বেরোবিতে ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’ এর পরিবর্তে ‘ভাইস চ্যান্সেলর’স’ এ্যাওয়ার্ড প্রদান
আজকের এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের ছবি।
বেরোবি প্রতিনিধি: নানান কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। তবে গত বছর বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও শোক দিবসের আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী চলতি বছর থেকে বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে গবেষণাসহ অন্যান্য কাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’ চালু করার ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। উল্টো ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’ এর পরিবর্তে উপাচার্য “ভাইস চ্যান্সেলর’স” এ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছেন। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে এর প্রতিবাদ। ২০১৫ সালের প্রেস রিলিজ।
জানা যায়, ২০১৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও শোক দিবসের কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ভবনে এক আলোচনা সভায় উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’ চালু করার ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে সেদিনই জনসংযোগ দপ্তর থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’ চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন এমন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে প্রেরণ করেন। প্রেরিত বার্তায় বলা হয়, “আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য প্রফেসর ড. একেএম নূর-উন-নবী বলেন ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে হবে। তাঁর সম্পর্কে গবেষণা করতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে গবেষণায় সকলকে উদ্বোদ্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর এ্যাওয়ার্ড চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। প্রতি বছর এ বিষয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চারটি এ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে বলে তাঁর বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।”
তবে কার্যত এই এক বছরে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ঘোষণায় সীমাবদ্ধ থাকল ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’। তবে ঘোষণায় ‘বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড’ চালু করার কথা থাকলেও এবছর থেকে “ভাইস চ্যান্সেলর’স” এ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নামে এ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করার পর সেটি বাস্তাবয়ন না করায় প্রতারণা করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য সচিব মশিউর রহমান তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি শুধু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে নয় পুরো জাতির সাথে তামাশা করা হয়েছে। শুধু প্রতিবাদ নয়, বঙ্গবন্ধুকে যারা অবমাননা করার দু:সাহস দেখিয়েছেন তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’
এদিকে বঙ্গবন্ধুর ৪১ তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বলেছেন, ১৫ আগস্ট জাতির সবচেয়ে শোকের দিন। কারণ, ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। তবে এই শোককে শক্তিতে রুপান্তরিত করে দেশের উন্নয়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ/রচনা প্রতিযোগিতায় চার ক্যাটাগরিতে ভাইস-চ্যান্সেলর’স এ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় শিক্ষকদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান, কর্মকর্তাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন অর্থ ও হিসাব দপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন তাজিফ জয়, শিক্ষার্থীদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্রী যীন্নাতুন্নেছা এবং কর্মচারীদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন সহকারী স্টোর কিপার শিরিনা আক্তার।