বাঙালি নদীর ভাঙনের মুখে রামনগর গ্রাম
সাঘাটা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা:
চোখের সামনে বসতঘর ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ারও সময় নেই। দিন-রাত সমানে চলছে ভাঙন। গাছ-গাছালি, লতাপাতা ও বাঁশসহ অনেক কিছু নদীতে ফেলেও কাজ হচ্ছে না। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বাঙালি নদীর অব্যাহত ভাঙনে এমনি অসহায় হয়ে পড়েছেন কচুয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের লোকজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নিরুপায় লোকজন দৌড়ঝাপ করে ঘরবাড়ি সরানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। নদীতে পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের ভাঙনের মাত্রা বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনে ওই গ্রামের ২০টি পরিবারের বসত-ভিটা নদীতে চলে গেছে। এ পর্যন্ত অর্ধশত পরিবারের বসত-ভিটা, আবাদিজমি ও একটি সড়ক সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আরো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ৫০টিরও বেশি ঘর-বাড়ি, রামনগর বাজার ও একটি দাখিল মাদ্রাসা।
এলাকাবাসী জানান, রামনগর গ্রামের বিপুল, সাইদুর রহমান, মকবুল হোসেন, মোকছেদুর রহমান, সোহেল, হামিদুল, হামিদা বেগম, ফজলু মিয়া, বজলু মিয়া, মহসিন আলী, আঙ্গুর আলী, হায়দার রহমান, ওয়ারেছ আলী, শাহজাহান, হারেস আলী, জহুরুল, রফিকুল, তাজু, মুনছুর ও মোজাছের আলীসহ ৫০ জনেরও বেশি পরিবার তাদের বসত-ভিটা হারিয়েছেন। এরই মধ্যে ত্রিমোহনী মোড় থেকে রামনগর বাজার পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার সড়ক নদীতে ভেঙে গেছে। মিষ্টি আলু, তিল ও আমনসহ বেশ কিছু আবাদী জমি চলে গেছে নদীগর্ভে। গত ৩ দিন ধরে প্রবল ভারি বর্ষণে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে স্রোতে ভাঙনের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। বাঙালির কড়াল থাবায় যেকোনো মুহূর্তে ঘরবাড়ি হারানোর আশংকায় রাতের ঘুম ধরে না বলে জানালেন, ওই গ্রামের পূর্ব পাড়ার আবুল হোসেন। তার দুটি পাকাবাড়ি ভাঙনের মুখে পড়েছে। এভাবে ভাঙলে আবাদিজমি আর অবশিষ্ট থাকবে না বলে জানান, কৃষক মুনছুর আলী। গ্রামের চড়পাড়ার সাহিব উদ্দিন আকন্দ বলেন, ভাঙতে ভাঙতে গ্রামই চলে যাচ্ছে নদীতে। ফিরে দেখারও কেউ নেই!
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বকুল জানান, ভাঙনের কথা শুনেছি। রোধকল্পে এই মুহূর্তে কোনো ব্যবস্থা নেই বলে তিনি জানান। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আউয়াল মিয়া বলেন, ওই সব নদীতে ভাঙন আছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেই।