পাঠক নিশ্চয় মনে আছে ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ঘোষণার পর মাশরাফি বিন মুর্তজার কান্নার কথা। ইনজুরির কারণে নির্বাচকরা তাকে দলে রাখার সাহস করেননি সে সময়। কিন্তু দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলার জন্যে চেষ্টার ত্র“টি ছিল না তার। তবে ভাগ্যদেবী বোধহয় অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন, চার বছর পর আবার বিশ্বকাপ, আর এবার টাইগার দলপতির দায়িত্ব পেলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। বুধবার অনুশীলনের তৃতীয় দিনে সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং ¯¬গওভারের ব্যাটিং প্র্যাকটিস করছিলেন মাশরাফি। মারছিলেন বিশাল বিশাল ছয়, বলের আঘাত থেকে বাঁচতে সংবাদ কর্মীরাও সরে গেলেন নিরাপদে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল বাংলাদেশ দলের অধিনায়কের ব্যাটটি ভেঙ্গে গেছে। ব্যাট ভাঙ্গাতে কিছুটা হতাশ মাশরাফি। অনুশীলনের বিরতিতে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের ডাগ আউট সিনিয়র জুনিয়র মিলিয়ে কয়েকজন সংবাদ কর্মীর সঙ্গে হঠাৎ আড্ডায় মেতে উঠেন ক্যাপ্টেন মাশরাফি। সেখানেই স্বভাবসুলুভ ভাষায় জানালেন তার মন খারাপের কথা। সে ব্যাট দিয়েই নাকি ম্যাচো খেলেন। মাশরাফি জানালেন ব্যাটটি মেরামত করতে দিয়েছেন, আরো জানালেন সেই ব্যাট ছাড়া নাকি তিনি খেলবেন না। তবে মাশরাফিকে কেন প্রয়োজন তা আবারো বোঝা গেল তার সঙ্গে আড্ডা দিতে গিয়েই। তার কথা শুনে মনে হচ্ছিল পাড়ার বড় ভাই আর বন্ধুদের সঙ্গেই যেন অলস শীতের দুপুরে কথার ঝাঁপি খুলে বসলেন নড়াইলের এক তরুণ। এমনিতেই মাশরাফির চলাফেরায় নেই তারকা সুলুভ ভারিক্কি ভাব। মিনিট বিশেকের আড্ডায় বেশ মজার কিছু অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। শোনালেন কৌতুক আর তার কথা শুনে সংবাদ কর্মীদের মধ্যেও উঠলো হাসির রোল। টাইগারদের প্রয়োজন এমন সেনাপতির যে কিনা খারাপ সময়ে আগলে রাখতে পারবেন সহযোদ্ধাদের। মাশরাফি থাকলে ইতিবাচকভাবেই পাল্টে যায় টাইগারদের ড্রেসিং রুমের পরিবেশ। খারাপ সময়ও চাঙ্গা রাখেন ক্রিকেটারদের তার একটা নমুনাও যেন পাওয়া গেল মাশরাফির সঙ্গে ছোট্ট এক আড্ডায়। এরপর রসিকতা করেই বললেন দেখবেন দরকার হলে চার পাঁচ নম্বরেও নেমে যেতে পারি, অবশ্য আপনাদের ঘোর কাটার আগেই আউট হয়ে যাব বললেন বাংলাদেশের দিল খোলা এই অধিনায়ক। মাশরাফি বিন মুর্তজার আচরণেই বলে দেয় নেতৃত্ব দেওয়ার সহজাত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছেন তিনি। ইস! মাশরাফি যদি ইনজুরি আক্রান্ত না হতেন তাহলে অধিনায়ক হিসেবে আরো কত সাফল্যই আসত পারত তার হাত ধরে? এই আক্ষেপটাতো আছেই ক্রিকেট বিশ্লষেক এবং সমর্থকদের মনে।