Connecting You with the Truth

তিউনিসিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় ১৯ পর্যটক নিহত

yemen_bg_359206977আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিসের বার্ডো জাদুঘরে বন্দুকধারীদের সন্ত্রাসী হামলায় ১৯ জন নিহত হয়েছে। তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, রাজধানী তিউনিসের বার্ডো জাদুঘরে বন্দুকধারীদের সন্ত্রাসী হামলায় মোট ১৭ জন পর্যটক নিহত হন। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে দুই বন্দুকধারীও নিহত হয়।  নিহত পর্যটকদের সবাই বিদেশী নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে পোলিশ, স্প্যানিশ, জার্মান এবং ইটালিয়ান নাগরিক রয়েছে। বন্দুকধারীরা এই জাদুঘরে অনেক পর্যটককে জিম্মি করে রেখেছিল। হামলার সময় সেখানে প্রায় একশ পর্যটক ছিল। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, বন্দুকধারীরা প্রথমে একটি গাড়িতে করে এসে পার্লামেন্ট ভবনে চড়াও হয় এবং গুলি চালাতে শুরু করে। এতে আরও বলা হয়, বন্দুকধারীদের একজনকে পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে দেখা গেছে। ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকাটি ঘিরে ফেলে। পার্লামেন্ট ভবন থেকে সবাইকে সরিয়ে রাখা হয়। এর আগে তিউনিসিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদে আলী লারুইকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, কিছু জিম্মিকে মুক্ত করা গেছে, কিন্তু এখনো অনেক মানুষ বন্দুকধারীদের হাতে জিম্মি হয়ে আছেন। এদের মধ্যে ব্রিটিশ, ইটালিয়ান, ফরাসী এবং স্প্যানিশ নাগরিক রয়েছেন। কারা এই হামলা চালিয়েছে এখনো পরিষ্কার নয়।

এদিকে তুনিসের বার্দো মিউজিয়ামে সন্ত্রাসী হামলায় ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে “ক্ষমাহীন” লড়াইযের ঘোষণা দিয়েছেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেজি কাইদ ইসেবসি। বিবিসি বলছে, বুধবারের ওই হামলার পর তিনি বলেছেন, “তিউনিসিয়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আছে।” ঘটনার পর জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইসেবসি বলেছেন, “এইসব সংখ্যালঘু দানবরা আমাদের ভীত করতে পারবে না। ক্ষমাহীনভাবে এদের মূল উপড়ে ফেলা না পর্যন্ত আমরা এদের প্রতিরোধ করে যাব।” “গণতন্ত্রের জয় হবে, গণতন্ত্র বেঁচে থাকবে,” বলেছেন তিনি।  তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসিদ বলেছেন, “আমাদের ইতিহাসের একটি সঙ্কটজনক সময় এটি, পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য প্রতিরোধ করার সময়ও এটি।” জাদুঘরে হামলা যখন শুরু হয় তখন পাশের পার্লামেন্ট ভবনে জনপ্রতিনিধিরা সন্ত্রাসবিরোধী আইন নিয়ে আলোচনা করছিলেন। হামলা শুরু হওয়ার পরপরই পার্লামেন্ট ভবন খালি করে সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় নজিরবিহীন এক অধিবেশনে আবার মিলিত হন প্রতিনিধিরা। হামলার পর অনেক তিউনিসীয় নাগরিক তুনিসের কেন্দ্রস্থলে জাদুঘরের সামনে রাস্তায় এসে পতাকা উড়িয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে হামলার প্রতিবাদ জানায়। বিশ্ব নেতারা এই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাস প্রতিরোধে তিউনিসিয়ার প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। নিহতদের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে কড়া ভাষায় হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। সন্ত্রাসী সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিত্র তিউনিসিয়ার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিউনিসিয়াকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

Comments
Loading...