Connecting You with the Truth

ওসংগীতশিল্পে বলিউডে প্রতারক চক্রের নজর

music-equipment-1920x1080
বিনোদন ডেস্ক:
দেশের সংগীত শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতীয় একটি প্রতারক চক্র সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে নবীন শিল্পীদের নিয়ে বলিউডের ছবিতে গান গাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে যাচ্ছেন এই চক্রটি। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় প্রতারক চক্রের সদস্যরা নবীন শিল্পীদেরকে বলিউডের ছবিতে গান গাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ রুপি নিচ্ছে। এমনকি মুম্বাইয়ে যাতায়াতের ভাড়া ও থাকা-খাওয়ার ব্যয় বহন করতে হচ্ছে শিল্পীদেরই। দুই থেকে আড়াই বছর আগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ‘পেয়ার কা পাঙ্গা’ নামের একটি ছবির সংগীত পরিচালনা করেছিলেন শুভ্রদেব। কিন্তু এ সম্পর্কে পরবর্তী সময়ে আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ব্যান্ডসংগীত শিল্পী হাসানও হিন্দিতে পুরো একটি অডিও অ্যালবাম তৈরি করেছিলেন মুম্বাই থেকে বের হওয়ার প্রতিশ্র“তি পেয়ে। কিন্তু এটাও বাস্তবে রূপ নেয়নি। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে মুম্বাই গিয়ে দুটি ছবির গান গেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল। তিনি জানান, নেহাল দত্ত পরিচালিত ‘যাব সে মিলি হ্যায় উয়ো’ ছবির জন্য এসআর ভারতীর লেখা ‘ওয়াহ খুদা’ শিরোনামের একটি গান গেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া গোবিন্দ প্রোডাকশনের নাম চূড়ান্ত না হওয়া একটি ছবিতে ‘তেরে লিয়ে’ শিরোনামের একটি গান নিজের সংগীতায়োজনে গেয়েছেন ইমরান। মুম্বাইয়ে এগুলোর রেকর্ডিং হয়েছে। ইমরানকে বলিউডে গান গাওয়ানোর ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন শ্রীপ্রীতম ও জিৎ ভাদুড়ি। ইমরান জানান, শ্রীপ্রীতমের সঙ্গে আগে থেকে তার পরিচয় ছিল। গানের রেকর্ডিং নিয়ে তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে ইমরান ফোনে যোগাযোগ করেন তার সঙ্গে। তিনি তাকে স্টুডিওতে যেতে বলেন। কয়েকবার গাওয়ার পরই স্টুডিওর সবাই ইমরানের গায়কী পছন্দ করেন। কিন্তু ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা গেছে, বলিউডের ছবিতে অন্যান্য দেশের কণ্ঠশিল্পীদের গান গাওয়ানোর ক্ষেত্রে মানা হয় কিছু নীতিমালা। এর মধ্যে অন্যতম সংশ্লিষ্ট প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তাদের নির্বাচিত শিল্পীকে একটি চিঠির মাধ্যমে প্রস্তাব দেয়। ওই চিঠির শর্তাবলীতে শিল্পীর সম্মতি থাকলে নির্মাতাদের সঙ্গে শিল্পীর ফোনালাপ হয়। অতঃপর দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক ও আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়। সবশেষে স্টুডিওতে গানে কণ্ঠ দিতে যান শিল্পী। বলিউডের ছবিতে এখন পর্যন্ত সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে রুনা লায়লা ও জেমসের গান গাওয়ার নজির রয়েছে। কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, শ্রীপ্রীতম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছেন। আসিফ আকবরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন তিনি। আসিফের ভাষ্যমতে, ‘আমাকে দিয়ে গান গাওয়ানো নাকি ছেলেটার স্বপ্ন।’ জানা গেছে, শ্রীপ্রীতম ও শ্রী ভাদুড়ি এখন পর্যন্ত কলকাতায়ও কাজ করতে পারেননি। যদিও বলিউডে স্থান পাওয়ার জন্য ইমরানের স্বপ্নটা পূরণ হবে এই আশা সংগীতশিল্পের। তিনি প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়েননি এই আশা তার ভক্তদেরও। ভারতীয় প্রতারক চক্রের এই প্রবণতা এটাই প্রথম নয়। ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভারতীয় প্রতারক চক্ররা শিল্পী পাঠাবে বলে প্রায় দুই কোটি রুপি হাতিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ এসব লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো কাগজপত্রে চুক্তি হয় না। দেশের সংগীত শিল্পে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু মেধাবী নবীন শিল্পী পরিচিতি পেয়েছেন। ভারতীয় প্রতারক চক্র তাদেরকে লক্ষ্য রেখে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তাই শিল্পীদেরকে এসব প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সুধীজনেরা।

Comments
Loading...