাদ

Published

on

অপহৃতবড়াইগ্রাম(নাটোর)প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে নিজ বুদ্ধিমত্তায় অপহরণকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেল গার্মেন্টস কর্মী ফরহাদ হোসেন (২০)। সে ঢাকাস্থ হামিম গ্রুপের এক গার্মেন্টসে চাকুরী করে। ফরহাদ হোসেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার গোড়াইল গ্রামের মুনজুর হোসেন মাতাব্বরের ছেলে এবং নগরকান্দা সরকারি কলেজের এইচ.এস.সি ক্লাসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। চাকুরী করার কারণে ঢাকাতে একটি মেসে থাকতো সে।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার পুলিশ কর্মকর্তা সার্জেন্ট আনোয়ার হোসেন ও আমিনুল ইসলাম জানান, ঐ মেসের জনৈক ব্যক্তি ভাল চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গত বৃহষ্পতিবার নিয়ে আসে নাটোর এলাকায়। কয়েকজন লোকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সে চলে যায়। তারপর থেকে তাকে বিভিন্ন স্থানে নেয়া হয় ও মারপিট করা হয়। অস্ত্র দেখিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বারবার সেসব লোকেরা এবং মুক্তিপণ হিসেবে তার পিতার কাছ থেকে দাবী করে পাঁচ লক্ষ টাকা।
তারা আরও বলেন, কৌশলে সে অপহরণকারীদের কাছ থেকে বের হয়ে দ্রুত একটি অটো রিক্সায় উঠে এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাইপাসে এসে ধীর গতিতে চলন্ত ঢাকাগামী হানিফ (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৯৩২৭) নামক একটি বাসে আরোহন করে।
অটো রিক্সা ও পরে বাসে উঠার পর অন্যের মুঠো ফোন থেকে তার মামা কাইয়ুম মাতাব্বরের কাছে ফোন দিয়ে ঘটনা জানায় ফরহাদ হোসেন। তার মামা কাইয়ুম স্থানীয় নগরকান্দা থানায় এ বিষয়টি জানানোর সাথে সাথে তাকে উদ্ধারে নামে পুলিশ প্রশাসন। অভিযানের এক পর্যায়ে বড়াইগ্রাম উপজেলার মানিকপুর চেক পোষ্টে শনিবার দুপুর ২টার দিকে হানিফ বাসটি তল্লাসী করেন বনপাড়া হাইওয়ে থানার পুলিশ কর্মকর্তা সার্জেন্ট আনোয়ার হোসেন, সাহাদত হোসেন ও আমিনুল ইসলাম। তারা জানান, বাসটি থেকে ফরহাদ হোসেনকে উদ্ধার করে হস্তান্তর করা হয় নাটোর ডিবি পুলিশের হাতে ।
ভিকটিম ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই মুরাদ হোসেন মুঠো ফোনে জানান, গত তিন মাস যাবত ফরহাদ হোসেন ঢাকাস্থ হামিম গ্রুপের এক গার্মেন্টসে কর্মরত থাকায় সে সেখানে এক মেসে থাকতো। হঠাৎ গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফরহাদ পাঁচ লক্ষ টাকা চেয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে ফোন করে এবং বলে আমি আটকা পড়েছি দ্রুত বিকাশে টাকা দিতে হবে। অন্যথায় আমাকে মেরে ফেলবে। তারপরই শুক্রবারে বিষয়টির বর্ননা দিয়ে নগরকান্দা থানায় জিডি করে তার পিতা মুনজুর হোসেন মাতাব্বর।
মুরাদ হোসেন আরো বলেন, বারবার বিভিন্ন মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ দাবী করায় এবং হত্যার হুমকি দেওয়ায় শনিবার সকাল ৮টার দিকে বিকাশে ৫ হাজার টাকা প্রেরণ করা হয়। অবশিষ্ট টাকার জোগাড় হচ্ছে বলে কিডনেপকারীদের জানান হয়।
ভিকটিম ফরহাদ হোসেনকে বহনকারী অটো রিক্সা চালক আ. রাজ্জাক বলেন, শনিবার বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে দয়ারামপুর- নাটোর সড়কে বাগাতিপাড়া থানার দয়ারামপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজার থেকে ১ কি.মি. অদুরে মোল্লার মোড় থেকে আমার অটো রিক্সায় উঠে প্যান্ট-শার্ট পরিহিত আমার ছেলের ন্যায় এ ছেলে। চোখে-মুখে যেন আতঙ্ক ও ভীতির ছাপ। আমার কাছে মোবাইল নিয়ে কথা বললো তার কোন আত্মীয়ের সাথে। সে বললো-আমি কৌশলে তাদের আস্তানা থেকে পালিয়েছি। তোমারা আর বিকাশে টাকা পাঠাবে না। আমি বেঁচে গেছি। কথা শুনে বুঝলাম সে বিপদগ্রস্থ। তার কথা শেষ হতে না হতেই পেছন থেকে আসলো দু’জন মোটরসাইকেলরোহী। তারা অটোরিক্সা থামানোর জন্য আমাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছিল। অটোরিক্সা না থামিয়ে পরিস্থিতি বুঝে চালিয়েই যাচ্ছিলাম। কিন্তুু তারা মোটরসাইকেল দিয়ে অটোরিক্সার গতি রোধ করে ছেলেটিকে জোরপুর্বক নামিয়ে নেয়। ছেলেটি চিৎকার করতে থাকে আমাকে রেখে যাবেন না। কিন্তু আশে-পাশে নেই কোন মানুষ। ধস্বাধস্বির এক পর্যায়ে তাদের হাত থেকে ছুটে বের হয় ছেলেটি এবং পাকা রাস্তা দিয়ে দৌড়াতে থাকে। মোটরসাইকেলরোহী ২ জনও পিছু-পিছু ধাওয়া করে তাকে। এক সময় দৌড়ানোকালে সে এক বাড়ীতে ঢুকে পড়লে মোটরসাইকেলরোহী ২ জন চলে যায়। নাটোর থানার ডি.বি -ওসি আব্দুল হাই জানান, এ বিষয়ে নাটোর থানায় এখনও মামলা হয়নি। তবে নগরকান্দা থানা থেকে ফোর্স ও ভিকটিমের লোকজন আসলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *