জাতীয়

পাহাড়ে শান্তি আনতে চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

Published

on

স্টাফ রিপোর্টার:
পাহাড়িদের কষ্ট লাঘবে পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি বলেন, “ওই অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যা যা করার করতে হবে। দুই দশক ওই অঞ্চলের মানুষ কষ্ট করেছে, আর না। আমি শান্তিচুক্তি করেছি। শান্তির সুবাতাস যেন বয়- সে ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে।” সকালে সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য শান্তিচুক্তির উদ্যোগ নেয়ার পরের বছর এই চুক্তি সই হয়। পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদের উপনেতার নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি উপনেতাকে দিয়ে কমিটি করে দিয়েছি। শান্তিচুক্তির যতটুকু বাকি আছে- তা করে দেয়া হবে। আমরা পাহাড়ে চিরস্থায়ী শান্তির বন্দোবস্ত করতে চাই।” তিনি বলেন, শান্তিচুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়নযোগ্য মোট ৭২টি ধারার মধ্যে এরইমধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণ এবং ১৫টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। আর নয়টি ধারা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এই ধারাগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে তাগাদা দেন প্রধানমন্ত্রী। পার্বত্য অঞ্চলে ভূমি বণ্টন প্রধান সমস্যা-মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “ভূমি বণ্টন নিয়ে সমস্যা রয়ে গেছে। সকলে সহায়তা করলে সমাধান হবে। “যারা পার্বত্য অঞ্চলে থাকেন- তাদের আমাদের ভূমির উপর অধিকার আছে। তারা আমাদের দেশের নাগরিক। তাদের স্ব স্ব ভূমির ওপর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।” সব পক্ষের সমঝোতায় পার্বত্য অঞ্চলে ভূমি বিরোধের নিষ্পত্তির কথা বলেন তিনি। পার্বত্য ভূমি কমিশনের কার্যক্রম আরো গতিশীল করার ওপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। পার্বত্য সংকটের জন্য ১৯৭৫ পরবর্তী সরকারকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন, “পঁচাত্তর পরবর্তী সরকার ওখানে কিছু লোক পাঠিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে, যা হওয়া উচিত ছিল না।” পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর ভারত থেকে ৬৪ হাজার শরণার্থী ফিরিয়ে এনে পুর্নবাসন করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “এখনো দেড় হাজার জনকে পুর্নবাসন সঠিকভাবে করা হয়নি।”শান্তিচুক্তির পর ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করে। এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “সকলে নিজ নিজ অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ কারো কাম্য নয়।” পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনকারী বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “শান্তিচুক্তি আমরা নিজেরা করেছি। এখন অনেকে বন্ধু সেজে খবরদারী করতে আসে। “আমরা সকলে একসাথে মিলে কাজ করবো। কেউ যেন জটিলতা সৃষ্টি করতে না পারে।” পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি। তাদের ভাষা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version