Connect with us

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে আবার সামরিক শাসন আসার আশঙ্কা

Avatar photo

Published

on

urlপাকিস্তানের সেনাশাসনের পদধ্বনি আবারো সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দেশটিতে সেনাশাসন স্রেফ সময়ের ব্যাপার।  বিশেষ করে শুক্রবার পাকিস্তানের পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করলেন ইমরান খানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সাংসদরা।  শুক্রবার স্পিকারের কার্যালয়ে ইমরানসহ ৩৪ জন আইন প্রণেতার পক্ষ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন দলটির নেতা শাহ মাহমুদ কোরেশি, আরিফ আলভি ও শিরিন মাজারি। আর এ রাজনৈতিক অচলাবস্থার সুযোগে দেশটিতে সামরিক শাসন আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর দলটির নেতা মুরাদ সাঈদ বলেন, ‘আমরা আগেই আমাদের চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছি। এবার জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলাম।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যত্ কর্মসূচি খুব পরিষ্কার। আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনে কারচুপির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।’

পার্লামেন্ট বা জাতীয় আইন পরিষদ ছাড়াও পাখতুনখাওয়া বাদে অন্য সব প্রাদেশিক পরিষদ থেকেও পিটিআইর সদস্যরা পদত্যাগ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। পাখতুনখাওয়া প্রদেশে তেহরিক-ই-ইনসাফ সরকার গঠন করেছে।

এদিকে পিটিআইয়ের সংসদ সদস্যদের পদত্যাগপত্র পার্লামেন্টে গৃহীত হবে কি না, এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব কানওয়ার দিলশাদ বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পরই তাদের সংসদ সদস্যপদ রহিত হয়ে যাওয়ার কথা।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সামনেই যেহেতু তারা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন, তাই তা গৃহীত না হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এদিকে পাকিস্তানের রাজধানীর ইসলামাবাদে তেহরিকে ইনসাফ বা পিটিআই’র সরকার-বিরোধী আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।  একই অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক বা পিএটি। তবে, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে দু দলের প্রধান ইমরান খান ও ড. তাহিরুল কাদরি।

সরকারের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করার একদিন পর আবার তারা আলোচনার টেবিলে ফিরতে রাজি হলেন। বৈঠকের বিষয়ে পিটিআই দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইমরান খান।

বৈঠক শেষে দলের সিনিয়র নেতা শাহ মেহমুদ কোরেশি জানান, তার দল নওয়াজ শরিফের নেৃতত্বাধীন মুসলিম লিগ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে। এ কারণে আজ শনিবার থেকে আলোচনা প্রক্রিয়া আবার শুরু হবে।

তিনি জানান, শুক্রবার পিটিআই প্রতিনিধিদল তাদের ছয়দফা দাবি তুলে ধরেছে সরকারের কাছে এবং শনিবার আবার বৈঠকে বসবে।

তাদের দাবির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগই এখন প্রথম দাবিতে পরিণত হয়েছে। একই দাবি করেছে তাহিরুল কাদরির নেতৃত্বাধীন পিএটি। দল দু টি দাবি করছে, নওয়াজের পদত্যাগের পর নির্বাচন কমিশনের সংস্কার করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে।

এর আগে,  ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই’র সংসদ সদস্যরা জাতীয় পরিষদে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।  তবে, তা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা কিংবা পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর এর ফলাফল কি হবে তা স্পষ্ট নয়।

এদিকে, দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান বিরোধীদল পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি নেতা আসিফ আলি জারদারিকে নওয়াজ শরিফের বাসায় দাওয়াত দেয়া হয়েছে। আজ দুপুরে সাবেক এ প্রেসিডেন্ট নওয়াজ শরিফের রাইউন্ডের বাসভবনে যাবেন এবং সন্ধ্যায় আবার করাচি ফিরবেন। তার সঙ্গে থাকবেন খুরশিদ আহমেদ শাহ, আইতাজ আহমেদ এবং রাজা রব্বানি।

জারদারির মুখপাত্র ফরহাতউল্লাহ বাবর জানান, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ নিজেই টেলিফোন করে পিপিপি নেতাকে দাওয়াত দেন এবং আসিফ আলি জারদারি তা গ্রহণ করেন।

সামরিক শাসনের পদধ্বনি
পাকিস্তানের ৬৭ বছরের ইতিহাসে ৩২ বছরই সরাসরি শাসন করেছে সেনাবাহিনী। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউল হক ছাড়াও এই তালিকার সর্বশেষ শাসক হচ্ছেন পারভেজ মোশাররফ।  ক্ষমতা দখল করলে কিছুই হয় না— বিশ্বের কাছে যেন এ উদাহরণ তৈরি করছিল পাকিস্তান। তবে চলতি মেয়াদে ক্ষমতায় এসে নওয়াজ শরিফ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের দায়ে কাঠগড়ায় তুলেছেন পারভেজ মোশাররফকে।

ধারণা করা হয়েছিল, এবার বুঝি ছেদ পড়ল সেই সেনাশাসনের ধারাবাহিকতায়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই আশাও যেন নিভু নিভু।

১৯৯৯ সালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে নওয়াজকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন পারভেজ মোশাররফ। ২০০১ সালে ক্ষমতায় থেকে দল করে নির্বাচন দেন পারভেজ মোশাররফ।

কারচুপির সেই নির্বাচনে জিতেও আসেন তিনি। মোশারফের আধা সামরিক সরকার ক্ষমতায় থাকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত।
২০০৭ সালের ২৮ নভেম্বর চিফ অব আর্মি স্টাফের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং তারই উত্তরসূরি জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

পরে নির্বাচনে ক্ষমতায় ফেরে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিপিপি তার নির্ধারিত সময় কোনো মতে পার করলেও বারবার সংবাদের শিরোনাম হয় সেনাবাহিনী। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পিপিপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ।

প্রায় দেড় বছর মোটামুটি শান্তই ছিল পাকিস্তানের পরিস্থিতি। নির্বাচনের পর থেকেই নওয়াজ সরকারের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ আনলে, তা তেমন যুতসই ছিল না। সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং ধর্মীয় নেতা তাহিরুল কাদরির পাকিস্তান আওয়ামী তেহরিক (পিএটি)।

পাকিস্তানে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা সরকারবিরোধী কর্মসূচি ঘিরে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সংকট সমাধানে সব পক্ষকে আলোচনায় বসার জন্য চাপ দিচ্ছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এদিকে নওয়াজ শরিফ পদত্যাগ না করলে তার বাসভবন দখলের হুমকি দিয়েছেন ইমরান খান।

২০১৩ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত দেশটির সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে তা বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খান।

নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবিতে ইমরান খানের ‘আজাদি মার্চ’ আর তাহির উল-কাদরির ‘ইনকিলাব মার্চের’ কারণে পাকিস্তানে গভীর রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।  বিষয়টি নিয়ে পরামর্শের জন্য সেনাপ্রধান জেনারেল রাহেল শরিফের কাছে দূত পর্যন্ত পাঠান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ। আর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো হবে না বলে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজকে আশ্বস্ত করা হয়েছে; কিন্তু ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইলে তাকে সামরিক বাহিনীর জন্য ‘ছাড়’ দিতে হবে।

আর সামরিক বাহিনীর জন্য ‘কিছু ছাড় দেয়ার’ মানে হলো পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, নিরাপত্তা ও কৌশলগত নীতিতে জেনারেলদের কর্তৃত্ব বেড়ে যাওয়া। যার অর্থ দাঁড়ায়, আবারও চালকের আসনে আসীন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।

নাক গলাবে না যুক্তরাষ্ট্র: পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেশটির অভ্যন্তরীণ ইস্যু। আর পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে না বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মেরি হার্ফ শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পাকিস্তানে সরকার ও বিরোধী এই দুপক্ষের মধ্যে যেকোনো আলোচনায় বা আলোচনা প্রক্রিয়ায় আমরা জড়িত নই। এমনকি দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করাও অর্থহীন।’

এমনকি চলমান সংকট শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন হবে এবং দেশটির নির্বাচিত সরকারের ধারাবাহিকতায় কোনো ছেদ পড়বে না বলে আশা করেন মেরি হার্ফ।

চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামাবাদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মেরি হার্ফ বলেন, ‘পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি বেশ কয়েকবার দেশটির শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ওই সময়ে পাকিস্তানের চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে আমি আশা করছি।’

মাত্র একদিন আগে দেয়া বক্তৃতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

‘দাবি অসাংবিধানিক’
পিটিআই ও পিএটি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের যে দাবি তুলেছে, তাকে অসাংবিধানিক অভিহিত করে বৃহস্পতিবার একটি প্রস্তাব পাস করেছে জাতীয় পরিষদ। মুহাম্মদ খান আচাকজাইয়ের উত্থাপন করা ওই প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে পাস হয়।

চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে শুক্রবার জাতীয় পরিষদে ভাষন দেয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের; কিন্তু তা স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

আজাদি মার্চে পেছনের শক্তি
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পদত্যাগের দাবি কেন্দ্র করে পাকিস্তানে কয়েক দিন ধরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে হটাতে গত ১৪ আগস্ট লাহোর থেকে শুরু করেন আজাদি মার্চ।

সেই দাবি আদায়ে রাজধানী ইসলামাবাদে ঘাঁটি গেড়ে বসেছেন পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা। নওয়াজ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

ইসলামাবাদের সুরক্ষিত রেড জোনেও তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। একই দাবিতে পৃথকভাবে ‘ইনকিলাব মার্চ’ চালিয়ে যাচ্ছেন পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিকের (পিএটি) নেতা তাহির উল-কাদরি।

নওয়াজকে হটাতে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন ইমরান। ডাক দিয়েছেন অসহযোগ আন্দোলনের। জাতীয় পরিষদ ও তিনটি প্রাদেশিক পরিষদ থেকেও তার দলের নেতারা পদত্যাগ করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানে রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে রাজনীতিকরা ছাড়া আরও কিছু নিয়ামক আছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো সামরিক বাহিনী ও বিচার বিভাগ।

নওয়াজের ভাগ্য নির্ধারণে ইমরানের আজাদি মার্চের চেয়েও এই দুই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অনেকে।

অন্য রাজনীতিকদের অবস্থান
সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেয়া ইমরান সহযোগী হিসেবে পাকিস্তানের তাহির উল-কাদরির দল পাকিস্তান আওয়ামি তেহরিক (পিএটি) ছাড়া উল্লেখ করার মতো আর কাউকে পাননি। এ কারণে সমমনা বলে পরিচিত পিএমএল-কিউ (চৌধুরী সুজাত), আওয়ামী মুসলিম লিগ (শেখ রশিদ), মজলিশ ওয়াহদাতুল মুসলিমিন (রাজা নাসির আব্বাস) ও সুন্নি ইত্তেহাদের (সাহেবজাদা হামিদ রাজা) মতো দলগুলোও ইমরানের সাফল্য নিয়ে সন্দিহান।

এদিকে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নওয়াজের পদত্যাগের দাবির সঙ্গে একমত নয়। বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় পরিষদে পিপিপির সংসদীয় দলের নেতা সৈয়দ খুরশিদ আহমেদ শাহ। আর পিপিপির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্রে অসহযোগ আন্দোলনের কোনো স্থান নেই। এর ফলে গণতন্ত্র ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।  জারদারি আলোচনার মাধ্যমে দাবিদাওয়ার মীমাংসা করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।

কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, পিপিপির এই অবস্থানের কারণ হলো জারদারির বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা দুর্নীতির মামলা। পিপিপি আন্দোলনে গেলেই সরকার মামলা সচল করবে। সেই ঝুঁকি নিতে চায় না দলটি।

সামরিক বাহিনীর ভূমিকা
পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনী যে কত বড় খেলোয়াড়, তা বোঝার জন্য দুটি তথ্যই যথেষ্ট। ১৯৪৭ সালে দেশটির জন্মের পর সেখানে এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ সময়ই ক্ষমতায় ছিলেন সরাসরি কোনো সামরিক শাসক কিংবা উর্দি ছেড়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে ঢাল বানানো কোনো সামরিক নেতা।  আর দেশটির ৬৭ বছরের ইতিহাসে গত বছরই কেবল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ কারণেই প্রশ্ন উঠেছে— ইমরান কি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করছেন? সামরিক বাহিনী কি পেছন থেকে উসকানি দিচ্ছে?  যদিও সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে সমঝোতার জন্য সরকার ও বিরোধী উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সামরিক বাহিনী যে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের ওপর আদৌ সন্তুষ্ট নয়, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফকে বিচারের মুখোমুখি করেছেন তিনি। এটা পছন্দ হয়নি উর্দিধারীদের।

পাকিস্তানি একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, হয় সামরিক বাহিনী নওয়াজকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ইমরানকে সাহস দিয়েছে, নয়তো নওয়াজের প্রতি সামরিক নেতাদের নাখোশ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে ইমরান নিজেই সেই সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছেন। সূত্র: ডন, পিটিআই, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Highlights

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার হামলা, নিহত ৮

Avatar photo

Published

on

পূর্ব ইউক্রেনের শহর স্লোভিয়ানস্কে শুক্রবার ফ্ল্যাটের একটি ব্লকে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে শিশুসহ ৮ জন নিহত হয়েছে। শিশুটিকে ধ্বংসস্তুপ থেকে বের করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সে মারা যায়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে সংগঠিত করা সহজ করতে এবং তাদের দেশ থেকে পালাতে বাধা দেওয়ার জন্য একটি খসড়া বিলে স্বাক্ষর করার মধ্যেইপ্রতিবেশীদের ওপর এই হামলা চালালো।

রাশিয়া আরও বলেছে, তারা স্লোভিয়ানস্কের ৪৫ কিলোমিটার (২৭ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে বাখমুতের ভয়াবহ যুদ্ধের হটস্পট আরও ঠেলে দিচ্ছে, কিয়েভ যদি দীর্ঘতম এবং রক্তক্ষয়ী বাখমুতের যুদ্ধে হেরে যায় তাহলে সেটি এই বড় শহরটির জন্য ঝুঁকি গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি হবে। স্লোভিয়ানস্ক দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি অংশে অবস্থিত যা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন।

অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে রাশিয়ান হামলার পর দোনেৎস্ক অঞ্চলের গভর্নর পাভলো কিরিলেনকো ইউক্রেনের টেলিভিশনে বলেছেন, হামলায় ‘২১ জন আহত হয়েছে এবং আটজন মারা গেছে।’

তিনি বলেন, নিহতদের মধ্যে একটি ছেলে শিশু রয়েছে। এএফপি সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে বলেছেন, উদ্ধারকর্মীরা সাধারণ সোভিয়েত যুগের হাউজিং ব্লকের উপরের তলায় বেঁচে যাওয়া লোকদের উদ্ধার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং সেখান থেকে আগুনের কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে।

ইউক্রেনীয় পুলিশ টুইটারে জানিয়েছে, ‘ধ্বংসস্তুপ থেকে বের করে আনার পর একটি অ্যাম্বুলেন্সে এক শিশু মারা গেছে।’ ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা এই ‘অবর্ণনীয় শোকের’ সময় শিশুটির পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা পাঠিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এর আগে আবাসিক ভবনে ‘নৃশংসভাবে গোলাবর্ষণ’ এবং ‘দিবালোকে মানুষ হত্যার’ জন্য রাশিয়ার নিন্দা করেছেন।

Continue Reading

Highlights

মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে পুরস্কার পেলেন রাশিয়ান পাইলটরা

Avatar photo

Published

on

কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করা ফাইটার পাইলটদের পুরস্কৃত করেছে রাশিয়া। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু দুটি রাশিয়ান এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমানের পাইলটদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) একটি রাশিয়ান এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনটি কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়।

মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ড্রোনটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় একটি রুটিন মিশনে ছিল। রাশিয়ার দুটি যুদ্ধবিমান তা আটকানোর চেষ্টা করে। রাশিয়ার একটি যুদ্ধবিমানের আঘাতে ড্রোনটি অকেজো হয়ে পড়ে। পাইলটরা যারা দূর থেকে ড্রোনটি পরিচালনা করেছিল তারা তখন এটিকে কৃষ্ণ সাগরে ফেলে দিতে বাধ্য হয়।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর মঙ্গলবারের সংঘর্ষটি ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে প্রথম সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ। যদিও মস্কো মার্কিন ড্রোন ধ্বংস করার দাবি অস্বীকার করেছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগরে মার্কিন ড্রোন দেখে তারা ফাইটার জেট পাঠিয়েছিল। তবে ড্রোনের সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়নি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ড্রোনটি বিধ্বস্ত হয়।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, যুদ্ধবিমানের পাইলটদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ান যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়নি।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, মস্কোর স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এমকিউ-রিপার ড্রোনটি প্রবল বেগে চলার সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং পানিতে পড়ে যায়। ড্রোনটি ট্রান্সপন্ডার বন্ধ রেখে উড়ছিল। যা ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে রুশ আকাশসীমায় রাশিয়ার আরোপিত নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন।

তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, রাশিয়ান যুদ্ধবিমান ড্রোনের কাছে এসে এটিকে হয়রানি করে এবং এতে জ্বালানি ছিটিয়ে দেয়। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ধরে এটিকে আটকানোর চেষ্টা করার পর একটি যুদ্ধবিমান দ্বারা ড্রোনটির প্রপেলারটি কেটে যায় এবং এটি সমুদ্রে পড়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) মার্কিন সেনাবাহিনী এই এনকাউন্টারের ৪০ সেকেন্ডের সম্পাদিত ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে। এতে দেখা গেছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ড্রোনের কাছে আসছে। এ সময় এটি ড্রোনটির উপর জ্বালানি ছিটিয়ে দিচ্ছে। এরপর ড্রোনটির প্রপেলার নষ্ট হয়ে যায়। এই ঘটনাকে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন একজন শীর্ষ মার্কিন জেনারেল।

Continue Reading

Highlights

সব ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করল কানাডা

Avatar photo

Published

on

কানাডা সরকার দেশটির সব সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করেছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণ দেখিয়ে সোমবার এ পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। এর মাধ্যমে চীনা ভিডিও-শেয়ারিং প্ল্যাটফরমটির বিরুদ্ধে কানাডা সরকারের আরেকটি ক্র্যাকডাউন (সাঁড়াশি অভিযান) শুরু হতে পারে।

এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। আজ মঙ্গলবার থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে অটোয়া প্রশাসন।

আনাদোলু জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপের কিছুক্ষণ পরই জাস্টিন ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটি একটি প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে, এটিই হতে পারে একমাত্র পদক্ষেপ যা আমাদের নিতে হবে। তবে প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা নিশ্চিত করতে যাচ্ছি যে, আমরা কানাডিয়ানদের নিরাপদ রাখছি।’

কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অবশ্যই আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং কানাডার জনগণ অনলাইনে যেভাবে স্বাধীন মতপ্রকাশে সংযুক্ত হতে চায়, আমরা তা খুব গুরুত্বসহকারে নিয়েছি।’

‘কিন্তু আমাদের কাছে ডেটা সুরক্ষা, কানাডিয়ানদের সুরক্ষা এবং সুরক্ষার জন্য আমাদের যে গুরুত্বপূর্ণ নীতি রয়েছে, তা আমরা সর্বদা এগিয়ে নিয়ে যাব,’ বলেন ট্রুডো।

খবরে বলা হয়েছে, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডাকর্মীদের পরামর্শ দিয়ে একটি ইমেল পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান তথ্য কর্মকর্তার পর্যালোচনার পর ভিডিও-শেয়ারিং প্ল্যাটফরম অ্যাপটি এখন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, টিকটক বেইজিংভিত্তিক বাইটড্যান্স প্রযুক্তি কোম্পানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। চীনা সরকার এই অ্যাপটির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য করে বলে অনেক আগে থেকেই অভিযোগ করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

Continue Reading