জয়পুরহাটে হেযবুত তওহীদের ‘ধর্মের অপব্যবহার নারী প্রগতির অন্তরায়’ শীর্ষক আলোচনা সভা
নিজস্ব প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ‘ধর্মের অপব্যবহার নারী প্রগতির অন্তরায়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হেযবুত তওহীদের জয়পুরহাট জেলা শাখা। ধর্মের অপব্যাখ্যা প্রদানের মধ্য দিয়ে সমাজে নারীদের পশ্চাৎপদ অবস্থান, নারী নির্যাতন, নারীদের প্রতি অবমাননাসহ নারী মুক্তির পথে সৃষ্ট বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা এবং আদর্শকে তুলে ধরা হয় এ সভায়।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের মুখপাত্র এবং দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ্ পন্নী। সমাজের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীদের পশ্চাৎপদ অবস্থানের কারণগুলো তুলে ধরে এ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আছিয়া খানম সম্পা। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, আক্কেলপুর পৌরসভার সংরক্ষিত ১,২,৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বন্দনা রনী বাগচী, ৪,৫,৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর উম্মে কুলসুম, ৭,৮,৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোছা. মারুফা আক্তার, উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৪,৫,৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মোছা. জাহানারা প্রমুখ। রাজশাহী হেযবুত তওহীদের নারী নেত্রী আফরোজা আক্তার লিপির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আক্কেলপুর উপজেলা হেযবুত তওহীদের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোছা. ফাতেমা আক্তার।
রুফায়দাহ্ পন্নী তার বক্তব্যে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা আর নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর সমগ্র পৃথিবীতে চলছে শক্তির শাসন তথা ‘জোর যার মুল্লুক তার’। সত্যের শাসন, ন্যায়ের শাসন বর্তমানে পৃথিবীর আর কোথাও নেই। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, মহাযুদ্ধ, রক্তপাত, অন্যায়, অশান্তি বিরাজমান। দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার, দরিদ্রের উপর ধনীর বঞ্চনা, শাসিতের উপর শাসকের অত্যাচারে পৃথিবীর মাটি আজ ভারাক্রান্ত। সবচেয়ে বেশি করুণ অবস্থা আমাদের এই মুসলিম জাতির। যে কোনো প্রতিক‚ল পরিবেশে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় নারী ও শিশুরা অর্থাৎ যারা দুর্বল। মুসলিম নারীদেরকে ধর্মের ফতোয়ার নামে আজ দুর্বল বানিয়ে রাখা হয়েছে। যেখানেই যুদ্ধ হচ্ছে সেখানেই তারা ধর্ষিতা হচ্ছেন। বসনিয়াতে খ্রিষ্টানরা, ফিলিস্তিনে ইহুদিরা, বার্মা ও জিংজিয়াং- এ বৌদ্ধরা- যে যেখানে পাচ্ছে সেখানেই মুসলিমদেরকে হত্যা করছে। যার ফলশ্রুতিতে আজ সারাবিশ্বে সাড়ে ছয় কোটি মুসলিম উদ্বাস্তুর জীবন যাপন করছে। তিনি আরও বলেন, একদিকে ধর্ম নিয়ে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টায় রত এক শ্রেণির ক‚পমণ্ডুক ব্যক্তিরা ফতোয়ার বেড়াজালে নারীদেরকে বন্দি করে রেখেছে। অন্যদিকে তথাকথিত সভ্যতার ধ্বজাধারীরা তথা পশ্চিমারা নারীদেরকে কার্যতঃ ভোগ্যপণ্য বানিয়ে রেখেছে। যার ফলশ্রুতিতে নারীদের প্রকৃত অবস্থান আজ আর নেই; নারীরা আজ চরম নিগৃহীত। সমাজে নারীদের অবদান রাখার সকল পন্থাই এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম। কিন্তু এ বিপুল সংখ্যক নারী জনগোষ্ঠীকে গৃহবন্দি রেখে আমরা কখনওই জাতির উন্নতি-অগ্রগতির আশা করতে পারিনা। তাই নারীদেরকে তাদের প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। হেযবুত তওহীদের এই নেত্রী বলেন, ইসলাম নারীদেরকে পরিপূর্ণ মার্যাদা দিয়েছে। শালীনভাবে সমাজের যেকোনো পর্যায়ে নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করার অধিকার নারীদের রয়েছে। তাই আমাদেরকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। হেযবুত তওহীদ সেই প্রকৃত ইসলামের আদর্শ জাতির সামনে তুলে ধরছে। তাই আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি।
সভায় স্থানীয় নারী নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ নারীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। এ সময় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় সভাস্থল। এ সময় আগত অতিথিরা হেযবুত তওহীদের সাথে একাত্মতা জানিয়ে মানবতার কল্যাণে হেযবুত তওহীদের কার্যক্রমে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।