বিবিধ

ওজন কমানোর উপায়গুলো আজই জেনে নিন

Published

on

রকমারি ডেস্ক:

ওজন কমানো যেমন খুবই কঠিন, তেমনি খুবই সহজও। এটা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি ও অভ্যাসের ওপরই নির্ভর করে। কেবল ওজন কমে যাওয়া নয়, চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ওজন ধরে রাখার চেষ্টা দীর্ঘ সময় মেদ বৃদ্ধি বন্ধ রাখতে সাহায্য করে। আন্তরিক প্রচেষ্টাই ভারসাম্যপূর্ণ ওজন ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। সর্বশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৬৬ দিন ক্ষতিকর অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলেই ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। ওজন কমানোর ২০ উপায় উপস্থাপন করা হলো।
১. পানি পানে দিন শুরু করুন। সকালে উঠেই পানি পান করুন এবং গোসল করে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ ধুয়ে ফেলুন। ওজন কমানোর সহায়ক হিসেবে পানি পেশীতে এবং রক্তে নতুন কোষ সৃষ্টিতে সাহায্য করে।
২. সকালে নাস্তা করুন। ভালো পরিমাণ নাস্তা আপনার ক্ষুধা কমিয়ে আনে এবং স্বাস্থ্যকর খাবারে আগ্রহ বাড়ায়। ভালো পরিমাণ নাস্তা গ্রহণে সারাদিন ফুরফুরে মেজাজ থাকে।
৩. খাদ্য তালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন। প্রোটিন হজম হতে অন্যান্য খাদ্যের তুলনায় বেশি সময় নেয়। ফলে পাকস্থলী খাদ্যশূন্য হতে বেশি সময় নেয়। একইসঙ্গে আদর্শ ওজন ধরে রাখতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. ফল খান। পানি এবং ফলের আঁশ আমাদের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে। ফল শরীর থেকে ক্ষতিকর চিনি অপসারণ এবং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে জুস করে নয়, আস্ত ফল খেতে হবে।
৫. খাবার তালিকায় মৌসুমি সবজি রাখুন। সবজির আঁশও খাবার হজম এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। যে কারণে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে চার ধরনের সবজি খাওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে সবজির সালাদ খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।
৬. বাড়িতে খান। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশি খাওয়ার কারণে মূলত আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়। কখনো কখনো স্বাস্থ্যকর খাবারেও অপ্রয়োজনীয় ক্যালরি যোগ হয়। এক সপ্তাহে যদি পাঁচবার আপনার বাইরে খাওয়ার অভ্যাস থাকে, একবার কমিয়ে মাত্র চার বারে নিয়ে এলে পরবর্তী এক সপ্তাহে আপনি পার্থক্য ধরতে পারবেন।
৭. গম থেকে উৎপন্ন খাবার বেশি খান। কারণ এতে পুষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি।
৮. ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সুপ এবং সালাদ খাওয়া খুবই নিরাপদ। তবে অবশ্যই ক্রিম এড়িয়ে চলতে হবে।
৯. বাড়ির খাবারে মাখন-পনির ইত্যাদি কমিয়ে আনলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। তবে শক্তির জন্য আমাদের এ খাবারগুলোও দরকার। ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে রয়েছে এমন চর্বিযুক্ত খাবার, ওলিভ ওয়েল, বাদাম বাড়িতে রাখুন।
১০. খাবার তালিকায় বিশেষভাবে বাদাম যোগ করুন। বিস্কুটের পরিবর্তে বাদামের তুলনায় ভালো কোনো খাবার হতেই পারে না। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর চর্বির ক্ষেত্রেও বাদামের তুলনা হয় না। ক্ষুধা নিবারণের পাশাপাশি নাস্তা হিসেবেও এটি আদর্শ খাবার। বাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা পেশী গঠনে সাহায্য করে। এছাড়াও বাদাম আমাদের শরীরে নানা ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়।
১১. পোরশন-কন্ট্রোলড ডায়েট (খাবারের চাহিদা, ক্যালরি প্রভৃতি হিসাব করে গ্রহণ)। ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবার একেবারে ছেড়ে দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু আবার বেশিও খাওয়া যাবে না। তাহলে কী করতে হবে? কোন খাবারের ক্যালরি কী পরিমাণ এবং আপনার চাহিদা কেমন তা পরিমাপ করে খেতে হবে।
১২. চিনি জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন। এ ধরনের পানীয় অপ্রয়োজনীয়ভাবে শরীরে ক্যালরি যোগ করে এবং যেটা চর্বিতে পরিণত হয়ে স্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে গ্রিন টি, নারকেলের পানি ও মিষ্টি নয় এমন কোনো পানীয় পান করতে পারেন।
১৩. দ্রুত ওজন কমাতে (ফ্যাড ডায়েট) যাবেন না। এ ধরনের খাবারে আপনার শরীরও হঠাৎ দুর্বল হয়ে যাবে।
১৪. খাবারে কৃত্রিম স্যাকারিন ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। আপনি যতই চিনিমুক্ত খাবার খান না কেন, সেসবে যদি অন্যান্য ক্যালরিযুক্ত খাবার খান তবে ওজন বাড়তেই থাকবে। তাই যেসব খাবার চিনির বিকল্প ব্যবহার করে সেসব প্রক্রিয়াগত খাবারের ব্যাপারেও সাবধানতা জরুরি।
১৫. নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম করুন। অনেকে ওজন কমানোর জন্য ডায়েটের দিকে নজর দেন। আসলে নিয়মিত কাজ করলে ডায়েটের প্রয়োজনও ততটা হবে না। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে সবসময়ই চর্বিমুক্ত থাকতে সাহায্য করে।
১৬. অ্যালকোহল জাতীয় পানির লাগাম টানুন। কারণ এটা আপনাকে মুটিয়ে দেবে। অ্যালকোহলে ততটা ক্যালরি না থাকলেও খাবারের প্রক্রিয়ায় পড়ে এটি আপনার শরীরে ক্যালরির যোগান দিতে থাকে।
১৭. মাঝে মাঝেই বেড়াতে বেরিয়ে পড়–ন। বেড়ানোর মানেই এই নয় যে, আপনি সেখানে গিয়ে যা ইচ্ছে তা খেতে পারবেন। বেড়াতে গেলে আপনি তখন যেকোনো কাজে নিয়মিত হবেন, যেটা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিয়মে সহায়ক হবে।
১৮. লবণেরও লাগাম টানুন। অনেকে হয়তো জানেন না, লবণ কেবল চিনিই নয়, এটা ওজন বৃদ্ধির একটা বড় উপাদানও।
১৯. বাড়ি থেকে খেয়ে বের হোন। অল্প হলেও বাড়ি থেকে খেয়ে বের হওয়াটা জরুরি। কারণ এক জরিপে দেখা গেছে, যারা কোনো অনুষ্ঠানে যায়, তারা ক্ষিদে বেড়ে যাওয়ার কারণে অনুষ্ঠানে যেয়ে অনেক বেশি খেয়ে ফেলে। যার কারণে ওজন বেড়ে যায়।
২০. সর্বোপরি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। অনেকেরই ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন পড়ে। চাহিদানুযায়ী ঘুম না হলে মেজাজ যেমন বিগড়ে থাকে, তেমনি শরীরেও সার্বিক অস্বাভাবিকতা কাজ করে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কারও পেট ভর্তি থাকলেও ক্ষিদে লাগে, যে কারণে সে ব্যক্তি অনেক খেতে বাধ্য হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version