দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি: হুইপ ও সেনা বাহিনীর জিওসির পরিদর্শন
দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ৩টি প্রধান নদীসহ বিভিন্ন এলাকার পানি কমতে শুরু করেছে। ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ত্রাণ তৎপরতার অংশ হিসেবে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন।
শনিবার থেকে শুরু হওয়া দিনাজপুর জেলার ৮টি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি বুধবার থেকে সার্বিক উন্নতি হয়েছে। নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকলেও অধিকাংশ এলাকার পানি সরে গেছে। তবে শহরের বালুবাড়ী, নিউটাউন, ঢাকাইয়াপট্টি, মাতাসাগরসহ অন্যান্য এলাকায় পানি রয়েছে।
বুধবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হুইপ এম ইকবালুর রহিম এমপি এবং রংপুর সেনা নিবাসের এরিয়া কমান্ডার (জিওসি) মেজর জেনারেল মাসুদ রাজ্জাক ও পার্বতীপুর শহীদ ক্যাপ্টের মাহবুবুর রহমান ক্যান্টমেন্টের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিন আকবার জেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো জরুরী মেরামতের প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়। বন্যা কবলিত জনসাধারণদের মধ্যে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। সেনা বাহিনী এবং দিনাজপুর সিভিল সার্জনের তত্বাবধানে জেলার বিভিন্ন স্থানে ১১৮টি ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম বন্যা দুর্গতদের মাঝে রোগ প্রতিরোধে ওষুধ বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান জানান, জেলার ৩টি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত পুনর্ভবা নদীর পানি ৩২ দশমিক ৯০০ মিটার, আত্রাই নদীর পানি ৩৭ দশমিক ৬৪০ মিটার এবং ইছামতি নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি জানান, নদীর পানি ২/১ দিনের মধ্যে আরও কমবে।
বুধবার সকালে পুনর্ভবা নদীর পশ্চিম দিকে বিরল উপজেলার কাঞ্চন বাজারের পাশে খাল থেকে শরিফুলের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২ দিন আগে শরিফুল নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সকালে পার্বতীপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের আত্রাই গ্রামে করতোয়া নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায় দুলাল। সে আত্রাই গ্রামের জয়েন উদ্দিনের পুত্র।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বুধবার সকালে চিরিরবন্দর উপজেলার তেতুলিয়া ইউপি কমপ্লেক্সে ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় আড়াই হাজার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কেবিএম কলেজ ও কসবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে, রুরাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন সরকারী কলেজ আশ্রয় কেন্দ্রে এবং হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ সদর উপজেলার কর্ণাই ও সুবড়া ও বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের জেলেপাড়া ও নিজপাড়া প্রাথমিক সরকারী বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ করেন।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম তাঁর নির্বাচনী এলাকা সদর উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করেন। শহর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বানভাসী মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়