Connect with us

জাতীয়

সাত খুন: ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে চায় কমিটি

Published

on

স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনকে ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ দেশে আনা হচ্ছে বলে খবর পাওয়ায় আর ভারত যাচ্ছে না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। কমিটির সদস্য সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবুল কশেম মহীউদ্দিন জানিয়েছেন, আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে চান। এর মধ্যে নূর হোসেনকে না পেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই প্রতিদেবন দেয়া হবে।  কমিটির আহ্বায়ক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান আলী মোল্লা বলেন, ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ শিগগিরই নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের জানিয়েছে। তবে এই বিশেষ ব্যবস্থা কী হবে- সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। শাহজাহান বলছেন, “দেখা যাক, আমরা তাকে দেশে ফেরত আনার অপেক্ষা করছি।” কমিটির সদস্য সচিব আবুল কশেম বলেন, “ভারতে গিয়ে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের চেয়ে তাকে দেশে ফেরত আনার বিষয়েই বেশি তৎপরতা রয়েছে।” তদন্ত কমিটির প্রধানসহ অন্য সদস্যরা বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতে গিয়ে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আসছিলেন। তবে মহীউদ্দিন বৃহস্পতিবার বলেছেন, “তদন্ত কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি পড়ে না। নূর হোসেন আমাদের ফ্যাক্টরও না।” সাত খুনের ঘটনায় র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তে হাই কোর্টের নির্দেশে গত ৭ মে এই তদন্ত কমিটি করে সরকার। নারায়ণগঞ্জের অপহরণ ও হত্যার সঙ্গে প্রশাসনের কোনো সদস্য বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা বা সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না- গণতদন্তের মাধ্যমে তা উদঘাটন করবে কমিটি অপহৃত ব্যক্তিদের জীবিত উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অবহেলা বা গাফিলতি ছিল কি না- কমিটিকে তাও খতিয়ে দেখতে বলেছে আদালত। ভারতে গিয়ে নূর হোসেনকে নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা খুব সহজ হবে না মন্তব্য করে মহীউদ্দিন বলেন, এরসঙ্গে অনেকগুলো প্রক্রিয়া জড়িত। ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হলে তার সাক্ষ্য ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ায় কোনো সমস্যা দেখছেন না তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব। এখন পর্যন্ত পৌনে চারশ মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষ পর্যায়ে। আর চার-পাঁচ জনের সঙ্গে কথা বলতে হতে পারে। “আমরা এখন খুনের মোটিভ উদ্ধারের চেষ্টা করছি। খুনের পেছনে কারা জড়িত প্রমাণসহ তা চিহ্নিত করতে দেরি হচ্ছে। অনুমান না করে আমরা আরো নিশ্চিত হতে চাই।” মহীউদ্দিন বলেন, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত এই ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব প্রতিবেদন এসেছে, তার বেশিরভাগই সঠিক। তবে নারয়াণগঞ্জের তখনকার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের গাফিলতি পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম গত ২৭ এপ্রিল অপহৃত হন। পরে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণের ঘটনার পরপরই নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা করা হয়। নূর হোসেন র‌্যাবকে ছয় কোটি টাকা দিয়ে সাতজনকে হত্যা করিয়েছেন বলে নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন। শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দিলেও অপহৃতদের লাশ উদ্ধারের পর লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান নূর হোসেন। পরে দুই সহযোগীসহ তিনি পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন। র‌্যাবের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল
তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে নিজেদের ‘দোষ স্বীকার’ করে আদালতে তারা জবানবন্দিও দেন। এই সাত খুনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিন হায়ত আইভীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তদন্ত কমিটি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *