দোনেৎস্কে অবস্থান জেরদার করার লড়াই চলছে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী তাদের রক্তাক্ত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে৷ বুধবার দোনেৎস্ক অঞ্চলের ৩৪ জন বাসিন্দার নিহত হবার খবর দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ৷ অথচ আগামী সপ্তাহে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টদ্বয়ের বৈঠক৷
দোনেৎস্ক হলো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দুটি মূল ঘাঁটির একটি৷ সরকারি সেনাবাহিনী দোনেৎস্ক-এর লাগোয়া মাকিয়িভকা শহরটির কাছে মঙ্গলবার সারারাত ধরে যুদ্ধ চালিয়েছে৷ সেই যুদ্ধে সেনাবাহিনীর ন’জন সৈন্য নিহত হয়েছে, বলে জানিয়েছেন এক মুখপাত্র৷
তবে ইউক্রেনীয় ন্যাশনাল গার্ড পুনরায় যে শহরটি দখল করেছে, সেটি হলো ইলোভায়িস্ক৷ এই শহরটি দোনেৎস্ক-এর প্রায় ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে৷ শহরটি একটি বড় রেলওয়ে জংশন৷ খোদ দোনেৎস্ক-এ পানি সরবরাহ আবার চালু হয়েছে, বলে খবর দিয়েছেন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷ সপ্তাহান্তে একটি ফিল্টারিং স্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ আবার চালু করা সম্ভব হয়।
দোনেৎস্ক-এর পর বিদ্রোহীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হলো লুগানস্ক৷ বিগত কয়েক দিনে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা লুগানস্ক-এর অনেক ভিতরে ঢুকে পড়েছে৷ মঙ্গলবার ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর এক ফিল্ড কমান্ডার নাকি দেখেছেন, রুশ সাঁজোয়া গাড়ির একটি বিশাল বহর কিভাবে লুগানস্ক-এ ঢুকছে৷ তা-তে নাকি ট্যাংক, রকেট লঞ্চার ও কামান ছিল – আর ছিল রুশ উর্দি পরা শ’বারো লোক৷ তবে কিয়েভ-এর সামরিক মহল থেকে কমান্ডার ইগর ভরোঞ্চেঙ্কোর এই দাবির কোনো স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি৷ – অপরদিকে প্রায় ৩০০ রুশ ট্রাক প্রচুর পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে এখনও লুগানস্ক সীমান্তের কাছে খাড়া: তাদের ঢুকতে দেওয়া হবে কি না হবে, তা নিয়ে এখনও তর্কাতর্কি চলেছে৷
বাকি থাকছে আগামী সপ্তাহে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের মধ্যে পরিকল্পিত সাক্ষাৎ৷
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিয়েভ ও মস্কো, উভয় পক্ষই তাদের নিজস্ব অবস্থান জেরদার করার চেষ্টা করছে: রাশিয়ার ‘ত্রাণ সাহায্য’ কিংবা ইউক্রেনের জোরদার সামরিক অভিযানের অর্থই হলো তাই৷ রাশিয়ার দাবি হলো, পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধপীড়িত এলাকাকে ‘ডিমিলিটারাইজ’ করো, অর্থাৎ যুদ্ধবর্জিত এলাকায় পরিণত করো৷ ইউক্রেন যদি পোরোশেঙ্কো-পুটিন সাক্ষাতের আগে লুগানস্ক কিংবা দোনেৎস্ক দখল করতে পারে, তাহলে ‘ডিমিলিটারাইজেশন’-এর প্রশ্নটাই অবান্তর হয়ে পড়ে৷