আন্তর্জাতিক
যৌন নির্যাতনের দায়ে ব্রিটেনে ৮১ বছর বয়সী ইমামের জেল
আদালত বলেছে, একজন শিক্ষক হিসেবে হাজী সাদিক তার অবস্থানের সুযোগ নিয়েছেন।তবে হাজী সাদিক তাঁর বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি মসজিদের ‘রাজনীতি’র শিকার হয়েছেন।
কিন্তু বিচারক স্টিফেন হপকিন্স কিউসি হাজী সাদিককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘শিশুরা আপনাকে শ্রদ্ধা করে ‘চাচা’ বলে ডাকতো। কিন্তু আমার বিচারে আপনি একজন ধূর্ত লোক। আপনার উপরের চেহারার আড়ালে রয়েছে এক অন্ধকার দিক।’
কার্ডিফের উডভিল রোডের মসজিদে হাজী সাদিক পার্ট টাইম ইমাম হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে ১৯৯৬ হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি ১৩ বছরের কম বয়সী মেয়েদের নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছিল, কোরান পড়তে গিয়ে কোন ভুল করলে তার জন্য শাস্তি দেয়ার ছলে তিনি নির্যাতন চালাতেন। তিনি একটি ছড়ি দিয়ে মেয়েদের হাতে এবং পিঠে আঘাত করতেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
তার নির্যাতনের শিকার মেয়েদের কেউ কেউ বলেছে, এজন্যে তারা ঐ মসজিদে যেতে ভয় পেত। একজন এমনকি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল।
নির্যাতনের শিকার কেউ কেউ এমন কথাও বলেছেন যে তারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে কাউকে জানাতেও পারছিলেন না। এদের একজন বলেছেন, ‘আমাদের ধর্মের কারণে এটা প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব মনে হতো।’
আরেকটি মেয়ে আদালতে পড়ে শোনানো এক বিবৃতি জানায়, প্রথম যেদিন সে তার মায়ের কাছে বিষয়টি প্রকাশ করতে পেরেছিল এবং তাঁর মা এই কথা বিশ্বাস করেছিলেন, সেদিন তার কিরকম ভারমুক্ত মনে হয়েছিল।
‘আমাদের পরিবারে সন্মান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই বিষয়ে আমার পরিবার আমার পাশে ছিল।’
সাউথ ওয়েলস পুলিশের ইন্সপেক্টর রব ক্রনিক বলেছেন, ভুক্তভোগী যারা এই ঘটনার বিচারের জন্য এগিয়ে এসেছেন, তারা বিরাট সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। মুসলিম কাউন্সিল অব ওয়েলসও এক বিবৃতিতে এই মেয়েদের সাহসের প্রশংসা করেছে। বিবিসি বাংলা।