Connecting You with the Truth

চরম আর্থিক দৈন্যতায়ও সাফল্য ধরে রেখেছে পাপিয়া

দাকোপ, খুলনা:

শত প্রতিকূলতার মাঝেও মেধা এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যে সফলতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায় সেটি আবারো প্রমাণ করলেন দাকোপের অভাবী জেলে পরিবারের সন্তান পাপিয়া খাতুন। ভবিষ্যতে আদর্শ শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ক্রমাগত এগিয়ে চলছে সে। তবে পাপিয়ার স্বপ্ন পূরণের পথটি মোটেই সহজ নয়। তার এই লড়াইয়ের পথে প্রধান অন্তরায় তার পরিবারের সীমাহীন আর্থিক দৈন্যতা।

দাকোপ উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন নলিয়ান গ্রামের কুদ্দুস গাজীর মেয়ে পাপিয়া খাতুন। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় স্থানীয় চালনা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তার পিতা পেশায় একজন জেলে, মা ফজিলা বেগম সংসারের প্রয়োজনে দিন মজুরির কাজ করেন বিভিন্ন জায়গায়। অভাব অনটনের ভেতর দিয়ে কোন রকমে চলে তাদের সংসার। দিন আনে দিন খায় এমন অবস্থায় পরীক্ষার আগে কোন প্রাইভেট পড়ারও সুযোগ হয়নি পাপিয়ার। দৈন্যতার চরমতম পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দু’টি সন্তানকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার অক্লান্ত প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন কুদ্দুস গাজী। একমাত্র ছেলে ফয়সাল গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিশ্ববিদ্যায়ে ভর্তি হতে পারেনি। জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী পাপিয়া। সে ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তিও পেয়েছে। ২০১২ সালে কালাবগী সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএস সিতে  জিপিএ-৫ পায়। অর্থাৎ চরম প্রতিকূলতায় কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মেধাবী ছাত্রী পাপিয়া খাতুন। কিন্তু এ সংগ্রামী মেধাবী ছাত্রীটি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তার উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাওয়া নিয়ে। বাবা-মা দু’জনেই বয়সের কারণে আগের মত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে পারে না। অন্যদিকে বড় ভাই ফয়সাল অর্থের অভাবে একটি বছর উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। মেধাবী ছাত্রী পাপিয়া এসএসসি পাশের পর ডাচবাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে পাওয়া বৃত্তির সহায়তা নিয়ে নিজের খরচ খানিকটা চালিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এবার কি করবে এমন চিন্তায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে সে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই তাদের। অথচ ভবিষ্যতে আদর্শ শিক্ষক হয়ে আলোকিত মানুষ গড়ার মহান দায়িত্ব নিতে চান পাপিয়া। স্বপ্ন পূরণ এখন অনেকাংশেই নির্ভর করছে অন্যের সাহায্য-সহায়তার উপর। তাই সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানের কাছে তার পরিবারের আকুতি, যেন কেবল অর্থের অভাবে একটি সুন্দর স্বপ্নের অপমৃত্যু না ঘটে। এ ব্যাপারে সকল মহলের সাহায্য কামনা করেছেন পাপিয়ার পরিবার।

Comments
Loading...