অস্ত্র ব্যবসায় আমেরিকার জন্য হুমকি চীন
ক্ষুদ্র অস্ত্র থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র নির্মাণের দিকে চীনের এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে সেই ২০১১ সালে। সে বছর দেশটি মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কাছে ড্রোন বিক্রি করেছে। ২০১৪ সালে আলজেরিয়াকে তিনটি ফ্রিগেট সরবরাহ করেছে চীন। উপকূল রক্ষা ও সাবমেরিন যুদ্ধে ব্যবহারযোগ্য এসব ফ্রিগেট সরবরাহের আদেশ চীন পেয়েছিল ২০১২ সালে মালেয়াশিয়ায় আর্মস এক্সপোতে। এর এক বছর পরে আমেরিকা, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে চীনের কাছ থেকে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনে তুরস্ক। তুরস্কের এ পদক্ষেপে হতচকিত হয়ে যায় বিশ্বের প্রধান অস্ত্র রফতানিকারক দেশগুলো। গত বছর মার্চে প্রকাশিত স্টকহোমের ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকা ও রাশিয়ার পর বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে চীন। প্রতিদ্বন্দ্বী রফতানিকারক দেশগুলোর তুলনায় চীনের অস্ত্র সস্তা। তবে এ সব অস্ত্র আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো উন্নত মানের না হলেও বেশ চলনসই । আগামী এক দশকের মধ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্রের বাজারে পশ্চিমা ও রাশিয়াকে পেছনে ফেলে চীন ও ভারতের অস্ত্র সয়লাব হয়ে যাবে। যেসব উন্নয়নশীল দেশগুলোর এক কালে কেবল শীতল যুদ্ধের সময়কার পুরানো অস্ত্র কেনার সক্ষমতা ছিল ভবিষ্যতে তারা অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান বা জাহাজ থেকে শুরু করে গাইডেড মিসাইল কিনতে পারবে এবং এ জন্য তাদের অর্থনীতির ওপর তেমন চাপ পড়বে না। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মতো যতো দিন যাবে এসব অস্ত্রের দাম ততোই কমতে থাকবে আর মান বাড়তে থাকবে। অস্ত্র রফতানির ক্ষেত্রে চীনের পাশাপাশি ভারতের উত্থানও ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্র আমদানির তুলনায় তা নিজেদের দেশে উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে মার্কিন সেনাবাহিনীর অপ্রতিরোধ্যতার যুগ শেষ হতে যাচ্ছে। কারণ স্বস্তায় অত্যাধুনিক অস্ত্র পাওয়ার কারণে ক্ষুদ্র দেশগুলোর প্রতিরক্ষা জোরদার হয়ে উঠেছে। এর ফলে ভবিষ্যতে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার না করে আমেরিকা আগ্রাসন চালাতে পারবে না ।