ইরান ইস্যুতে ইসরায়েল -যুক্তরাষ্ট্র বাগযুদ্ধ
নেতানিয়াহু ও ওবামার কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরতে চলেছে কিনা বলা যায় না, তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের মধ্যে একদফা বাগযুদ্ধ যে হয়ে যাচ্ছে এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। বিষয়বস্তু ইরান। ইরান সম্প্রতি সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছে। যা দেখে সন্ত্রস্ত বোধ করছে ইসরায়েল, দুষছে যুক্তরাষ্ট্রকে। নেতানিয়াহুর ভাষ্য, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক অগ্রগতি সম্পর্কে খুব বেশি গা করছে না যা একান্ত প্রয়োজনীয়। এদিকে মার্কিন প্রশাসন থেকেও ছেড়ে কথা বলা হয়নি। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা সুজান রাইস বলেছেন, ইসরায়েলের এ ধরনের মন্তব্য দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্যে যথেষ্ট। রাইস ছাড়াও এমনটা মনে করছেন আরও অনেক সিনেটরই। কেউ কেউ এটিকে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দলগত কোন্দলে সুবিধে নেয়ার সুযোগ তৈরির উপায় হিসেবে দেখছেন। তবে নিজের বক্তব্যের ওপর অটল আছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামেন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহু বলেন তিনি হোয়াইট হাউজ এবং বারাক ওবামাকে শ্রদ্ধা করেন এবং এমন সংবেদনশীল বিষয়ে নীতিনির্ধারণে তার ওপর যথেষ্ট আস্থা রাখেন। কিন্তু ইরানের পারমাণবিক তৎপরতায় যখন তার দেশ ইসরায়েল অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংশয়ে ভুগছে তখন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় তিনি সন্তুষ্ট থাকতে পারছেন না। তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, নিজেদের অস্তিত্ব সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে তিনি যে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দ্বিতীয়বার ভাববেন না। তার এ সমস্ত বক্তব্যের বিপরীতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও ব্যক্ত করেছেন তার প্রতিক্রিয়া। তার ভাষ্য মতে, ইরানের পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে এখনই এমন মন্তব্য করার ইসরায়েলের জন্যে রীতিমতো শিশুসুলভ। তিনি মনে করেন সর্বশেষ জেনেভা সম্মেলনে এই পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে ইরানের সঙ্গে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি কিংবা পরমাণু সমৃদ্ধকরণের পথে ইরান নিজেদের ইতিবাচকভাবে সংযত করছে। নেতানিয়াহুর মতামতের বিচিত্র প্রতিক্রিয়া পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মহলে। যেহেতু নেতানিয়াহুর বক্তব্য মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি কটাক্ষ করে, সুতরাং মার্কিন সিনেটের প্রধান স্পিকার জন বোয়েনার নেতানিয়াহুকে কংগ্রেসের অধিবেশনে বক্তব্য রেখে অভিযোগ উপস্থাপন করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নেতানিয়াহু এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে মুখোমুখি বাকযুদ্ধে নামতে যাচ্ছেন ইসরায়েলি ও মার্কিন কূটনীতিকরা। আশু বক্তব্যে ইরান ইস্যু ছাড়াও ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠিদের বিষয়ে নীতিনির্ধারনী আলাপের আলাপের আশা রাখবেন নেতানিয়াহু।