Connect with us

খেলাধুলা

অন্তিম নিদ্রায় শায়িত ফুটবল সম্রাট পেলে

Published

on

পেলে নামের রূপকথার যাত্রা ঠিক যেখানে শুরু হয়েছিল, ঠিক সেখানেই অন্তিম নিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি। সান্তোসের ভিলা বেলমেরো স্টেডিয়ামের পাশেই অবস্থিত ১৪ তলার বিশাল সমাধিস্থল নেক্রপল একুমেনিকায় মঙ্গলবার ফুটবলের রাজা পেলেকে সমাধিস্থ করা হয়। সান্তোস এফসির সামনে ভিড় করা পেলে ভক্তদের আবেগঘন বার্তা ছিল অনেক। পেলের প্রিয় ক্লাব সান্তোস এফসির স্টেডিয়ামে ব্রাজিলীয় ভাষায় লেখা: ‘দীর্ঘজীবী হোন রাজা’। সবার চোখ একবার হলেও সেখানে আটকে গেছে।

ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ে হার মেনে গত বৃহস্পতিবার ৮২ বছর বয়সে অন্যলোকে পাড়ি জমান ব্রাজিলকে তিনটি বিশ্বকাপ জেতানো সর্বকালের সেরা ফুটবলার। সেই থেকেই কাঁদছে ব্রাজিল, কাঁদছে গোটা ফুটবল-বিশ্ব। প্রিয় ক্লাব সান্তোসের মাঠ ভিলা বালমিরো থেকে যখন তার মরদেহ বের করা হচ্ছিল, সেখানে প্রায় ২০ লাখের বেশি মানুষ অপেক্ষায় ছিল তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। এরপর শতবর্ষী মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ১৪ তলাবিশিষ্ট বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সমাধিস্থল মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকায় ফুটবলের রাজা চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন।

ভিলা বেলমেরো স্টেডিয়ামে পেলের কফিনবন্দি নিথর দেহ রেখে সোমবার সকালে শুরু হয়েছিল ২৪ ঘণ্টাব্যাপী শেষ শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত লাখো মানুষ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অশ্রুভেজা চোখে শেষশ্রদ্ধা জানান ফুটবল সম্রাটকে। মঙ্গলবার সকালে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানকে শ্রদ্ধা জানানোর পর শুরু হয় শেষযাত্রা।

শেষকৃত্যে যোগ দিতে আসা পেলের ভক্তদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৫৯ বছর বয়সী কার্লোস মোতা। রিও ডি জেনিরো থেকে ৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি পাড়ি দিয়ে তিনি পেলেকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে আসেন, ‘ব্রাজিলের জন্য পেলে যা করেছেন, তা ছোটবেলা থেকেই আমাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। সে আমাদের জাতীয় নায়ক। আমি সব সময়ই আমার ছেলেকে একটি কথাই বলি, আমার কাছে তিনটি অবিসংবাদিত তথ্য আছে-বলের আকার গোল, ঘাসের রং সবুজ এবং পেলে সর্বকালের সেরা ফুটবলার।’

সাদা রঙের ফায়ার ট্রাকে ব্রাজিলের পতাকায় মোড়া পেলের কফিন ঘোরানো হয় সান্তোসের বিভিন্ন রাস্তায়। ফায়ার ট্রাকের ওপরে করে কফিন নেওয়া ব্রাজিলের একটি ঐতিহ্য। এর আগে ১৯৮৩ সালে মারা যাওয়া পেলের সতীর্থ গারিঞ্জার কফিনও ফায়ার ট্রাকে করে বহন করা হয়।

শবযাত্রার সময় রাস্তার দুপাশে ভিড় জমিয়ে পেলেকে শেষবিদায় জানান সাধারণ মানুষ। ভেজা চোখেই পেলেকে নিয়ে গান গাইতে দেখা যায় অনেককে। পেলেকে সমাধিস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় তার পৈতৃক বাড়ির সামনে দিয়ে। যেখানে থাকেন তার শতবর্ষী মা সেলেস্তে আরান্তেস। আগের দিন ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভিলা বেলমেরোয়। পেলেকে সমাহিত করার আগে ধর্মীয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুধু তার পরিবারের সদস্যরা।

ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাব থেকেও প্রতিনিধি দল গিয়েছিল পেলের শেষকৃত্যে অংশ নিতে। তারা সহমর্মিতা জানিয়েছে পেলের স্ত্রী মার্সিয়া আওকি, তিন সন্তান এদিনহো, সিলেস্তে ও কেলি নাসিমেন্তোকে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *