Connecting You with the Truth

ভাই হত্যার দায়ে এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার:
চলচ্চিত্র অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীর হত্যা মামলার রায়ে তার ছোট ছেলে এটিএম খলিকুজ্জামান কুশলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন মামলার একমাত্র আসামি কুশল। গতকাল ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শাহেদ নুর উদ্দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পিপি মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া জানান, বড় ভাই কবীরকে হত্যার দায়ে এ দণ্ডাদেশ পেয়েছেন ছোট ভাই কুশল। কারাগারে আটক এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ছেলে এটিএম খলিকুজ্জামানকে আদালতে আনা হয়। তাকে দণ্ডাদেশ দিয়ে ফের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৩০ জানুয়ারি এ মামলায় এটিএম শামসুজ্জামান সাক্ষ্য প্রদান করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, এটিএম শামসুজ্জামানের বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীর ২০১২ সালের ১৩ মার্চ বিকেলে রাজধানীর সূত্রাপুর থানার দেবেন্দ্রনাথ দাস লেনের ৪৬ নম্বর হোল্ডিংয়ের নিজ বাড়িতে ছোট ভাই কুশলের ছুরিকাঘাতে খুন হন। এ ঘটনায় এটিএম শামসুজ্জামান ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আরেক ছেলের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই পুলিশ কুশলকে গ্রেফতার করে। তখন থেকেই তিনি কারাগারে আটক আছেন। মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৩ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে শামসুজ্জামান শুয়েছিলেন। এ সময় গেটে দু’টি বিকট শব্দ শুনে বের হয়ে দেখেন, তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীর এক তালা-চাবিঅলাকে দিয়ে বাড়িতে ঢোকার বিকল্প দরজার তালা ভাঙছেন। ছেলেকে তালা ভাঙার কথা জিজ্ঞাসা করলে কবীর তার বাবাকে কটূক্তি করেন। ছেলের বেয়াদবি সহ্য করতে না পেরে তাকে একটি থাপ্পড় মারেন এটিএম শামসুজ্জামান। কবীর তৎক্ষণাত তার বাবাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি লাথি মারতে থাকে। ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতরে ফেলে দেন। ঘরের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এটিএম শামসুজ্জামানের মাথা ফেটে যায়। এ সময় ছোট ছেলে খলিকুজ্জামান কুশল তার ঘর থেকে বের হয়ে এসে বড় ভাইকে উর্পযুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকেন এবং বলতে থাকেন, “বল, কেন আমার বাবাকে মেরেছিস, বল।” চিৎকার শুনে এটিএম শামসুজ্জামানের ছোট ভাই ইব্রাহিম জামান এসে কুশলকে জোর করে সরিয়ে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দেন। কবীরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠান। সেখানেই মারা যান কবীর। মামলায় নিহত কবীরকে বদরাগী এবং তার পিতা-মাতাকে মাঝে মাঝেই মারধর করতেন বলে উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনাটি তদন্ত করে সূত্রাপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম গত বছরের ২৫ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটের ২২ সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

 

Comments
Loading...