কোন অপৃতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হলো ছাত্রসেনার হরতাল
স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে ইসলামী ছাত্রসেনার আধা বেলা হরতাল। ইসলামী ফ্রন্ট নেতা নুরুল ইসলাম ফারুকীর খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সারা দেশে সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচিতে দেশের কোথাও বড় কোনো গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। তবে চাঁদপুরে হরতালকারীরা একটি ট্রেন প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখে। চট্টগ্রাম নগরীতে যানবাহন চলাচলেও বাধা দেয় তারা। সকাল থেকে দূর পাল্লার কোনো বাস না ছাড়লেও হরতালে রাজধানীতে গণপরিবহনের চলাচল ছিল অনেকটাই স্বাভাবিক। সদরঘাট থেকে লঞ্চ ও কমলাপুর থেকে ট্রেনও সময়মতো গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। গত ২৭ অগাস্ট রাতে নিজ বাসায় খুন হন ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুকী। হাই কোর্ট মাজার মসজিদের এই খতিব সুন্নি মতাবলম্বী সংগঠন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। একটি বেসরকারি চ্যানেলে ‘শান্তির পথে’ ও ‘কাফেলা’ নামে দুটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানেরও উপস্থাপনা করতেন তিনি। হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে শনিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়ার পর গতকাল আধা বেলার হরতাল ডাকে ইসলামী ফ্রন্টের সহযোগী সংগঠন ছাত্রসেনা। হরতালকারীরা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর গেণ্ডারিয়া, কল্যাণপুর, বিজয়নগর, মিরপুর ও মতিঝিলে মিছিল করে।পরে পল্টনে রাস্তার ওপর এক সমাবেশ থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সচিব মোহাম্মদ মাসউদ হোসাইন আল-কাদরী সমাবেশে বলেন, “সরকার জামায়াতকে বাঁচাতে চাইছে। হত্যাকাণ্ডের পর সরকোরের তরফ থেকে কোনো নিন্দা জানানো হয়নি। জামায়াতের পক্ষ থেকে যেভাবে মাওলানা ফারুকীর বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে তারাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।” ইসলামী ফ্রন্ট বৃহত্তর চট্টগ্রামে সাংগঠনিকভাবে বেশি সুদৃঢ়। ধর্মীয় আদর্শভিত্তিক সংগঠন আহলে সুন্নাতেরও প্রভাব রয়েছে ওই অঞ্চলে। ফলে হরতালে বন্দরনগরীতে সংগঠনগুলোর কর্মীদের তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয় দেখা যায়। সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশের পাশাপাশি গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রসেনার কর্মীরা। এসব মিছিলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কর্মীদেরও দেখা যায়। বন্দরনগরীর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ চললেও দুপুর পর্যন্ত শহরের রাস্তায় যান চলাচল করতে দেখা যায়নি। হাতেগোনা কিছু অটোরিকশা নামলেও তাতে বাধা দিয়েছে হরতালকারীরা। নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) শাহ আব্দুর রউফ বলেন, “বিভিন্ন স্থানে হরতাল সমর্থকরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করলেও ভাঙচুর বা বিশৃঙ্খলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।”