আন্তর্জাতিক
বিশপ রোমেরোকে ‘ঈশ্বরের লোক’ ঘোষণা দিলেন পোপ ফ্রান্সিস
লাতিন আমেরিকার এক ক্যাথলিক যাজক। বিশ্বাসী ছিলেন মানুষে মানুষে সাম্যের, প্রতিবাদ করেছিলেন নিপীড়ন আর বৈষম্যের, সোচ্চার হয়েছিলেন পশ্চিমা মদদপুষ্ট সামরিক স্বৈরশাসকের অপশাসনের বিরুদ্ধে। পরিণামে ঘাতকের বুলেট খুঁজে নেয় তার বুক।
নিপীড়িতদের প্রতি সহানুভূতির জন্য এমনকি তিনি অপাঙতেয় ছিলেন ভ্যাটিকানের কাছেও। মার্ক্সবাদী সন্দেহে তার মৃত্যুর পর রীতি অনুযায়ী অাশীর্বাদ করা থেকেও বিরত থাকে রোমান ক্যাথলিক চার্চ।
বিপ্লবী ওই যাজক হলেন মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদোরের আর্চবিশপ অস্কার রোমেরো।
পোপ বেনেডিক্টের অবসরের পর সম্প্রতি রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রধান ধর্মগুরু হিসেবে অভিষিক্ত হন পোপ ফ্রান্সিস। পোপ ফ্রান্সিস চে গুয়েভারার দেশের মানুষ। খ্রিষ্টান বিশ্বের ধর্মদণ্ড হাতে নিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন আর সব পোপের মত রক্ষণশীলতা আর সাবেকি অভিজাততান্ত্রিকতার পথে হাঁটবেন না তিনি।
তাই নতুন পোপের আমলে সহস্রাব্দ প্রাচীন ভ্যাটিকানের প্রাসাদের জানালায় বইছে সংস্কার আর পরিবর্তনের সুবাতাস। আর এরই অংশ হিসেবেই অবশেষে বিপ্লবী বিশপকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে ভ্যাটিকান।
বিশপ রোমেরোকে ‘ঈশ্বরের লোক’ ঘোষণা দিয়ে পোপ ফ্রান্সিস জানালেন খুব শিগগিরই বিশপ রোমেরোকে আশির্বাদপ্রাপ্ত বলে ঘোষণা করা হবে।
অবশ্য ভ্যাটিকানের তরফে সাধুর স্বীকৃতি না পেলেও লাতিন আমেরিকা সহ সারাবিশ্বের মানুষের কাছে রোমেরো পেয়েছিলেন সাধুর মর্যাদা।
নিপীড়িতদের পক্ষে সোচ্চার অবস্থান এবং লাতিন আমেরিকার বামপন্থি আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতি থাকায় মার্ক্সিস্ট সন্দেহে তাকে বিটিফিকেশন (আশীর্বাদপ্রাপ্তি) করা থেকে বিরত থাকে ভ্যাটিকান। ভ্যাটিকানের প্রথা অনুযায়ী কাউকে সেইন্ট বা সাধু ঘোষণার আগে এই ধাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূণ।
১৯৮০ সালে রাজধানী সান সালভাদোরে ভক্তদের উদ্দেশ্যে ধর্মীয় উপদেশবাণী দেয়ার সময় ঘাতকের গুলিতে নিহত হন বিশপ রোমেরো। রোমান ক্যাথলিক ধর্মের অন্যতম মতবাদ লিবারেশন থিয়োলজির অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন তিনি। সামাজিক ন্যায় বিচার ও সাম্যের আলোকে খ্রিষ্টীয় মতবাদকে লিবারেশন থিয়োলজি বলা হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া সফর শেষে ভ্যাটিকান ফেরার পথে সোমবার সাংবাদিকদের বিশপ রোমেরোর বিটিফিকেশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টি জানান পোপ ফ্রান্সিস।
গত শতাব্দীর ষাটের দশক থেকে শুরু করে ৯০ এর দশক পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে তৎপর মার্কিন সমর্থিত ডানপন্থি মিলিশিয়া ও এদের পৃষ্ঠপোষক সামরিক স্বৈরশাসকদের অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিশপ রোমেরো ছিলেন অত্যন্ত সোচ্চার।এছাড়া সব ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধেরও আহ্বান জানান তিনি।
গত শতাব্দীর শেষার্ধের মাঝামাঝি সময় প্রায় সিকি শতাব্দী ধরে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা জুড়ে মার্কিন মদদপুষ্ট ডানপন্থি সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বামপন্থি গেরিলা গ্রুপগুলো। এল সালভাদোরে ১৯৮০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত চলা লড়াইয়ে প্রাণ হারান ৭৫ হাজার মানুষ।
৬২ বছর বয়সী আর্চবিশপ রোমারোকে ১৯৮০ সালের ২৪ মার্চ হত্যা করা হয়। ডানপন্থি ডেথ স্কোয়াড তাকে হত্যা করে বলে ধারণা করা হয়। বামপন্থি গেরিলা গ্রুপগুলোকে দমনের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় ও পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকতায় লাতিন আমেরিকার দেশে দেশে প্রতিষ্ঠা পায় এসব ডানপন্থি মিলিশিয়া বাহিনী, যারা পরে ডেথ স্কোয়াড নামেই বেশি কুখ্যাতি লাভ করে।
বিশপ রোমেরো হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। এমনকি গ্রেপ্তারও হয়নি কেউ। তবে এল সালভাদোরের গৃহযুদ্ধ অবসানের পর দেশটির প্রথম বামপন্থি শাসক মরিসিও ফুনেস ২০১০ সালে তার হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রের দায় স্বীকার করে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চান।
‘অনেক কিছুই আছে, অশ্রুসজল দৃষ্টি ছাড়া যা দেখা সম্ভব নয়’-অস্কার এ রোমেরো।
Highlights
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার হামলা, নিহত ৮
Highlights
মার্কিন ড্রোন ভূপাতিত করে পুরস্কার পেলেন রাশিয়ান পাইলটরা
Highlights
সব ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করল কানাডা
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
গ্রিস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
-
আন্তর্জাতিক8 years ago
যুক্তরাষ্ট্রে দুটি বিমানের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু
-
স্বাস্থ্য7 years ago
গলা ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা
-
দেশজুড়ে8 years ago
আজ চন্দ্র গ্রহন সন্ধা ৬টা ১২ মিনিট থেকে রাত ৮ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত
-
বিবিধ9 years ago
আর অটো রিক্সা নয় এবার অবিশ্বাস্য কম দামের গাড়ি!
-
জাতীয়7 years ago
আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ
-
জাতীয়8 years ago
স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা
-
ফিচার8 years ago
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নামকরণের ইতিহাস