Connect with us

জাতীয়

ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমা চুক্তি চায় দিল্লি

Avatar photo

Published

on

বাংলাদেশের পত্র ডেস্ক:

ভারত আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমা চুক্তি চায় বলে জানিয়েছে কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকা। বুধবার পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ বাংলাদেশের বিজয় দিবস। ঢাকাকে প্রতিশ্রুতি দেয়া তিস্তা ও স্থলসীমা চুক্তির মধ্যে অন্তত একটি  এই তারিখের মধ্যে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ কাজের জন্য শাসক দল বিজেপির অন্দরে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠাই সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সরকারের কাছে।

খবরে রাজনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, সম্প্রতি দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় পরিষদের সভায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আলোচিত  হয়েছে। ছিটমহল হস্তান্তরসহ চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিজেপির প্রবীণ নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। মূলত এই দুই রাজ্য শাখাই বাংলাদেশের সঙ্গে প্রস্তাবিত চুক্তি দুটির বিরোধিতা করে চলেছে। রাজনাথ বলেছেন, ভারত সরকার এই চুক্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিছু আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা সব সরকারকে পালন করতে হয়, যেমন এই দুই চুক্তি। বিষয়টি নিয়ে আরো আলোচনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামের রাজ্য নেতৃত্বকে আগামী ১৬ অগস্ট ফের দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন রাজনাথ। বিজেপির দুই রাজ্য শাখার পক্ষে স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বলা হয়েছিল, ছিটমহল বিনিময় হলে ভারতকে অনেক বেশি জমি বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে হবে। এখন মোট ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল রয়েছে বাংলাদেশে এবং ৫১টি বাংলাদেশের ছিটমহল রয়েছে ভারতীয় এলাকায়। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজ্য বিজেপির নেতারা বলেছিলেন, স্থলসীমা চুক্তিতে সমর্থন জানালে স্থানীয় মানুষের কাছে বিজেপির ভাবমূর্তি খারাপ হবে। তবে সে সময় বিজেপি ছিল বিরোধী পক্ষে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতে আসার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ডাকায় পাঠান নরেন্দ্র মোদি। সুষমা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলে আসেন, তিস্তা ও স্থলসীমান্ত চুক্তি করা নিয়ে আগের সরকারের প্রতিশ্রুতি দ্রুত রক্ষার জন্য তারা সর্বতোভাবে চেষ্টা করবেন। এ জন্য ঘরোয়া ক্ষেত্রে ঐকমত্য তৈরি করা হবে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, তিস্তা চুক্তি  রূপায়নের প্রশ্নে গোড়া থেকেই ঘোর আপত্তি করে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি ভাবে যুক্ত। মমতার আপত্তিকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে নতুন সরকার যে তাড়াহুড়ো করে তিস্তা চুক্তি করতে চায় না, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। শেখ হাসিনাকে তিনি জানিয়ে এসেছেন ঐকমত্যের ভিত্তিতেই তিনি এ ব্যাপারে এগোবেন। সেই ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কাজটি এ বার শুরু করে দিতে চাইছে নতুন সরকার। ঢাকা চায় চলতি বছরেই চুক্তি দুটি সম্পন্ন হোক। শেখ হাসিনার ভারত সফরে আসার কথা এ বছরেই। প্রধানমন্ত্রী মোদিও ঢাকা সফরে আগ্রহী। কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিকদের আশঙ্কা, তিস্তা ও স্থলসীমান্ত চুক্তি দুটি নিয়ে অগ্রগতি না হলে সফর মূল্যহীন হয়ে যাবে।   প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থলসীমান্ত চুক্তির ফলে দেশের ভূখণ্ড আদান-প্রদান হবে। অর্থাৎ ভৌগোলিক অখণ্ডতার হেরফের হবে। সে জন্য এই চুক্তির আগে সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। আর এ কাজের জন্য প্রয়োজন লোকসভার দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। কংগ্রেস গত দুই তিন বছর ধরে স্থলসীমা সংশোধনী বিলটি পাস করার পক্ষে সওয়াল করে এসেছে। ফলে সনিয়া গান্ধী পক্ষে পার্লামেন্টে এর বিরোধিতা করা সম্ভব নয়। এখন বিজেপি যদি দলের মধ্যের মতবিরোধ মিটিয়ে ফেলে, তা হলে রাজ্যসভায় ঝুলে থাকা এই বিলটি পাস করিয়ে নেয়া সম্ভব বলেই মনে করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে জাতিকে নিরাপদ রাখার শপথ কুমিল্লা হেযবুত তওহীদের

Avatar photo

Published

on

‘রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে জাতিকে নিরাপদ রাখতে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা করেছে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের কুমিল্লা জেলা শাখা। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আগমন ফুড পার্ক এন্ড কমিউনিটি সেন্টারে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কুমিল্লা জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য প্রকৌশলী রাকীব আল হাসান। বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন।

সাবেক কুমিল্লা জেলা সভাপতি ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল কবির ও লাকসাম উপজেলা সভাপতি মো. সুজন, লালমাই উপজেলা সভাপতি আবু রায়হানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা প্রকৌশলী রাকীব আল হাসান বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদেশী শক্তির অপতৎপরতা বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এই দেশে বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। এ পর্যন্ত পশ্চিমা পরাশক্তি দেশগুলো ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়াসহ যেসব দেশে হস্তক্ষেপ করেছে সবগুলো দেশকে তারা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। আরেক দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার লড়াই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। কাজেই আমাদের যাবতীয় সহিংসতা ও বিদেশী শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে মাতৃভূমি বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ আলোচক নিজাম উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, যে কোনো সংকটের সমাধান ইসলাম দিয়েই সম্ভব কিন্তু ইসলামের সেই প্রকৃত রূপ কারও কাছে নেই। মহান আল্লাহ দয়া করে সেটা হেযবুত তওহীদকে দান করেছেন। আমরা প্রকৃত ইসলামের আদর্শ দিয়ে একটা নোয়াখালীতে একটা শান্তিপূর্ণ সমাজ নির্মাণ করে দেখিয়েছি। যে আদর্শ একটা ছোট্ট সমাজকে শান্তিপূর্ণ করতে পারে ইনশাআল্লাহ সেই আদর্শ দিয়ে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলাও সম্ভব হবে। এই মহতী কাজে সকলকে আমরা সাথে চাই।

এরআগে এদিন সকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা জসিম উদ্দিন শাকিল। অনুষ্ঠানে লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে চাষীরহাট উন্নয়ন প্রকল্পের উপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

Continue Reading

Highlights

‘দেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে উগ্রবাদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান’

Avatar photo

Published

on

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে উগ্রবাদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ও ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। শনিবার দিনব্যাপী ময়মনসিংহে টাউনহল মোড়স্থ এ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হেযবুত তওহীদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কর্মী সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। “বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অস্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য উগ্রবাদ মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করে ময়মনসিংহ জেলা হেযবুত তওহীদ।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় সভাপতি রহমত উল্লাহ রানার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের শীর্ষনেতা হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, ময়মনসিংহ বিভাগীয় নারী সম্পাদিকা রোজিনা আক্তার, ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, শেরপুর জেলা সভাপতি মোমিনুর রহমান পান্না, জামালপুর জেলা সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, নেত্রকোনা জেলা সভাপতি আব্দুল কায়ইয়ুম প্রমুখ।

ভায় হেযবুত তওহীদের ইমাম বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতা ও সাম্রাজ্যবাদীদের কড়াল থাবা থেকে কোটি বাঙ্গালীকে রক্ষার জন্য দল-মত-নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের সুযোগ নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যারা সাম্রাজ্য বিস্তারের নেশায় মত্ত, তারা বাংলাদেশের মানচিত্র খাবলে খাওয়ার জন্য শকুনের মত থাবা বিস্তারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একটি মহান আদর্শের ভিত্তিতে ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “বর্তমান সমাজ, অন্যায়-অশান্তি, মিথ্যা, প্রতারণা, মাদক ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ। সমাজের এই অধঃপতনের মূল কারণ আল্লাহকে ইলাহ বা হুকুমদাতা হিসেবে না মানা। সমাজের এই দূরাবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হলে মানবজাতিকে আবার আল্লাহকে ইলাহ এর আসনে বসাতে হবে। এককভাবে এই কাজ কখনোই সম্ভব নয়। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই কাজে অংশগ্রহণের জন্য সকলকে আহ্বান জানান।”

দেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য যারা দায়ী তাদের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, জাতিকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে কামড়াকামড়ির এই রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কাঁদা ছোঁড়াছুড়ির এই রাজনীতি বন্ধ না হলে জাতির ধ্বংস অনিবার্য। বিশ্বজুড়ে চলমান এই ভোগবাদী শাসন ব্যবস্থা, বৈষম্যমূলক অর্থ ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করে বিশ্বময় চলমান যুদ্ধাবস্থা ও এর কারণে সৃষ্ট সঙ্কটময় পরিস্থিতির জন্য জাতিকে সতর্ক সচেনত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, লেবাসধারী এক শ্রেণির ভণ্ডআলেমদের স্বার্থবাদী উগ্র কর্মকাণ্ডের কারণে ইসলামের গায়ে আজ কালিমা লিপ্ত হয়েছে। আর এদের মুখোশ উন্মোচন করায় তারা হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ওয়াজ মাহফিলে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে। তিনি উগ্রবাদী ধর্মব্যবসায়ীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে কোনো লাভ হবে না। হেযবুত তওহীদ সত্য নিয়ে এসেছে। মিথ্যার ধ্বংস এবার অনিবার্য। এসময় ধর্মব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অপপ্রচারের কড়া জাবাব দেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা।

ইসলামের স্বর্ণযুগে নারীদের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, রসুলের যুগে নারীরা মসজিদ থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দান পর্যন্ত গিয়েছেন। তারা শালীনতার সাথে সামাজিক, রাষ্ট্রীয় সকল কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। পরবর্তীতে এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ীরা ফতোয়াবাজি করে নারীদের ঘরবন্দী করেছে। ইসলাম নারীদের যে অধিকার মর্যাদা দিয়েছে তা হরণ করেছে। সকল মজলুম, অত্যাচারিত, নিপীড়িতদের প্রকৃত অধিকার ফিরিয়ে দিতে হেযবুত তওহীদের আগমন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই বক্তা। এসময় তিনি সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এবং হেযবুত তওহীদের সদস্যদের আরও অগ্রগামী হওয়ার নির্দেশ দেন।

বিভাগীয় কর্মী সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, হেযবুত তওহীদের ময়মনসিংহ জেলা নারী সম্পাদিকা সাথী আক্তার পলি, নুসরাত জাহান পলি, পাপিয়া আক্তার, সুরমা আক্তারসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীবৃন্দ।

Continue Reading

Highlights

হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে উগ্রবাদ-সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

Avatar photo

Published

on

‘সকল ধর্মের মর্মকথা – সবার ঊর্ধ্বে মানবতা’ এই কথাকে হৃদয়ে ধারণ করে “উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি”- শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩ টায় রাজধানীর বিজয়নগরে হোটেল ৭১ এর কনফারেন্স রুমে সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ।

দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন হেযবুত তওহীদের চেয়ারম্যান এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ একে একে প্রতিপাদ্যের উপর আলোচনা রাখেন এবং তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপনকালে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমাদের দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। একটি গোষ্ঠী ইসলামকে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক স্বার্থ উদ্ধার (ধর্মব্যবসা) করছে। তারা ধর্মকে অবলম্বন করে উগ্রতা, বাড়াবাড়ি, ধর্মান্ধতার চর্চা করছে। সুযোগ পেলেই ভিন্নমতের মানুষকে কাফের, মুরতাদ, মালাউন, ভারতের দালাল, ইসরাইলের দালাল, নাস্তিকের দালাল বলে ফতোয়াবাজি, উন্মাদনা সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে সেটাকে তওহীদী জনতার হামলা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এরা ধর্মপ্রাণ জনতার ইমানী চেতনাকে হাইজ্যাক করে তা ভুল পথে চালিত করে নিজেদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থ হাসিল করছে।

তাদের উগ্রবাদী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে মাঠে ময়দানে সোচ্চার ভূমিকা রাখছে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ।এজন্য তারা হেযবুত তওহীদকে টার্গেট করেছে। সারাদেশে সাড়ে চার শতাধিক স্থানে তারা এ আন্দোলনের সদস্যদের উপরে, তাদের বাড়িঘরে, আন্দোলনের কার্যালয়ে হামলা করেছে।

বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, পাহাড়ী, সমতলবাসী সকলের সমান অধিকার রয়েছে এই মাটির উপরে। ইতিহাসের গোড়ায় যদি ফিরে যাই, যদি প্রধান কয়েকটি ধর্মগ্রন্থে দৃষ্টি রাখি, তাহলে দেখতে পাব আমরা সবাই একই পিতা-মাতার সন্তান, সমগ্র মানবজাতি এক জাতি। তাই ভাষা, বর্ণ, জন্মপরিচয়, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, ভৌগোলিক সীমানার দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম বিভাজন কোর’আন মোতাবেক নিষিদ্ধ। স্রষ্টা মানুষকে মাত্র দুটো ভাগে ভাগ করেছেন- ভালো ও মন্দ। মানুষের মর্যাদাও নির্ণিত হবে ভালো কাজ ও মন্দ কাজের ভিত্তিতে। এর বাইরে কোনোরূপ বংশীয় আভিজাত্য, অর্থ বা ক্ষমতার ভিত্তিতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব ইসলাম স্বীকার করে না।

কালপরিক্রমায় ধর্মগুলো ভিন্ন পরিচয় ধারণ করলেও সেগুলোর মধ্যে অগণিত মিল রয়েছে। যেমন ইসলামের এক নাম দীনুল কাইয়্যেমা। শব্দটি এসেছে ‘কায়েম’ থেকে যার অর্থ শাশ্বত, সুপ্রতিষ্ঠিত, চিরন্তন, সনাতন জীবনব্যবস্থা। যে নীতি বা ধর্ম ছিল, আছে এবং থাকবে সেটাই হচ্ছে সনাতন বা কাইয়্যেমাহ। সনাতন, ইসলাম ও সেমেটিক প্রতিটি ধর্মই মনে করে ঈশ্বর বা পরমাত্মা এক ও অখণ্ড সত্তা। ইসলাম বলে- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ এক আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই। সনাতন ধর্ম বলে, একমেবাদ্বীতিয়ম, একমব্রহ্ম দ্বৈত্ব নাস্তি। যার অর্থ হচ্ছে- ব্রহ্ম একজন। তাঁর কোনো দ্বিতীয় নাই।
খ্রিষ্টধর্মেও একই কথা- There is only one Lawgiver and Judge. (New Testament: James ৪:১২). যিশুকে মুসলিমরা নবী বলে বিশ্বাস করেন। কোর’আনের নিরানব্বইটি আয়াতে ঈসা (আ.) এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাঁকে স্রষ্টা থেকে প্রাপ্ত ‘পবিত্র আত্মার অধিকারী’ বলা হয়েছে।

বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা নিরিশ্বরবাদী হলেও তারা সকল ধর্মের মতই পরকালে বিশ্বাসী। বুদ্ধের জীবনী পাঠ করলে এটা বুঝতে কষ্ট হয় না যে, তিনিও নবী-রসুলগণের মতই একজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ছিলেন। আমরা সেই সকল মহান শিক্ষকের শিক্ষাকে অনুসরণ করে একত্রে পথ চলতে চাই।

এজন্য আমরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে অবস্থানকারী সুধীজন, চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটা সমন্বিত কর্মসূচির প্রস্তাব করছি। উগ্রবাদীরা তাদের বইপত্রে, ওয়াজে, খোতবায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোর’আন, হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা, বিকৃত ব্যাখ্যা, উদ্দেশ্যমূলক ব্যাখ্যা দিচ্ছে। সাধারণ মানুষ তাদেরকে ইসলামের কর্তৃপক্ষ মনে করে অন্ধভাবে সেগুলোকে মেনে নিচ্ছে। এভাবে তারা ইসলামপ্রিয় মানুষকে বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট করছে। তাদের কাছে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরতে হবে যা আমাদের কাছে রয়েছে, যা অকাট্য, বিতর্কের ঊর্ধ্বে। বিশেষজ্ঞরা একেই বলেন Counter Ideology ev Counter Narrative. একটি ভুল মতবাদকে এভাবে সঠিক যুক্তিসঙ্গত দলিল প্রমাণ দিয়ে অপনোদন করার নাম আদর্শিক লড়াই বা ওফবড়ষড়মরপধষ ডধৎ. যা করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। এই লড়াই করতে গিয়ে আমাদের ৫ জন সদস্য শহীদ হয়েছে। আমরা বারবার আক্রমণের স্বীকার হচ্ছি। তবুও আমরা থেমে থাকিনি, থাকব না। এই লড়াইয়ে সাথি হিসেবে আমরা আপনাদের মত শুদ্ধচিন্তার মানুষদের পাশে চাই।

আসুন আমরা সবাই স্বার্থের রাজনীতি, ধর্মব্যবসা, ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি, ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান গ্রহণ করি। এতে করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ হবে, প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের মাটি অস্ত্রব্যবসায়ী পরাশক্তিধর রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের কবল থেকে রক্ষা পাবে। এটা একাধারে আমাদের ধর্মীয় কর্তব্য এবং সামাজিক কর্তব্য। এখনও যদি আমরা দেশ ও জাতির স্বার্থে এসকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ না গড়ে তুলি তাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে, তখন আর হয়ত কিছুই করার থাকবে না।

এসময় হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম কিছু প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো-
১. ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একটি রেনেসাঁ সৃষ্টির জন্য যে আদর্শ ও শক্তিশালী বক্তব্য প্রয়োজন সেটা হেযবুত তওহীদের কাছে রয়েছে। কিন্তু আমাদের সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকায় অথবা কারো অপপ্রচারে প্রভাবিত হওয়ার দরুন অনেকেই আমাদের বিষয়ে ভুল ধারণা পোষণ করেন। হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে যাবতীয় অস্পষ্টতা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে সকলকে মুক্ত হতে হবে।
২. আলোচনা সভার জন্য হল অথবা স্থান সহজলভ্য ও নিরাপদ করতে হবে। আমাদের সদস্যরা সবাই সাধারণ, তাদের পক্ষে ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান করা সব সময় সম্ভব নয়। তাই আলোচনা অনুষ্ঠানের স্থান বা সরকারি হলরুম সহজলভ্য করতে হবে। জাতির কল্যাণে আমরা শুধু মসজিদ নয়, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বা যে কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে গিয়েও কথা বলতে প্রস্তুত আছি। এ জাতীয় স্থানগুলোকে সর্বধর্মীয় সম্প্রীতি সৃষ্টি সংক্রান্ত আলোচনা করার জন্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা কামনা করছি।
৩. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সৃষ্টি ও উগ্রবাদ মোকাবেলায় সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি প্রস্তাবনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর অনুরোধ করছি।
৪. প্রত্যেক জেলায় এ ধরনের আলোচনা অনুষ্ঠান, সেমিনার ইত্যাদি করার জন্য হেযবুত তওহীদ প্রস্তুত রয়েছে। এজন্য সকল ধর্মীয় সংগঠনের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

সর্বধর্মীয় সম্প্রীতি স্থাপনের লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোকে মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণায় আওতায় আনতে হবে। এজন্য সকল ধর্মীয় সংগঠনের দায়িত্বশীলগণকে মুখ্য ভূমিকা পালন করার অনুরোধ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে নিজ গ্রাম চাষীরহাটকে ‘স্মার্ট গ্রাম’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে হাতে নেয়া উন্নয়ন কার্যক্রমের উপরে একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠনে আরো আলোচনা করেন- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাস গুপ্ত, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক ব্যববস্থাপনা পরিচালক মনিন্দ্র কুমার নাথ, সেন্টার ফর ইন্টার রিলিজিয়াস অ্যান্ড ইন্টার কালচারাল ডায়লগ এর পরিচালক অধ্যাপক ড. ফারজিন হুদা, বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট মমতাজ লতিফ, সম্প্রিতি বাংলাদেশে সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মামুন আল মাহতাব, বাংলা একাডেমির পদকপ্রাপ্ত কথা সাহিত্যিক রফিকুর রশিদ, বাংলাদেশ অনলাইন একটিভিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট কবির চৌধুরী তন্ময়, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কবি সৌমিত্র দেভ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান মহাজোটের প্রেসিডেন্ট ও বিশিষ্ট আইনজীবী মিস্টার ডেনিয়েল নির্মল ডি কোস্টা, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালি, চারুলিপির প্রকাশক হুমায়ূন কবির প্রমুখ।

আলোচকরা অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপরে সহমত পোষণ করেন। তারা হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের এই সংগ্রামকে সাধুবাদ জানান। তার সাহসীকতার প্রসংশা করেন এবং এই উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন।

 

Continue Reading