ডুমুরিয়া ও কেশবপুর ২ উপজেলার ২৭টি গ্রাম প্লাবিত
জিয়াউর রহমান, ডুমুরিয়া প্রতিনিধি, খুলনা॥
ডুমুরিয়া ও কেশবপুর, দুই উপজেলার ২৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকার। নেমে এসেছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, ডুমুরিয়া উপজেলা ও কেশবপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর, ঘোষড়া, বাদুড়িয়া, কাকুড়পাড়া, বেতাগ্রাম, আটলিয়া, সুভাশুনি, শিরাশুনি, বাউশলা, পরচক্রা, হিজলডাঙ্গাসহ ২৭টি গ্রাম অতিবৃষ্টি, ভদ্রা নদীর পানি, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে বিস্তৃর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর ফসলী জমির সজবী, রোপা আমন, পাটক্ষেত পানিতে তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। এছাড়াও প্রায় দেড় শতাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বসত ঘরবাড়ি, গ্রাম্য রাস্তাঘাট। সাধারণ মানুষের মাঝে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। ফলে এবারের বন্যায় ওই সকল এলাকায় প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বন্যার্ত এলাকায় সরকারি ভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা দেয়া হয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। গতকাল রবিবার সরজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, প্রায় অর্ধ শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ি ধসে পড়েছে। তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বন্যার্ত এলাকায় মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে জানান, ভারী বর্ষণে যে কোন মুহূর্তে সমগ্র এলাকা পানিতে তলিয়ে একাকার হয়ে আরও ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন হবে। জানমাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া দূরাহ হয়ে পড়বে বলে তারা শঙ্কায় রয়েছে। বন্য পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। প্রায় ২ মাস ধরে বন্যার পানিতে এলাকা তলিয়ে গেলেও সরকারি কোন সংস্থা এলাকায় কোন খোঁজ খবর নেয়নি বা উল্লেখযোগ্য কোন সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তারা আরো বলেন প্রতি বছর বন্যার কবলে পড়তে আমাদের। কিন্তু উত্তরণের কোন পদক্ষেপ সরকারিভাবে নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
এ প্রসঙ্গে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খাঁন আলী মুনসুর এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই সকল এলাকা পরিদর্শন করেছি। জেলা ও উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনাকে চিঠি মারফত অবহিত করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষ্যে সরকারি ভাবে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর একান্ত আকুতি বন্যার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করেছেন।
বিডিপত্র/এমএম/১৪-০৮-২০১৭