উপবৃত্তি বিরানব্বই, উপস্থিতি পঁচিশ
শ্রীবরদী প্রতিনিধি, শেরপুর:
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ৬৩নং পুটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বিরানব্বই জন। কিন্তু উপস্থিতি পনের থেকে পঁচিশ জন। এভাবেই সরকারের উপবৃত্তির অর্থ আত্মসাৎ করছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিদর্শক। এ অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা।
সরেজমিন ঘুরে ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার ৬৩নং পুটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৮৭ সালে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবী হোসেন শিক্ষকতা করে আসছেন। তিনি নামে বেনামে শিক্ষার্থীদের নাম হাজিরা খাতায় তুলে বিদ্যালয় পরিচালনা করাসহ নানা দুর্নীতি অনিয়ম করে আসছেন। এমনকি মাসের বেশির ভাগ সময় তিনি থাকেন অনুপস্থিত। অবশিষ্ট সময় বিদ্যালয়ের উপস্থিত হলেও উপস্থিতির সময় বেলা ১১টা থেকে ১টার মধ্যেই ছুটি হয় বিদ্যালয়টি। এভাবে কাগজে কলমে গোজামিল দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করায় এলাকায় বেড়েছে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বঞ্চিতের হার।
অভিযোগে প্রকাশ, গত বুধবার ওই বিদ্যালয়ের চলতি শিক্ষাবর্ষের বিরানব্বই জন শিক্ষার্থীর মাঝে ছয় মাসের উপবৃত্তি প্রদান করা হয়। বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবী হোসেন ও সহকারি শিক্ষক আব্দুল গফুর (বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংখ্যাই দুইজন)। এসময় প্রধান শিক্ষক জানান, উপবৃত্তি বিতরণের কারণে বিদ্যালয়টি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা এখানে উপবৃত্তি নিতে আসবে।
জানা গেছে, উপবৃত্তি বিতরণের আগের দিন প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১শ’ করে টাকা নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক বলেন, অফিসকে ম্যানেজ করার জন্য এ টাকা নেওয়া হয়। গতকাল বেলা সাড়ে এগারোটায় ওই বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় মাত্র ১৫ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছে।
বিরানব্বই জনকে উপবৃত্তি দেয়া হয়েছে কিন্তু উপস্থিতির সংখ্যা এত কম এর কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জানান, এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থী কেজি স্কুলে পড়াশোনা করে। এজন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। অপরদিকে এলাকাটা গরিব। তাই কিছু এদিক সেদিক করে দরিদ্রদের নামে উপবৃত্তি দেওয়া হয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দেন।