ভাঙ্গায় নব-সরকারীকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ; ২৬ লক্ষ টাকা বিল জালিয়াতির চেষ্টা
ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় নব সরকারীকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৪ জন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। এদের মধ্যে ১৩ জনের নামে ২৬ লক্ষ টাকার বিল করে সোনালী ব্যাংক খেকে উঠানোরও চেষ্টা করেছিল প্রতারক চক্রটি। প্রশাসনের সর্তকতায় সেবার বিল তুলতে পারেনি। কিন্ত এ ভুয়া শিক্ষক নিয়ে নানা তালবাহানা শুরু করছে প্রতারক চক্রটি।
জানা যায় ,রেজিষ্টার্ড বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে ৪ টি পদ ছিল। ২০১৩ সালে সরকার বিদ্যালয় গুলোকে সরকারী করনের ঘোষনা দেয়। উক্ত বিদ্যালয় গুলোতে ৫ টি পদ দেখাইয়া ২০০৯ সালে ভাঙ্গার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ২৪ জন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেখায় একটি চক্র। এদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেয় জন প্রতি প্রায় ৩/৪ লক্ষ টাকা। অথচ নিয়োগকৃত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি কিছুই জানেন না। থানমাত্তা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেখানো হয়েছে মুকসুদপুর উপজেলার মোহাম্মদ আলীর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমানকে , অথচ উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলহাস মাতুব্বর জানান মোস্তাফিজকে সে কখনো দেখেই নাই। পশ্চিম পাতরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজিয়া সুলতানাকে নিয়োগ দেওয়া হলেও উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম মাতুব্বর এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।এ ভাবে ভাঙ্গা থানার ২৪টি বিদ্যালয়ে ২৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেখানো হয়েছে যাদের সংস্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান গন চিনেন না। এ ব্যাপারে ২৪টি বিদ্যালয়ের প্রধান গন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত দিয়েছেন যে তারা ভুয়া শিক্ষকদের সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রধান শিক্ষক।এ সব শিক্ষক নিয়োগ দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি প্রতারক চক্রের হোতা হাজরাকান্দা গ্রামের আঃ রহমানের ছেলে আঃ জব্বার মিয়া। বেতন করার জন্য বিভিন্ন কর্মকর্তাদের জাল সই করে কাগজপত্র প্রেরন করেছেন বিভিন্ন দপ্তরে। ভুয়া ঐ ২৪ জনের মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমান,জিন্নতুন্নেছা,আয়শা আক্তার,রাজিয়া , শিখা খানম , আলেয়া ও ইমারতের নামে সোনালী ব্যাংকে ১৪৭৪৪৭০ টাকার বিল করে জমা দেন যার বিল নং-১৮ তারিখ ২০-৭-১৫ এল এস সি নম্বর-২১১ , তারিখ ২২-৭-১৫। এ ছাড়াও এই সময় নিমা খানম ,নাজমুল হক ,ফেরদৌসী ,শাহনাজ ,রুমা আক্তার ও আবুল কালামের নামে ১১৯১৯১০ টাকার বিল করে সোনালী ব্যাংকে জমা দেন যাহার বিল নং- ১৯ ,তারিখ ২০-৭-১৭, এল এস সি নম্বর-২১০ ,তারিখ ২২-৭-১৫। তখন এজি অফিসার আবুল হোসেন এবং সোনালী ব্যাংকের অফিসার প্রমদ চন্দ্র বালার সর্তকতায় বিল দুটি তুলতে পারেনি এ প্রতারক চক্র। এ সব ভুয়া শিক্ষকদের বৈধ করার নানা তৎপরতা চালাচ্ছে প্রতারক চক্রটি বলে জানান ভাঙ্গা থানার সাবেক রেজি ঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্যানেল ভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ। তারা হাইকোর্টে রিট করেছে বলেও জানা যায়।এ ব্যাপারে প্যানেল ভুক্ত শিক্ষক জিয়াউর রহমান ও ঝর্না আক্তার অভিযোগ ও হতাশার শুরে জানান হাইকোর্টে মামলা করে আমরা রায় পেয়েছি কিন্ত অবৈধ ভাবে ২৪ জন নিয়োগ পেলে আমরা কোথায় নিয়োগ পাব।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৩ বিদ্যালয় গুলো সরকারী ঘোষনার পর একটি প্রতারক চক্র ভুয়া কাগজ দেখিয়ে ২০০৯ সালে ২৪ জন শিক্ষককে ভাঙ্গার বিভিন্ন স্কুলে নিয়োগ দেখিয়েছে যাহা উপজেলা শিক্ষা অফিস জানে না।এ ব্যাপারে ২৪টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এই মর্মে প্রত্যয়ন দিয়েছে যে তারা নিয়োগকৃত শিক্ষকদের চিনেন না। তারা কোনদিন হাজিরা খাতায় ও সই করেননি। এ সব তথ্য গুলো আমরা আমাদের উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন একটি প্রতারক চক্র ভুয়া শিক্ষক নিয়োগের নামে শিক্ষার পরিবেশকে কুলশিত করার চেষ্টা করছে। অচিরেই তাদের মুখোশ উন্মোচিত হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায় সরকার নব সরকারীকৃত বিদ্যালয় গুলোতে ৪ জন শিক্ষক রাখার সিদ্বান্ত নিয়েছে এখানে কোন ৫ম পদ নেই। এ ছাড়াও ভাঙ্গায় ২৪ জন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিস কিছুই জানে না।এ ব্যাপারে আঃ জব্বার মিয়ার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
যারা টাকার বিনিময়ে অবৈধ ভাবে শিক্ষক হতে চায়, যারা বৈধ নিয়োগ না পেয়ে জালিয়াতির মাধম্যে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে চায় তারা আর যাই হোক শিক্ষক হতে পারে না। তাই এ ব্যাপারে উচ্চতর তদন্তের মাধ্যমে প্রতারক চক্রকে চিহ্নত করে তাদেরকে বিচারের দাবী করে সচেতন ভাঙ্গা বাসী।