Connect with us

Highlights

ঈশ্বরগঞ্জে হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘরে সশস্ত্র হামলা, আহত ১০, গুরুতর ৪

Avatar photo

Published

on

বুধবার দুপুরে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িঘরে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় হেযবুত তওহীদের দশ জন সদস্য আহত হয়। চারজনের অবস্থা গুরুতর। কয়েকদফা হামলার ফলে গোটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন উচাখিলা ইউনিয়নে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন থেকে একটি উগ্রবাদী চিহ্নিত ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী অপপ্রচার গুজব প্রচার এবং উস্কানি দিয়ে আসছিল। এরা কখনও ইত্তেফাকুল ওলামা পরিষদ, কখনও তওহীদী জনতা, ঈমান আকিদা সংরক্ষণ পরিষদ ইত্যাদি নামে-বেনামে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আসছিল। এলাকার সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করে তোলার জন্য তারা ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে একটি মিথ্যা হ্যান্ডবিল উচাখোলা বাজারে কিছু শিশু কিশোরদের হাতে দিয়ে এলাকায় ছড়িয়ে দেয়। হ্যান্ডবিলটিতে হেযবুত তওহীদের নামে কিছু ধর্মীয় স্পর্শকাতর কথা চালিয়ে দেওয়া হয় যা আদৌ হেযবুত তওহীদের বক্তব্য নয়। উচাখিলা বাজারে বিভিন্ন দোকানপাটের দেওয়ালে হ্যান্ডবিলটি পোস্টার হিসাবে লাগাতে থাকে।

এলাকায় এ বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। বিষয়টি গুরুতর বিবেচনায় হেযবুত তওহীদের সদস্যরা দ্রুত ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অবগত করে এবং উক্ত ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। অভিযুক্তরা হচ্ছে মো. আলী আক্তার মুন্সী (৪৫), আব্দুস সাত্তার পীর (৬৫), মো. মকবুল হোসেন (৩৫) সঙ্গীয় ৩০/৩৫ জন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তাফিনুর রহমানকে বিষয়টির ভয়াবহতা কতদূর যেতে পারে তা বুঝিয়ে বলা হয়। এ ধরনের ষড়যন্ত্র করেই অতীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের উপর হামলা করা হয় ও পাঁচজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে বলে আশ্বস্ত করে। কিন্তু ওরা কী ভয়াবহ ঘটনা ঘটাতে পারে পুলিশ সম্ভবত তা অনুধাবন করতে পারে নি।

গত মঙ্গলবার সাড়ে এগারোটায় দিকে ‘উচাখিলা পরিবার’ নামক একটি ফেসবুক গ্রুপে একটি ব্যানার পোস্ট করা হয় যাতে বুধবারে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিলে যোগদানের জন্য আহ্বান করা হয়। ব্যানারটিতে আয়োজনকারী হিসাবে ‘ইত্তেফাকুল ওলামা, উচাখিলা’ এর নাম উল্লেখ করা হয়। থানায় বিষয়টি অবগত করা হলে থানা থেকে তাদেরকে মিছিল করতে নিষেধ করা হয় না। বলা হয় যে তারা শুধু শান্তিপূর্ণ মিছিল করবে, কোনো সমস্যা হবে না।

প্রকৃতপক্ষে এই সমাবেশটি ছিল হামলা করার প্রস্তুতিমূলক সমাবেশ। হামলাকারীরা নির্দিষ্ট সময়ে জড় হয়ে হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকে এবং লোকদেরকে আক্রমণের জন্য চরমভাবে উত্তেজিত করতে থাকে। একটা পর্যায়ে জিডিতে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নেতৃত্বে হেযবুত তওহীদ সদস্য হেলালুদ্দিনের বাড়ির দিকে মিছিল নিয়ে যেতে থাকে আর শ্লোগান দিতে থাকে- হেযবুত তওহীদের আস্তানা গুড়িয়ে দাও পুড়িয়ে দাও। মিছিলে প্রায় দুই থেকে আড়াইশো উগ্রবাদী যোগ দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিশের একজন দারোগা উপস্থিত থাকলেও তাকে হামলাকারীরা পাত্তাই দেয় না।

এরই মধ্যে আক্রমণ শুরু হয়। আক্রমণে তারা রাম দা, কিরিচ, রড, লাঠি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে অবস্থানরত হেযবুত তওহীদের নির্দোষ নিরপরাধ নিরস্ত্র ও সদস্যদের উপর নৃশংসভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, হামলাটি সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে করা হয়। এর পটভূমি রচনা করা হয় পনেরো দিন আগে থেকেই। হেযবুত তওহীদের সদস্যরা নিজেদের আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও অন্তত দশজন আহত হন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। তারা সবাই হাসপাতাল ভর্তি। তাদের প্রত্যেকের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত। পরবর্তীতে ধর্মব্যবসায়ীরা আরো কয়েকদফা হামলা চালায়। তারা বাড়িতে থাকা কয়েকটি মোটর সাইকেল ও আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। হেযবুত তওহীদের সদস্যরা নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে থানার ওসি ঘটনাস্থলে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। অথচ সকালে ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে বে-আইনী সমাবেশটি করতে না দিলেই এই ঘটনা তারা ঘটাতে পারত না। বর্তমানে তারা পুনরায় হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়ে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ঈশ্বরগঞ্জের হেযবুত তওহীদ সভাপতি মো. নাজমুল ইসলামের বড় ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বর্তমান চেয়ারম্যান এ ঘটনাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন বলে জানা যায়। এর প্রমাণ হচ্ছে, সাবেক চেয়ারম্যানের বাড়িতেও হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। বর্তমান চেয়ারম্যান ধর্মব্যবসায়ীদের উস্কানি ও প্রশ্রয় প্রদান করছেন।

উক্ত ঘটনা প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ জেলা আমির হাবিবুর রহমান বলেন, ধর্মব্যবসায়ী উগ্রবাদী গোষ্ঠী সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন থেকে এই ঘটনা ঘটানোর পটভূমি রচনা করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা যেভাবে এ আন্দোলনের সদস্যদের উপর বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়, এখানেও তারা একই কাজ করেছে। মিথ্যা হ্যান্ডবিল বিতরণ, উস্কানিমূলক পোস্টারিং, ফেসবুকে উস্কানিমূলক প্রচারণা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বে-আইনী সমাবেশ এ সবকিছু কী ইঙ্গিত দেয় তা যে কোনো বিবেকবান মানুষ বুঝবে। কাজেই আমাদের দাবি হচ্ছে,

১. দ্রুত হামলাকারীদের সবাইকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
২. মিথ্যা হ্যান্ডবিলের রচয়িতাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।
৩. লুটপাট করা মোটর সাইকেল ও অন্যান্য মালামাল দ্রুত উদ্ধার করা হোক।
৪. উচাখিলার নির্দোষ নিরপরাধ আইন মান্যকারী সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

অধিকার আদায়ে শেরপুর প্রেসক্লাবে তালা দিয়ে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন

Avatar photo

Published

on

শেরপুর প্রতিনিধি:

শেরপুর প্রেসক্লাবের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলসহ ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে অধিকার বঞ্চিত জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা শেরপুর প্রেসক্লাবে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছে। পরে পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে উভয়পক্ষ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জেলায় কর্মরত শতাধিক সাংবাদিক প্রথম দিনের অবস্থান কর্মসূচী তুলে নেয়।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, পেশাজীবী সংগঠন পেশার মান উন্নয়ন, নিপীড়িত কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের বিপদে সহযোগিতা এবং পেশায় কর্মরতদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করার কথা। কিন্তু প্রেসক্লাবের মত একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান কিছু ব্যক্তির জন্য কুলুষিত হচ্ছে। যা এই শেরপুরের জন্যেও লজ্জাজনক। দেশের প্রথম সারির মিডিয়াতে কাজ করা কিছু সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হিংসা বসবত হয়ে কালো তালিকার ঘটনাও ঘটিয়েছে। এছাড়াও বিএনপি জামাত নেতৃবৃন্দের হাত থেকে প্রেসক্লাব মুক্ত করার দাবিও জানান তারা।

এসময় দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও মানবাধিকার সংস্থা আমাদের আইনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক নূরে আলম চঞ্চলের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার আদিল মাহমুদ উজ্জল, দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রফিক মজিদ, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মারুফুর রহমান মারুফ, দেশ রুপান্তর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শফিউল আলম সম্রাট, দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অপস), শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল সহ উভয়পক্ষের তিনজন প্রতিনিধি নিয়ে বৈঠক হয়। এসময় শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. শরিফুর রহমান, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জাল, মহিউদ্দিন সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফুর রহমান মারুফ ও বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরে আলম চঞ্চল বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হিসেবে আগামীকাল পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এছাড়াও পরবর্তিতে এ বিষয়ে জেলার শীর্ষ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকতা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে পরবর্তীতে বৈঠক করে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানা যায়।

Continue Reading

Highlights

কর্মচারী ‘নয়ন সিন্ডিকেটের’ দাপটে তটস্থ রমেক হাসপাতাল

Avatar photo

Published

on

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রকেম) হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনদের হয়রানি নতুন কিছু নয়। বিষয়টি সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী, রোগীর স্বজন, চাকুরি প্রত্যাশীদের হয়রানি, কথায় কথায় হাসপাতালের নিরীহ কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি, হাসপাতাল প্রশাসনকে দাপটের সাথে দাবিয়ে রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ‘নয়ন সিন্ডিকেট’র বিরুদ্ধে।

জানা যায়, নয়ন সিন্ডিকেটের প্রধান নয়ন হাসপাতাল থেকে বরখাস্ত হলেও ‘কর্মচারি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড’ এর সাধারণ সম্পাদক এর পদ ব্যবহার করে সব পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে জিম্মি করে রেখেছে। তার বিস্তর অপরাধের কাহিনী এখন ভুক্তভোগীসহ চিকিৎসাসেবীদেরও মুখে মুখে। এদের দৌরাত্মের নিকট অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন স্বয়ং হাসপাতালের বিদায়ী পরিচালক ডা. শরিফুল হাসানও। এক সাক্ষাতকারে এই নয়ন সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণ করে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সূত্র জানায়, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০টি ওয়ার্ড রয়েছে। যার প্রতিটি ওয়ার্ডে বহিরাগত লোকবল নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছে ওষুধের দালালিসহ সরকারি বরাদ্দকৃত ওষুধ ও সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি চুরি করার মোটা কমিশন হাতিয়ে নেয় নয়ন সিন্ডিকেট। এমন কি নয়নের সিন্ডিকেটের সদস্যরা হাসপাতালের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বহিরাগত মাদকসেবীদের দিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ডিউটি করান। যেসব মাদকসেবীদের দিয়ে অবৈধভাবে ডিউটি করান দিন শেষে তাদের হাজিরা না দিয়ে উল্টো তাদের কাছ থেকে নেয়া হয় সারাদিনের কু-কর্মের ভাগ বাটোয়ারার হিস্যা।

সেবাগ্রহীতা, স্বজন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নয়ন ও তার গ্রুপের লোকেরা একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজদের সামান্য বিষয় নিয়ে লাঞ্ছিত, রোগী ও চিকিৎসাসেবীদের সাথে দুর্ব্যবহার, ওষুধ-সরঞ্জামাদি চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এছাড়ও হাসপাতাল প্রশাসনকে দাপটের সাথে দাবিয়ে রাখাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা নয়ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংঘঠিত হয় না। বরখাস্ত হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালের কর্মচারি ইউনিয়নের সাইনবোর্ড এর খুঁটির নামে হাসপাতালের সব পর্যায়ের কর্মকাণ্ডকে জিম্মি করে রাখছে তার সিন্ডিকেট। প্রতিনিয়ত এই সিন্ডিকেটের নানামুখি অনৈতিক কর্মকাণ্ডে অসহায় ও উদ্বিগ্ন রমেক কর্তৃপক্ষও। এদের হয়রানি ও অত্যাচারের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না বলেও জানান অনেক ভুক্তভোগী।

আরও জানা যায়, নয়ন চাঞ্চল্যকর হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামি। হাসপাতালেও অভ্যন্তরে হত্যা, হত্যার উদ্দেশে মারপিট, গুরুত্বর জখম, চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা ও হুকুমদাতার অপরাধে আসামী নয়নের বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিনের কোতয়ালী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও নানাবিধ ন্যাক্কারজনক অপরাধ অব্যাহতভাবে সংঘটিত করে আসছে এরা। নয়ন সিন্ডিকেটের এমন অপকর্ম রোধে দক্ষ প্রশাসনিক দায়িত্বের কোনো পরিচালক রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে বেশিদিন টিকতে পারেন না বলে একটি কথা এখন কর্মচারীদের মুখে মুখে প্রচলিত হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি বদলি হওয়া রমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান সরকারের নির্দেশে হাসপাতালে আউর্সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কিছুসংখ্যক জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। বিদায়ী ওই পরিচালককে সেই নিয়োগ নয়ন সিন্ডিকেট মনোনীত ঠিকাদারকে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন যা বিধিবহির্ভূত হওয়ায় হাসপাতাল প্রশাসন তা মানেন নি। পরে তাদের মনগড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জনবল নিয়োগ বানিজ্যের সুযোগ করে না দেয়ায় সেই সূত্রপাত ধরে তৎকালীন পরিচালকের বিষয়ে নানা মিথ্যা অপবাদ তুলে অযৌক্তিক আন্দোলনের ধোয়া তুললে পরিচালক বদলি হন।

কথা বলতে চাইলে বিদায়ী পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান টেলিফোনে জানান, ‘যুদ্ধে আমি পরাজিত সৈনিক। অনেক চেষ্টা করেও রমেক হাসপাতালের দীর্ঘদিন থেকে গড়ে ওঠা দুর্নীতিবাজ অপশক্তি নয়ন সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছি। যতদিন এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে হাপাতালকে মুক্ত করা না হবে, ততোদিন উত্তরাঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্ছিত হতেই থাকবে।’

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে বরাদ্দ ছাড়াই সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নয়ন একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দ রমেক ক্যাম্পাসের ১০নং কোয়ার্টারে থাকেন কিভাবে? এছাড়াও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) সহ গৃহস্থালি নানা রকম ইলেক্ট্রিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে সরকারি বিদ্যুৎ অপচয় করছেন নির্বিঘ্নে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে কর্মচারীদের মধ্যেও কানাঘোষা চলছে কিছুদিন ধরে।
এ বিষয়ে রমেক হাপাতালের কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নয়ন এর সাক্ষাতকার নিতে চাইলেও তাদের দেখা মেলেনি। পরে টেলিফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে অসুস্থতার কথা বলে ফোন কেটে দেন নয়ন। কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি শাহিনের সাথে রোববার (২৮ মে’ ২৩) তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।

হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী জানান, দীর্ঘদিন থেকে জিইয়ে রাখা অযুত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, সময় ও সবার সহযোগিতা পেলে হাসপাতালের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবেন বলে তিনি আশাবাদী। তবে সংঘবদ্ধ নয়ন সিন্ডিকেটের ব্যাপারে বলেন, আমি সদ্য যোগ দিয়েছি। এখনও ভালো করে বুঝে উঠতে পারিনি। যথাযথ অভিযোগ পেলে দায়িদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Continue Reading

Highlights

শেরপুরে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন

Avatar photo

Published

on

শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানের স্ত্রী কর্তৃক আদালতে দায়ের করা যৌতুক মামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। ২৭ মে শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার পোড়ার দোকান‘থই থই কফি পার্ক’ এ ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে জানায়, আমি একজন নিরিহ ও সহজ সরল মানুষ। জনগন আমাকে উপজেলা নির্বাচনে বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম হজব্রত পালনের জন্য সৌদি যাবার প্রাক্কালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য গত ১৫ মে সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে ১১ ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা এবং আমার মধ্যে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে মাত্র ৩ ভোট পেয়ে আমার সাথে পরাজিত হয়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিনই আমাকে এবং উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং আমাকে নানা ভাবে হয়রানী করার হুমকি দেন।

এসময় শাপলা আমাকে হুমকি দিয়ে জানায়, আমি একজন সাংবাদিক নেতাও, তাই আমাকে পরাজিত করার ফল পেতে হবে। এর পর ওই ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক শাপলা আমার পেছনে লেগে আছে। আমার স্ত্রী তানজিলা আক্তারের সাথে কিছু দিন যাবৎ বনিবনা হচ্ছিলো না। সেই সুযোগে ভাইস চেয়ারম্যান শাপলা আমার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে আমার বিরুদ্ধে ২৪ মে আদালতে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করে। এরপর শাপলা আমার স্ত্রীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় কিছু সাংবাদিকদের দিয়ে ভিত্তিহীন ও মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করেন। সমাজে এতে আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা নিজে একাধারে জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এমপিও ভুক্ত একটি মাদরাসার শিক্ষক হয়ে সকল স্থান থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে অনিয়ম ও দুর্নিতির আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া তিনি জামায়াত পরিবারের সদস্য হয়ে আওয়ামীলীগে নাম লিখিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যাচ্ছে। তার মরহুম পিতা সুরুজ্জামান একজন তালিকাভুক্ত রাজাকার ছিলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, এযাবৎ কালে আমার বিরুদ্ধে কোন অপরাধ কার্মকান্ড ও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। স্থানীয় জনগনের সর্বদা পাশে থাকার কারণে এলাকায় আমি গরিবের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছি। অতএব আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা সত্য প্রমান করতে পারবে না। আমার স্ত্রী একজন অর্থলোভি এবং ব্লেকমেইলার। সে আমাদের অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ভিডিও ভাইরাল করার চেষ্টা করে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করেছে। তাই আমার বিরুদ্ধে প্রকাশিত মিথ্যে সংবাদের প্রতিবাদ জানাই।

অভিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান শাবিহা জামান শাপলা সাংবাদিকদের জানায়, আমি ভাইস চেয়ারম্যান মিজানের স্ত্রীর বিষয়ে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার শালিস-দরবার করেছি। সেকারণে তিনি ন্যায় বিচারের জন্য তার ¯^ামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে প্রতিকার চেয়ে। সেজন্য আমি নারী নেত্রী হিসেবে তাকে সহযোগীতা করেছি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অসত্য, ভিত্তহীন।

এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের স্ত্রী তানজিনা আক্তার জানায়, আমি কারো প্ররোচনায় মামলা করিনি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগও মিথ্যে। ছবি সংযুক্ত

Continue Reading