Connect with us

জাতীয়

সমাজ নিয়ে কেউ ভাবে না

Avatar photo

Published

on

মোহাম্মদ আসাদ আলী:

কালের প্রবাহে আজ আমরা এমন একটি শোচনীয় পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছি যেখানে ব্যক্তি নয়, ধ্বংসের মুখোমুখী দাঁড়িয়েছে আমাদের সমাজ। মনুষ্যত্ব হারিয়ে সামাজিক জীব মানুষ রূপ নিয়েছে অমানবিক প্রাণিবিশেষে। এমন কোনো অন্যায়, অপরাধ নেই যা আমাদের সমাজে হচ্ছে না। নিজের পিতা-মাতাকে জবাই দিতেও মানুষের আত্মা কাঁপছে না, কোলের শিশুর জীবন নিতে দ্বিধা আসছে না, কয়েকশ’ টাকার লোভে নৃশংসভাবে একজন আরেকজনকে হত্যা করছে। স্বার্থের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সমস্ত ন্যায়, সত্য, সুবিচার। এই ব্যক্তিগত স্বার্থান্ধতা হুমকির মুখে ফেলেছে সমাজকে। কুরে কুরে খেয়ে ফেলছে সমাজের ঐক্য, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য। সমাজ হয়ে পড়ছে ভঙ্গুর, মেরুদণ্ডহীন প্রথাবিশেষে।
মানুষ জন্মগতভাবে সামাজিক জীব। বেঁচে থাকার তাগিদে তাকে প্রতিক্ষণে সমাজের সহায়তা গ্রহণ করতে হয়। সমাজকে দিয়ে এবং সমাজ থেকে নিয়ে মানুষের পথচলা। চিরকালই মানুষের পরম বন্ধু হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে তার সমাজ, তার আশেপাশের পরিচিত-অপরচিত মানুষগুলো। সমাজে মানুষে মানুষে সহযোগিতা-সহমর্মিতার মাত্রা যত বেশি থাকে সমাজ তত বেশি শক্তিশালী ও দৃঢ় হয়। আর সহযোগিতার পরিধি ক্ষুদ্র হলে সে সমাজ স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুদ্রতায় ডুবে থেকে ধ্বংসের প্রহর গুণে। বর্তমানে আমাদের সমাজের হাল-হকিকত সকলেরই জানা। যাদের দৃষ্টি আছে, অন্ধকার নামলে তাদেরকে বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না যে অন্ধকার নেমেছে, তা রাতের অন্ধকারই হোক আর মিথ্যার অন্ধকারই হোক, আর যাদের দৃষ্টি নেই, অন্ধকার কেন, মৃত্যুখাদের কিনারে দাঁড়িয়েও তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করে।
আফসোস এই জাতির জন্য, এই কোটি কোটি মানুষের জন্য, যারা ইতোমধ্যেই বোধ-বুদ্ধি খুইয়ে নিজেদের ও অনাগত বংশধরের জন্য মৃত্যুউপত্যকা রচনা করেছে নিশ্চিন্তমনে, কোনো প্রকার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ব্যতিরেখে। পতনোন্মুখ এই সমাজের অবর্ণনীয় দুর্দশা দেখে, নির্যাতিত, নিপীড়িত, দুঃখ-কষ্টে কাতর মানুষের আর্তনাদ দেখেও যাদের কপালে ভাঁজ পড়ে না। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় স্বচক্ষে দেখার পরও যারা খাচ্ছে-দাচ্ছে, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য করছে কোনো প্রকার উদ্বেগ ছাড়াই, নির্বিকার চিত্তে। সমাজের এই অধঃপতন কি মানুষ উপলব্ধি করতে পারছে না? পারছে, আসলে সমস্যাটা ওখানে নয়, সমস্যা হচ্ছে- মানুষের স্বার্থবাদিতা তাকে সমাজের এই অধঃপতন রোধে করণীয় থেকে বিরত রেখেছে। স্বার্থ নামক সামাজিক মহামারিটি সমাজকে এতটাই গ্রাস করে ফেলেছে যে, দয়া, মায়া, মমতা তার কাছে গৌণ। অপরের কী হচ্ছে না হচ্ছে, সুখে-আছে নাকি দুঃখে আছে, খেতে পেল কি পেল না- তা দেখার বিষয় নয়। নিজ দেশকে ভুলে, নিজ সমাজকে ভুলে, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে নিজ পরিবার-পরিজনকে ভুলে মানুষ ব্যস্ত থাকছে নিজেকে নিয়ে। সমাজের প্রতিটি মানুষ আজ মোহাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। অর্থের মোহ, ক্ষমতার মোহ, মান-সম্মানের মোহ বিবেক-বুদ্ধি, জ্ঞান-গরীমাকে করেছে অচল-অসার-নির্জীব।
এখন বলুন- এভাবে সমাজ চলতে পারে? সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো সহযোগিতা, কেননা সমাজের প্রতিটি মানুষ সর্বদা একে অপরের উপর নির্ভরশীল থাকে। এই সহযোগিতার শর্ত ভঙ্গ করে যদি স্বার্থবাদিতার ভিত্তিতে কোনো সমাজ দাঁড়াতে চায় সেটাকে আর যাই হোক মানুষের সমাজ বলা যায় না। তাই অতি জরুরি ভিত্তিতে এখনই সমাজকে ঢেলে সাজাতে হবে। সমাজ নিয়ে ভাবতে হবে। কেন ভাবতে হবে তার পক্ষে আরও ব্যাখ্যা আছে।
সমাজ হলো একটি ছাঁচ (গড়ষফ)। এই সাঁচে পড়ে ওই সমাজে বসবাসকারী মানুষের চরিত্র রচিত হয়। একটি মানবশিশু জন্মের সাথেই কিছু শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসে। যেমন শিশুটি ছেলে হলে এক ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রাপ্ত হয়, মেয়ে হলে আরেক ধরনের। অর্থাৎ লিঙ্গভিত্তিক কিছু প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য সে জন্মগতভাবেই লাভ করছে। কিন্তু এটা লক্ষণীয়, এ বেশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে শারীরিক বৈশিষ্ট্য, মানসিক বা চরিত্রগত নয়। চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য হলো বৈধ-অবৈধ বা ন্যায়-অন্যায়বোধ, শিষ্টাচার, আদব-কায়দা, সহানুভূতি, দয়া-মায়া, ভালোবাসা, পরোপকারিতা ইত্যাদি। এই গুণগুলো একটি শিশু জন্মগতভাবে পায় না, এগুলো সে লাভ করে পরিবার, খেলার সাথী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা সমাজ থেকে। একে সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সামাজিকীকরণ।
পরিবার ও সমাজকে আলাদা করে দেখার উপায় নেই। কারণ পরিবার সমাজেরই একটি ক্ষুদ্রতম একক। একটি শিশু জন্মলাভ করার পর প্রথম সমাজের এই ক্ষুদ্রতম একক অর্থাৎ পরিবারের সাথে পরিচিত হয়। পরিবার থেকে সে আদব-কায়দা, শিষ্টাচার, প্রাথমিক ন্যায়-অন্যায়বোধ শিক্ষা লাভ করে। শিশুর জীবনে সর্বাধিক প্রভাব পড়ে পরিবারের। তার পরিবার যে ধ্যান-ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি ও ধর্মবিশ্বাস লালন করে ওই শিশুটিও সেদিকেই প্রবাহিত হয়। পরিবার যদি সুশৃঙ্খল হয়, রুচিশীল হয়, মার্জিত ও ভদ্র-সভ্য হয় সে পরিবারে বেড়ে ওঠা শিশুটিও সাধারণত সুশৃঙ্খল, মার্জিত রুচিশীল ও ভদ্র-সভ্য হয়। আর পরিবার যদি কলহপূর্ণ হয়, ঐক্যহীন হয় তাহলে শিশুও সেভাবে বেড়ে ওঠে।
এই পরিবারেরই বৃহত্তর সংস্করণ হলো সমাজ। কাজেই পরিবার যেভাবে একটি শিশুর চরিত্র নিয়ন্ত্রণ করছে, সমাজও সেভাবেই ওই সমাজবদ্ধ প্রতিটি মানুষের চরিত্রকে প্রভাবিত করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি মাছ যখন পুকুরে বসবাস করে তখন তার বসবাসপ্রণালী একরকম থাকে, যখন বানের জলে ভেসে নদীতে যায় তখন ভিন্ন রকম হয়, আবার যখন নদী বেয়ে সমুদ্রে পৌঁছে তখন অতল সমুদ্রের বিভিন্ন প্রভাবকের সংস্পর্শে এসে তার জীবনপ্রণালী অনেকাংশেই পরিবর্তিত হয়ে যায়। একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত একজন মানুষ পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রভাবিত হয়, সে বয়স পেরিয়ে গেলে তার জীবনের গতিপথ নির্ধারিত হয় সামাজিক ব্যবস্থার আলোকে। দাঙ্গাপ্রিয়, হিংসাত্মক, ষড়যন্ত্র ও অকৃতজ্ঞতায় পূর্ণ সমাজে আবদ্ধ হয়ে ভালো মানুষও হিংসা-বিদ্বেষ, দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে পরিচালিত সমাজে বসবাসরত অসৎ ও দাঙ্গাপ্রিয় লোকও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সৎ জীবনের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়। স্রোতের বিপরীতে খুব কম জনই তরী বইতে পারে।
যাই হোক, কোনো প্রকার চিন্তা-ভাবনা ব্যতিরেখেই এ সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, আমরা বর্তমানে যে সমাজে বসবাস করছি সে সমাজ ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে পরিচালিত সমাজ নয়, এ সমাজের সঞ্জিবনী শক্তি হলো স্বার্থ। স্বার্থকেন্দ্রিক এ সমাজে আপনি যতই ভালো হয়ে থাকার চেষ্টা করুন, ব্যর্থ হবেন, জীবনের প্রতি পদে হোঁচট খাবেন। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অতি স্বল্পসংখ্যক মানুষ হয়তো এই বিপরীত স্রোতকে ডিঙ্গিয়ে যেতে সক্ষম হবেন কিন্তু মোটের তুলনায় তারা এতই নগণ্য যে, সমষ্টির চাপে তাদেরকে থাকতে হবে কোনঠাসা হয়ে। তারা সৎ হবেন বটে, কিন্তু তার সীমাবদ্ধতা এতই প্রখর যে, অন্যের অপকর্ম মুখ বুঁজে দেখা ছাড়া উপায় থাকবে না। এটাকে যদি আপনি সততা বলেন তাহলে গোটা জাতিতে হয়তো এমন হাতে গোনা কিছু সৎ লোকের দেখা মিলবে। কিন্তু বাকিদের অবস্থা? তারাই তো সমাজের পা থেকে মাথা পর্যন্ত সর্বাঙ্গে অজগরের ন্যায় পেঁচিয়ে আছে। তাদের কথা ভাববে কে?
সমাজ নিয়ে যারা এক-আধটু চিন্তা-ভাবনা করেন, ভাবলে ভুল হবে যে, তাদের এ প্রয়াসের কারণ সমাজের উন্নতি ঘটানো, বরং তাদের এত ভাবনা-চিন্তার পেছনেও স্বার্থ কাজ করে। শিক্ষাকে তারা পণ্যে রূপ দিয়ে দরকষাকশি করছেন প্রতিনিয়ত। সমাজের গতিপথ কতটা মঙ্গলজনক, কতটা অমঙ্গলজনক- সেটা তাদের গবেষণার তালিকায় স্থান পায় নি, কারণ ওটাতে লাভের পাল্লায় কেবলই শুন্য। অন্যদিকে যে ধর্ম এসেছে সমাজের কল্যাণের জন্য, সেই ধর্মই এখন সামাজিক স্থিতিশীলতা ও শান্তির বড় হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ধর্ম আর ধর্ম নেই, ধর্মগুরু প্রতারকরা ধর্মকে বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত করেছে। আর্থিক বাণিজ্য, রাজনৈতিক বাণিজ্য- সবখানেই ধর্মের বাম্পার চাহিদা। ফলে সমাজ ও ধর্ম এখন বিপরীত অভিমুখে গতিশীল দুই মেরুর বস্তু। ধর্মব্যবসায়ীদের বাইরে যে কথিত ধার্মিক শ্রেণিটি বিদ্যমান তারা সমাজকে দুনিয়া জ্ঞান করে ও সমাজে চলা অন্যায়, অবিচারকে ফেতনা জ্ঞান করে সর্বদা এড়িয়ে চলেন। তাদের দৃষ্টি কখনও সাত আসমানের নিচে নামে না। সমাজকে পবিত্র করে যে পৃথিবীকেও স্বর্গে পরিণত করা যায় সে বোধ তাদের নেই। এভাবে সবাই যখন সমাজবিমুখ হয়ে নিজ নিজ স্বার্থের সিন্দুক আগলে রাখছেন, তখন একদল সন্ত্রাসী, অপরাধী, গডফাদাররা সমাজের দায়িত্ব হাতে তুলে নিয়েছে। ফলে কাকের ডিম ফুটে যেমন কোকিলশাবক বেরোয় না, তেমন এই অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজও ভালো মানুষ তৈরি করতে পারছে না।
এই যখন অবস্থা, তখন একটি বারও ভেবেছেন কি, আপনার অনাগত সন্তানের জন্য কেমন সমাজ রেখে যাচ্ছেন? মনে রাখবেন, এই সমাজের অনুকূলেই কিন্তু আপনার ভবিষ্যৎ বংশধরের চরিত্র নির্মিত হবে। আমাদের সমাজ তো এমন ছিল না। কোথায় গেল বাঙালির চিরাচরিত সামাজিক ঐক্য, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য? কেন প্রকাশ্য দিনেদুপুরে একজন মানুষকে খুন করে খুনিরা শত শত মানুষের সামনে দিয়ে বীরদর্পে চলে যায় আর মানুষ দর্শকের ভূমিকা পালন করে, এমনকি কেউ ওই আহত ব্যক্তিকে টেনে তোলার সাহসটুকুও দেখায় না? কীভাবে আমাদের সমাজে স্বার্থবাদ এত প্রকট আকার ধারণ করল? এ প্রশ্নের উত্তর আজ হোক কাল হোক সন্ধান করতেই হবে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের সমাজব্যবস্থার শত শত বছরের ইতিহাস হচ্ছে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির ইতিহাস। সে ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে কীভাবে স্বার্থবাদভিত্তিক নতুন এক কলঙ্কজনক ইতিহাসের পথ রচিত হলো তা অবশ্যই ভাবার বিষয়।

লেখক: হেযবুত তওহীদের সদস্য।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ওরা সওমকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করেছে : হেযবুত তওহীদের এমাম

Avatar photo

Published

on

রাজধানীতে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে বিশাল আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-আইডিইবি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মো. তসলিম উদ্দীন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম সওমের নিয়ম, উদ্দেশ্য, শিক্ষা এবং দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি, মুসলমানদের দুর্দশা এবং এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সওম মানে আত্মসংযম, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরত থাকা। রোযা তথা সওমের উদ্দেশ্য এই যে, মো’মেন ব্যক্তি সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন, নিজের আত্মাকে শক্তিশালী করবেন। তিনি অপচয় করবেন না, পশুর ন্যায় উদরপূর্তি করবেন না। তিনি হবেন নিয়ন্ত্রিত, আত্মত্যাগী। বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষের দুঃখ অনুভব করে তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। আল্লাহর হুকুম মানার ক্ষেত্রে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন অর্থাৎ তিনি হবেন তাকওয়াবান। তার এই চরিত্রের প্রতিফলন ঘটবে সামাজিক ও জাতীয় জীবনে। গড়ে উঠবে এমন এক সমাজ যেখানে সবাই একে অপরের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে উৎসাহী হবে, বিরাজ করবে পরস্পর সহমর্মিতা, সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব। প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি।

তিনি আরও বলেন, আজকের বাস্তবতা এই যে, বর্তমানে এই মৌলিক শিক্ষা হারিয়ে সওম বা রোযা যেন হয়ে গেছে কেবল না খেয়ে থাকা। দেখা যায়, রমজান আসলেই মুসলিমদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে যায়। নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে ওঠে আকাশছোঁয়া। সংযমের মাস এলেই মুসলিমদের সংযমের সব বাঁধ যেন ভেঙে যায়। আজ রোযাকে ব্যবসার হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মানুষ বাজারে গিয়ে নিত্য পণ্যের দাম শুনে অসহায় হয়ে পড়ে। সবাই যেন অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। ধর্মব্যবসাও জমজমাট হয়ে ওঠে এই মাসে। এ জাতীয় অপরাধ ঢাকা দেয়ার জন্য আত্মপ্রচারের আশায় কিছু দান-খয়রাত করতে দেখা যায় মাত্র। কিন্তু রোযা তথা সওমে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ অর্থাৎ তাকওয়া সৃষ্টি হয়না, প্রকৃত সিয়ামের সাধনা হয় না মন্তব্য করেন তিনি।

উপস্থিত অতিথি ও শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রোজার নির্দেশনাটা মূলত মো’মেনদের জন্য। তার মানে মো’মেনরা রোজা পালন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে- এই মো’মেন কারা? তারাই মো’মেন যারা আল্লাহ ও রাসুলের উপর ঈমান আনে, কোনো সন্দেহ পোষণ করে না এবং সম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করে। এই মো’মেনের জন্যই হলে রোজা, নামাজ, হজ্ব সবকিছু। আমরা হেযবুত তওহীদ আমাদের জীবন ও সম্পদ আল্লার রাস্তায় কোরবান করে দিয়ে প্রকৃত মোমেন হবার চেষ্টা করছি বলেন তিনি।

এর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তোলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তোলওয়াত করেন কারি মো. আসাদ। এরপর দলীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিন তার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, হেযবুত তওহীদের তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা প্রমুখ।

এক পর্যায়ে হামদ নাত ও গজল পরিবেশন করেন মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নিয়মিত শিল্পী শাহীন আলম, রাফে আহমেদ, তাহমিনা আক্তার চাঁদ, তাহী ও ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ। তাদের পরিবেশনায় মুগ্ধ হয় দর্শকরা।

দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তার আগমনে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে যায় অনুষ্ঠানস্থল।

নামাজ শেষে দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। বক্তব্য শেষে তিনি মানবজাতির শান্তি কামনা করে দোয়া করেন। মোনাজাত শেষে মাগরিবের আযান দিলে সবার মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। অতিথিরা সবাই মিলে একাকার হয়ে ইফতার করেন।

সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, হেযবুত তওহীদের সাহিত্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, মিরপুর শাখার সভাপতি আব্দুল হক বাবুল, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইউনুস মিয়া, উত্তরা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিনসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

Continue Reading

Highlights

দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জাতীয় ঐক্যের ডাক হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজনে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ ২০২৪) বিকালে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন তেলিপাড়াস্থ সাগর সৈকত কনভেনশন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, রাজতন্ত্রের কবর হয়ে গেছে বহু আগে। ফ্যাসিবাদ মানুষের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বহু ফ্যাসিস্ট আত্মহত্যা করেছে। সমাজতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে। গণতন্ত্রও লাইফ সাপোর্টে আছে- মন্তব্য করেন তিনি।

হেযবুত তওহীদের এই নেতা বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য আমরা দেখেছি। প্রতি ৫ বছর পর পর মহা সংকটে পরতে হচ্ছে জাতিকে। একদল ক্ষমতায় গেলে পরের দিন থেকেই শুরু হয় তাকে টেনে নামানোর চেষ্টা। সমানে চলে জ্বালাও পোড়াও। বাসে আগুন দিয়ে নিরপরাধ নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। সাপের মত পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করা হচ্ছে। ক্ষমতায় যাবার লড়াইয়ে হরতাল, অবরোধ, ধর্মঘটের নামে নৃশংসতা মানুষ দেখেছে। এই সিস্টেম আর মানুষ দেখতে চায় না। মানুষের তৈরি সব সিস্টেমই তো আমরা অ্যাপ্লাই করলাম। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লার দেওয়া সিস্টেমে প্রত্যাবর্তন করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমারা আমাদের ব্যাপারে মাতব্বরি করে আসছে বরাবরই। তারা একে একে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন তাদের শকুনি দৃষ্টি পড়েছে আমার প্রিয় জন্মভূমির উপর। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে তাদের কূট চাল চালছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, শকুন যত ভয়ঙ্করই হোক না কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে কোনো সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। হেযবুত তওহীদ থাকতে তাদের এই দুরাশা কোনো দিন পূর্ণ হবে না। প্রয়োজনে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন দেব তবুও দেশকে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান হতে দিব না- বলেন এই নেতা।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য শাহ নেওয়াজ খানের সঞ্চালনায় ও ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের আন্তর্জাতিক প্রচারণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মশিউর রহমান, হেযবুত তওহীদের সমন্বয়কারী মো. নিজাম উদ্দিন, দৈনিক বজ্রশক্তি পত্রিকার সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান, হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও গুলশান শাখার সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন রাব্বানী, ঢাকা বিভাগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস মিয়া ও মো. তসলিম উদ্দিন এবং হেযবুত তওহীদের গাজীপুর জেলা সভাপতি মো. শাহজাহান প্রধান, মহানগর সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Continue Reading

Highlights

রাজধানীতে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা

Avatar photo

Published

on

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘বাংলা ভাষার মান রক্ষায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচি-কাচার মেলা হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হৃদয়ে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ।

সংগঠনটির উপদেষ্টা শাহ মুহাম্মদ সেলিম রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘বাংলা ভাষা বিকৃত করার প্রবণতা তরুণদের মধ্যে বেশ লক্ষণীয়। অফিস-আদালত, চলচ্চিত্র, নাটক, বিজ্ঞাপনসহ প্রায় জায়গাতেই চলছে বিদেশি ভাষার ব্যবহার। বিদেশি ভাষার আগ্রাসনে খাঁটি বাংলা ভাষার চর্চা দিন দিন কমে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে কিছু সুশীল ব্যক্তিবর্গ আছেন যারা বেশি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন। যার প্রভাব পড়ে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে। তারাও মিশ্র ভাষায় কথা বলতে শেখে। বেসরকারি বেতারগুলোর উপস্থাপকরা তো বাংলা বলেন না বললেই চলে। পৃথিবীর প্রায় ২৮ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং সাহিত্যসম্ভারও বিপুল। অথচ নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি উৎসাহী ও মনোযোগী নয়। আরেকদিকে ইংলিশ মিডিয়ামের দৌরাত্বে অনেক ছেলেমেয়ে যদিও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে কিন্তু লিখতে পারে না। একটু শিক্ষিতরা বাংলার সাথে ইংলিশ শব্দ মিশ্র করে ককটেল বানিয়ে ব্যবহার করে গৌরব করে। অন্যদিকে একজন অশিক্ষিত কৃষক শ্রমিকের কথায় যদি আঞ্চলিকতা প্রকাশ পায় তাকে আমরা ক্ষেত বলে পরিহাস করতে ছাড়ি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু আমরা কি বাংলা ভাষাকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারছি? আমরা কি বিশুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারি? আমরা কি বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধ করতে পেরেছি? ১৯৪৮ সালে করাচিতে নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে পাকিস্তানিরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রয়াসে আরবি হরফে বাংলা লেখার প্রস্তাব করেছিল। আমরা কিন্তু তাদের অযৌক্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করিনি। হয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। কিন্তু এখন তরুণ প্রজন্মের বড় অংশই ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কোনো মহল থেকেই এর কোনো প্রতিবাদ উঠছে না -বলেন এই বক্তা।

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলা ভাষার শুদ্ধ ও সঠিক ব্যবহারের প্রতি অনেকের আগ্রহ কমছে বলে মনে হয়। বিশেষ করে আমাদের শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ভাষার প্রতি মমত্ব ও আগ্রহ নিয়ে উদাসীনতা মোটেও ভালো কিছু নয়। শিশু ও তরুণদের একাংশ বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। এর জন্য আমাদের বিদ্যমান পরিস্থিতিও অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি ভাষা শিক্ষা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু নিজের ভাষাকে অবহেলা করার পক্ষেও আমি নইÑ বলেন হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।

তিনি বলেন, ‘বিমা-ব্যাংকে গেলে বাংলার ব্যবহার প্রায় অদৃশ্য। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানেও ইংরেজিতে প্রতিষ্ঠানের নাম লেখা হয়; এমনকি কর্মরতদের নাম, পদবিও থাকে ইংরেজিতে। ব্রিটিশরা আমাদের মনে পরনির্ভরতা ও বিদেশি ভাষার প্রতি যে অনুরাগ তৈরি করে গেছে, সেটি বদলাতে হবে। বিদেশি শব্দ ও ভাবধারার প্রতি আমাদের দুর্বলতা দূর করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশ সরকারিভাবে তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহারে সাফল্য দেখিয়েছে; তাহলে আমরা কেন পারব না?”

সবশেষে তিনি বলেন, মানবজাতি এক জাতি। ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ ইসলামের নিষিদ্ধ। সব ভাষাই আল্লাহর দেওয়া। প্রকৃতির বৈচিত্র্য যেমন স্বাভাবিক তেমনি ভাষার বৈচিত্র্যও স্বাভাবিক। ইসলাম ভূপ্রকৃতির কারণে জাতীয়তাবাদ এবং ভাষার কারণে বিভিন্নতার কারণে জাতীয়তাবাদ কোনটাকেই স্বীকার করে না। ইসলামের বিধানে সমস্ত মানুষ এক জাতি ভাষার কারণে কোনো জাতি অন্য জাতির উপরে শ্রেষ্ঠ হতে পারে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, লায়ন কেফায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ হুমায়ুন কবির, অতিথি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও লায়ন সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ নারী উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রূপা আহমেদ, দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এসএম সামসুল হুদা, মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি মাটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সহ-সভাপতি রিয়াদুল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমানের বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা ইংরেজি ভাষার বিভিন্ন দুর্বলতা তুলে ধরে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধ সুশৃঙ্খল রূপ তুলে ধরেন।

বিশেষ অতিথি দৈনিক বজ্রশক্তির সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা তার বক্তব্যের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ আদালতে ইংরেজি ভাষার ব্যবহারের নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে এসব দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশিত ভাষার গানে দেশের গানে মুখরিত হয় মিলনায়তন।

Continue Reading